আল কুদ্স বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে গত ১৩ই ডিসেম্বর তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হলো মুসলিমদেশ-গুলোর সংগঠন ও আই সির জরুরি শীর্ষবৈঠক। সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের আহ্বানে ইস্তাম্বুলে ‘একত্র’ হয়েছিল ও আই সিভুক্ত ৫৭ টি মুসলিম দেশ। উদ্দেশ্য ছিল, অভিন্ন মঞ্চ থেকে অভিন্নকণ্ঠে আল- কুদ্স সম্পর্কে মর্কিন প্রেসিডেন্টের হঠকারী সিদ্ধান্তের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ের মোকাবেলায় মুসলিমবিশ্বের করণীয় নির্ধারণ ও ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণ ।
আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে এই আলকুদ্স এবং মসজিদুল আকছাকে কেন্দ্র করেই আত্মপ্রকাশ করেছিলো ওআইসি নামের এ সংগঠনটি। তবে অত্যন্ত বেদনার বিষয়, কতিপয় সদস্যদেশের অনান্তরিকতা, পারস্পরিক বিভেদ-বিভক্তি, শত্রুতা, ষড়যন্ত্র, ক্ষমতার লোভ এবং বিশ্বাসঘাতকতা এই সংগঠনটিকে প্রায় ব্যর্থ ও অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। এত অধঃপতনের পরও কত বিশাল বিস্তৃত ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সম্মিলিত সামরিক, অর্থনৈতিক এবং ভৌগোলিক শক্তি। কিন্তু! তাদের কোন কথার, কোন বিবৃতির, কোন আহ্বানের, কোন ‘হুমকি’র কানা-কড়িও যেন মূল্য নেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে। আরাকানে, কাশ্মীরে, সিরিয়ায়, সোমালিয়ায়, প্রতিটি বিপর্যয়ে প্রতিটি দুর্যোগে বারবার ব্যর্থ হয়েছে প্রায় নিষ্ক্রিয় এ সংস্থাটি। আশঙ্কা ছিলো, এবারও ব্যতিক্রম হবে না, হয়ও নি। ‘যমিনী খোদা’র ভয়ে খোকলা কিছু কথা বলে সবাই নিজ নিজ গর্তে ফিরে গেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোগান মার্কিন হুমকি উপেক্ষা করে, চেষ্টা করে গেছেন , ওআইসিকে জীবন্ত সংগঠনে পরিণত করার, কিন্তু স্রেতের বিপরীতে আর কতদূর যাওয়া যায়! সউদী বাদশাহ এবং তার পুত্র জানালেন তাদের সময় নেই; এমনকি তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরও সময়ের অভাব। বিশ্বের গণমাধ্যম এখন যাদের ‘ইসরাইলঘেঁষা’ বলে সেই দেশগুলোরও একই অবস্থা। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা পাঠিয়ে ‘হাজিরা খাতায়’ দস্তখতের কাজটাই শুধু করা হয়েছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে, ওআইসির চেয়ারম্যান হিসাবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান দিলের কিছু দরদ, কিছু ব্যথা তুলে ধরেছিলেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে। তার পুরো বক্তব্যটি (তরজমা) পুষ্পের পাঠকবন্ধুদের জন্য এখানে তুলে দেয়া হল। এরদোগান ও তার দেশকে দুশমনের বদনযর থেকে আল্লাহ হেফাযত করুন, আমিন।
- মুহাম্মাদ বিন মিছবাহ
***
বিসমিল্লাহির-রাহমানির রাহিম ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট, আমার প্রিয় ভাই মাহমূদ আব্বাস, উপস্থিত সম্মানিত নেতৃবৃন্দ, ওআইসির সম্মানিত সভাপতি ও আগত মেহমান-বৃন্দ, আপনাদের সবাইকে আমার অন্তরের অন্তঃস্তল থেকে মোবারকবাদ ও অভিনন্দন।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। পবিত্র নগরী আলকুদ্সের ‘শাক্বীকাহ’ (সহদোরা) ইস্তাম্বুল শহরে দাঁড়িয়ে এ মহূর্তে আল -কুদ্সের ব্যথায় ব্যথিত পথিবীর সকল প্রান্তের সকল আলকুদ্সপ্রেমীর প্রতি আমি আমার সহমর্মিতা নিবেদন করছি; যাদের প্রাণের প্রতিটি স্পন্দনের সঙ্গে মিশে আছে আলকুদ্সের প্রতি আবেগ ভালোবাসা; বিশ্বের সর্বপ্রান্তে এ মহূর্তে যারা ইস্তাম্বুলের দিকে তাকিয়ে আছেন অনেক প্রত্যাশা নিয়ে। আজ আমরা বড় ব্যথিত হৃদয়ে এখানে একত্র হয়েছি, পবিত্র নগরী আলকুদ্স এবং মুসলিমদের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকছার বিষয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে। আজ আমরা একত্র হয়েছি আলকুদ্সের প্রতি অন্যায়, অবিচার ও অমর্যাদার প্রতিবাদ এবং আমাদের করণীয় নির্ধারণের উদ্দেশ্যে। আমি আবারও আমার অন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আপনাদের প্রত্যেকের প্রতি, যারা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই গুরুত্বপর্ণ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। আশা করি, আমাদের এই সম্মেলন আলকুদ্সে শান্তিপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
আমরা সবাই অবগত আছি, গত ৬ই ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, আলকুদ্স নগরীর প্রতি ইসরাইলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি ঘোষণা করেছেন এবং সেখানে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা সকল আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও চুক্তি-সমঝোতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পবিত্র আল-কুদ্স নগরীতে প্রবেশ করামাত্রই যে কেউ বুঝতে পারবেন যে, এটি শক্তির জোরে অন্যায়ভাবে দখল করে রাখা একটি নগরী। বলাবাহুল্য, দখলকৃত আলকুদ্সের বিষয়ে এ ঘোষণার না কোন মূল্য আছে, না আইনগত কোন ভিত্তি আছে। ১৯৮০ সালে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তাপরিষদে সর্বসম্মত-ভাবে অনুমোদিত ৪৭৮ নং আইন অনযায়ী (যুক্তরাষ্ট্রও যার ভেটো ক্ষমতার অধিকারী একটি সদস্য) কোন রাষ্ট্র আলকুদ্সে দূতাবাস স্থাপন করতে পারবে না। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের এ ঘোষণা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যুক্তরাষ্ট্রের এ অন্যায় সিদ্ধান্তকে এখনো পর্যন্ত দখলদার ইসরাইল ছাড়া আর কেউ সমর্থন করেনি। আমি সকল রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রপ্রধানদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যারা যুক্তরাষ্ট্রের এ বেআইনি পদক্ষেপকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই কারণে সম্মানিত পোপকেও আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বহু রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে এ পর্যন্ত আমি কথা বলেছি। প্রত্যেকেই এ বেআইনি পদক্ষেপের বিষয়ে স্পষ্ট অসমর্থন ব্যক্ত করেছেন। সমস্ত মুসলিমদেশ আলকুদ্সের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ বেআইনি পদক্ষেপকে শুরু থেকেই প্রকাশ্যে এবং স্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছে। ওআইসির বর্তামান প্রধান হিসেবে, এ ঘোষণার পরমহূর্তেই আমরা ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে স্পষ্টভাষায় বলেছি, এটা দায়িত্বহীন, নীতিবিরুদ্ধ এবং ইতিহাসবিরুদ্ধ একটা সিদ্ধান্ত এবং এটা সম্পূর্ণভাবে মূল্যহীন ও অকার্যকর। এ সিদ্ধান্ত ফিলিস্তীনী জনগণের প্রতি অন্যায় শাস্তিস্বরপ যারা সর্বদা শান্তি চেয়ে এসেছেন।
আমি মানচিত্রের মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত কী ঘটে চলেছে ফিলিস্তীনভূমিতে। মনিটরে প্রদর্শিত মানচিত্রে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন ১৯৪৭ সালে কেমন ছিল ফিলিস্তীনরাষ্ট্রের অবস্থান। এবং এরপর থেকে প্রতিনিয়ত কিভাবে ফিলিস্তীনের ভূমি সংকুচিত হয়ে এসেছে। (অস্ত্রশক্তির বলে) ফিলিস্তীনের ভূমি দখল করে ইসরাইল কিভাবে নিজের আয়তন বাড়িয়ে চলেছে। এমনকি একটি ভূমি যদি নেকড়ে আর মেষপালের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয় তাহলে নেকড়েও এ আচরণ করবে না। কিন্তু ওরা আরো নিকৃষ্ট। অত্যন্ত বেদনার সাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ১৯৪৭ সালে ইসারাইল যতটুকু ছিলো, ফিলিস্তীনের ভূমি কমতে কমতে আজ সেখানে এসে ঠেকেছে। আমি আশা করি, আপনাদের সবার কাছেই ইতিমধ্যে এই মানচিত্র পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তো ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত এটাই হল ফিলিস্তীনের ইতিহাস। এটা প্রশ্নাতীতভাবে প্রমাণ করছে যে, ইসরাইল একটা দখলদার অপশক্তি এবং একটা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। কিছু লোক ক্রুদ্ধ হয় যে, এরদোগান কেন এমন কথা বলে ? কিন্তু কেন আমি বলবো না? এই যে দৃশ্যগুলো, দশ বছর বয়সী নিষ্পাপ, নিরপরাধ একটি শিশু, ইসরাইলী সেনারা তাকে প্রহার করছে, ধরে নিয়ে জেলে আটকে রাখছে। চৌদ্দ বছরের একটি ফিলিস্তীনী শিশুকে বিশজন ঘিরে রেখেছে , আঘাতে আঘাতে তার চেহারা রক্তাক্ত করে ফেলেছে। চোখ বেঁধে অন্ধ করে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই যে মা তার মেয়েকে তাদের কবল থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন , কিন্তু তাকেও তারা রেহাই দিচ্ছে না। গায়ে হাত তুলে, লাঞ্ছিত করে তার মেয়েকে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। বলুন এগুলো যদি সন্ত্রাস না হয় তাহলে কাকে বলে সন্ত্রাস? নিজেদের যারা মানুষ বলে দাবী করতে চায় এ দৃশ্যগুলো তাদের জন্য শিক্ষা। একটু দেখুন তো এই দৃশ্যটি, বিশটা সেনা একটি শিশুকে ঘিরে রেখেছে! রক্তে ভেসে যাচ্ছে শিশুটির চেহারা! কীভাবে ওরা তার চোখ বেঁধে রেখেছে! মিস্টার ট্রাম্প, এরপর আপনাকে আমাদের আর কিছু বলার নেই। ইসরাইলের বিষয়ে আমাদের মুখে আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই। সবকিছু দিনের মত পরিষ্কার, সূর্যের আলোতে পুরো পৃথিবীর সামনেই ঘটছে সবকিছু। যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরাইলের অন্যায় দখলদারিত্ব, অবৈধ সম্প্রসারণ, ফিলিস্তীনিদের উচ্ছেদাভিযান, তাদের ভূমি ছিনতাই, সম্পদ লুণ্ঠন , গণহত্যা এবং সর্কপ্রকার সন্ত্রাসী কর্মকা-কেই পুরষ্কৃত করলো। মিস্টার ট্রাম্প তাদের এ পুরষ্কারই দিলেন। কিন্তু এই পৃথিবীর বুকে আপনার যা ইচ্ছা তাই আপনি করে ফেলবেন, তা কখনো হবে না। অপানি যা ইচ্ছা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, কিন্তু পৃথিবী আপনার একার নয়। আরো ১৯৬ টি দেশ জাতিসঙ্ঘের সদস্য। তারা আপনার এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নেবে। হতে পারে আপনার যুক্তরাষ্ট্র অনেক ক্ষমতাধর একটি দেশ। তার আছে অনেক শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র, কামান, বিমান এবং বহু পারমাণবিক বোমা। কিšুÍ এর অর্থ এ নয় যে, আপনি প্রকৃত শক্তির অধিকারী। খুব ভালোভাবে জেনে রাখুন; সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যে থাকে সেই প্রকৃত শক্তির অধিকারী। আপনি যদি ন্যায়ের পক্ষে না থাকেন তাহলে কখনই আপনি প্রকৃত শক্তিশালী নন। খুবই দঃখজনক যে, যারা শান্তি চায়, যারা সবসময় শান্তির পক্ষে তাদের ত্যাগ করে, যারা সব অশান্তির উৎস, যুক্তরাষ্ট্র আজ তাদের পক্ষ নিয়েছে। তার এ পদক্ষেপ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সন্ত্রাসীদের আরো উৎসাহই শুধু যোগাবে।
সিরিয়ায়ও আমরা একই বিষয় দেখতে পেয়েছি, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে কি করেছে? দায়েশের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কুর্দী সন্ত্রাসী সংগঠনকে অস্ত্র যুগিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, এক সন্ত্রাসী দলকে আরেক সন্ত্রাসী দলের বিরুদ্ধে শক্তি যুগিয়ে কখনো সফল হওয়া যায় না। আমি যা বলছি পূর্ণ আস্থার সঙ্গেই বলছি এবং বহুবার আমি তাদের কাছে এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। শুধু উত্তর সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র চার হাজার ট্রাক ভারি অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়েছে। কেন? সন্ত্রাসিদের সাহায্য করার জন্য। আলকুদ্সের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত মানবতার প্রতি ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করেছে। এ অঞ্চলের অন্য সমস্যাগুলো যেন আমাদের আলকুদ্সের কথা ভুলিয়ে না দেয়। এটা তো স্পষ্ট যে, ফিলিস্তীনে সৃষ্ট সঙ্কটের একটি সঠিক, ন্যায়ানুগ ও স্থায়ী সমাধান না করে এ অঞ্চলে কখনো শান্তি ও স্থিতি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। আলকুদ্সের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত যেমন সমস্ত আইন ও নীতির বিরোধী তেমনই তা মানবসভ্যতার প্রতি একটা বড় আঘাত। এ জাতীয় অবৈধ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি এবং জাতিসঙ্ঘের প্রতি খুবই অনাস্থা সৃষ্টি করবে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কিছুতেই নীরব বসে থাকতে পারি না। প্রিয় ভায়েরা আমার, আমাদের পূর্বপুরুষগণ শত শত বছর এই পবিত্র নগরীর সেবা করেছেন সকল ধর্মের প্রতি সম্মান বজায় রেখে, সকল ধর্মের অনুসারীদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্য রেখে। স্মরণ করুন সুলতান সুলায়মান আল কানুনীর ঘটনা! কী করেছিলেন তিনি? আলকুদ্সের বাবে খালীলে খোদাই করার আদেশ দিয়েছিলেন
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ইবরাহীমু খালীলুল্লাহ
ফকীহগণ বলতে পারবেন, কাজটা ঠিক ছিলো কি না। তবে এটা একজন শাসক হিসাবে তার উদারতার প্রমাণ তো অবশ্যই। তেমনি আলকুদ্সে শত শত বছর ধরে বিদ্যমান গির্জাগুলোও মুসলিমদের উদারতার কথাই তুলে ধরে ।
(আমাদের গাফলতের সুযোগে) যারা আজ আলকুদ্সের পবিত্রতা নষ্টের ষড়যন্ত্র করছে তারা যেন আমাদের অতীতের গৌরবময় ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। তারা যেন শিক্ষা গ্রহণ করে মহান ছাহাবী দ্বিতীয় খলীফা উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর কাছ থেকে, কেমন বিনয়ের সঙ্গে তিনি এ শহরে প্রবেশ করেছিলেন এবং এ পবিত্র আমানতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আলকুদ্স নগরী তিন ধর্মের অনুসারিদের কাছেই মর্যাদাপূর্ণ। খৃস্টানদের পোপ এবং এমনকি বহু ইহুদি যারা শান্তি ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করেন তারাও যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমি তাদের সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাদের সাহসী অবস্থানের জন্য। আজ আমি খুবই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আমার ফিলিস্তীনী ভাইদের, যারা আলকুদ্সের পবিত্রতা রক্ষায় সংগ্রাম করে চলেছেন। দীর্ঘকাল ধরে মহূর্তের জন্যও এ পবিত্র দায়িত্ব থেকে পিছু হটেননি। বরং এটাকে নিজেদের জন্য অনেক বড় সম্মান ও মর্যাদার বিষয়রূপে গ্রহণ করেছেন। আমি আন্তরিক-ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের এ অঞ্চলে এবং আল-কুদ্সে শান্তি-প্রতিষ্ঠা তখনই সম্ভব যখন সবধর্মের নীতিবান এবং ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী মানুষগণ এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবেন। তো আজ ওআইসির এ মঞ্চ থেকে আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সমস্ত দেশকে আহ্বান জানাচ্ছি আলকুদ্সকে ফিলিস্তীনের রাজধানীরূপে স্বীকৃতি দেয়ার। আমি বিশ্বাস করি, এ বিষয়ে কোন বিলম্ব আর গ্রহণযোগ্য নয়। মুসলিম হিসেবে আমরা কখনোই একটি মুক্ত-স্বাধীন ফিলিস্তীনের দাবি থেকে সরে আসতে পারি না এবং ঐ ফিলিস্তীনের রাজধানী হলো আল -কুদ্স। আলকুদ্সকে রক্ষায় জড়ো হওয়া আমাদের ভাইদের উপর ইসরাইলী সেনারা আজ অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে, আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ক’দিন আগে আল- কুদ্সে মুসলিম শাসন অবসানের একশ বছর পূর্ণ হলো, সে সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে আল- কুদ্সকে রক্ষায় যারা শহীদ হয়েছেন, আমরা আজ তাদের স্মরণ করি এবং স্মরণ করি আমাদের সকল শহীদানকে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে আল- কুদ্সকে রক্ষায় যারা নিজেদের জান কোরবান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলার কাছে আমরা তাদের জন্য রহমত ও মাগফেরাতের দোআ করি। আমরা যেন কখনই ভুলে না যাই যে, মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, যে কোন পরিস্থিতিতে, যে কোন মূল্যে আলকুদ্স এবং মসজিদুল আকছাকে রক্ষা করা। আজ এখান থেকে আমার দেশের এবং অন্যান্য দেশের মুসলিম ভাই বোনদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, তাদের যদি সুযোগ হয় তারা যেন আলকুদস এবং মসজিদুল আকসা যিয়ারাত করেন, কারণ তা তাদের জন্য অনেক কল্যাণ বয়ে আনবে। সবাইকে আমি আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আলকুদ্স আমাদের জন্য লাল রেখা। এবং মসজিদুল আকসা ও আল ক্বুব্বাতুস-সাখরা আল হারাম আশ-শারীফের অন্তর্ভুক্ত, যার আয়তন হলো ১৪৪ হেক্টর এবং এটা চিরকালের জন্য মুসলমানদের। এই পবিত্র ভূমিকে লক্ষ্য করে সমস্ত হামলা ও ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় আমরা আমার প্রিয় ভাই জর্দানের মালিক আবদল্লাহ আস-সানির পাশে থাকব এবং সকল উপায়ে তাকে সহায়তা করব, যিনি আলহারাম আশ- শারীফের পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। আমাদের ফিলিস্তীনী ভাইদের প্রতি আমার আহ্বান, তারা যেন নিজেদের সব বিভেদ, বিরোধ দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যান। এটা তাদের অবশ্যকর্তব্য, এর কোন বিকল্প নেই। আজ এ উপলক্ষে আমরা যেন স্মরণ করি ফাতিহুল কুদ্স মহান সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ূবির সেই অমূল্য উপদেশ, ‘আপনজনদের বিরুদ্ধেই যারা লড়াই করে তারা কখনো শত্রুুকে পরাজিত করতে পারে না।’
পৃথিবীর যে সকল রাষ্ট্র এখনো ফিলিস্তীনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এ মহূর্তে তাদের অবশ্যকর্তব্য হল এ অঞ্চলে প্রকৃতই শান্তি ও সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবিলম্বে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বিশেষ করে ইউরোপের প্রতি আমার আহ্বান, তারা যেন ফিলিস্তীনকে স্বীকৃতি না দেয়ার এ অবস্থান থেকে সরে আসে। এটা কোন যুক্তিতে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না যে, দখলদার রাষ্ট্রকে স্বাগত জানানো হচ্ছে, আর অপর রাষ্ট্রটি যারা ১৯৬৭ সালের সীমানার স্বীকতি চাচ্ছে যেটাও আসলে ঐতিহাসিক সীমানার এক পঞ্চমাংশ মাত্র, তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ ঘোষণার পর এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার এটা ছাড়া দ্বিতীয় আর কোন পথ নেই। নিজের দখলদারিত্ব বজায় রাখার জন্য এবং ভূমিদখল অব্যাহত রাখার জন্য ইসরাইল দীর্ঘকাল থেকেই শুধু সময়ক্ষেপণ করে আসছে। কিন্তু এটা কি করে হতে পারে যে, বিশ্ব একদিকে দুই রাষ্ট্র- ভিত্তিক সমাধানের কথা বলবে, অপরদিকে দিন দিন এটাকে অসম্ভব করে তোলার ক্ষেত্রে ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে যাবে! বাস্তবতা এই যে, দখলদার এবং দখলদারির শিকার পক্ষদ্বয়ের মাঝে আমরা কিছুতেই নিরপেক্ষ অবস্থানের কথা বলতে পারি না। কারণ এর অর্থ দখলদারের সব অন্যায় অনাচারকেই সমর্থন করা। আমরা দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে ফিলিস্তীনকে যেন সব আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রক্রিয়ার অংশ করে নেয়া হয় । এবং এ লক্ষ্যে আমাদের মুসলিম দেশগুলোকে, ওআইসি ও অন্যান্য সংস্থাকে অবশ্যই আরো অনেক জোরালো ও শক্তিশালী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আজ এখানে আমাদের অবশ্যই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে যে, আলকুদসকে রক্ষায় আমরা আমাদের সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ ব্যয় করব। ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার বর্তমান প্রধান হিসেবে আমি যুক্তরাষ্ট্রকে অহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন তাদের এই প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করে নেয়।
পরিশেষে আজ এই সম্মেলনে যারা উপস্থিত হয়েছেন, আমি আবারো আপনাদের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আসসালাম
তুরস্কের মহান প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
১৯৫৪ এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ। জন্মস্থান : ইস্তাম্বুল, তুরস্ক।
শিক্ষাগ্রহণ: ইমাম হাতিপ (খতীব) স্কুল, ইস্তাম্বুল
পরিবারকে সাহায্য করার জন্য বালকবয়সে ইস্তাম্বুল শহরে
শরবতবিক্রি এবং পত্রিকা বিতরণের কাজ।
১৯৭২ : নাজমুদ্দিন আরবাকানপ্রতিষ্ঠিত মিল্লি সালামাত পার্টির সদস্য-
পদ গ্রহণ।
১৯৭৮ : আরব বংশদ্ভূত আমিনাকে বিবাহ করেন।
১৯৮০ সামরিক অভ্যুত্থানের পর সালামাতপার্টি নিষিদ্ধ ঘোষণা।
১৯৮১ অর্থনীতি ও বাণিজ্যে ডিগ্রিলাভ, মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়,
ইস্তাম্বুল
১৯৮৫ নাজমুদ্দিন আরবাকানের নতুন দল রাফাহ পার্টির ইস্তাম্বুল
শাখার প্রধানরূপে নির্বাচিত
১৯৯৪ রাফাহ পার্টির প্রার্থীরূপে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত
১৯৯৬ জাতীয় নির্বাচনে অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে রাফাহ পার্টির ক্ষমতা
লাভ। তুরস্কের প্রথম ইসলামপন্থী প্রধানমন্ত্রীরূপে নাজমুদ্দিন
আরবাকান।
১৯৯৮ আবারও অভ্যুত্থান। রাষ্ট্র থেকে ধর্মের পৃথকায়নে ব্যর্থতার
অভিযোগে আরবাকান ক্ষমতাচ্যুত, রাফাহ পার্টি নিষিদ্ধ।
১৯৯৮ প্রকাশ্য সভায় ইসলামী কবিতা আবৃত্তি ও ধর্মীয় উসকানির
অভিযোগে মেয়র পদ থেকে অপসারণ, দশমাস কারাদ- এবং
আজীবন সরকারী দায়িত্ব পালনে অযোগ্য বলে রায়।
১৯৯৮ নাজমুদ্দিন আরবাকানের নতুন দল ফযিলত পার্টি গঠন।
পার্টিপ্রতিষ্ঠায় এরদোগানের সক্রিয় ভূমিকা।
২০০১ ‘অসাংবিধানিক’ প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে, এ অভিযোগে
ফযিলত পার্টিও নিষিদ্ধ।
২০০১ ‘ফযিলত’ ছেড়ে এরদোগানের একেপি গঠন।
২০০২ জাতীয় নির্বাচনের দশদিন আগে ‘একেপিপ্রধান রাজনীতিতে
৯৭-এর পাতায়
নিষিদ্ধ’ এ অজুহাতে একেপিকে নিষিদ্ধ
করার অপচেষ্টা।
২০০২ জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ। একেপির
এককসরকার গঠন।
নিষেধাজ্ঞা থাকায় এরদোগান প্রধানমন্ত্রী
নন! সহকর্মী আবদুল্লাহ গুল বিকল্প
প্রধানমন্ত্রী।
২০০৩ একেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নিষেধাজ্ঞা
প্রত্যাহার। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে
এরদোগানের দায়ীত্ব গ্রহণ।
২০০৭ জাতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয়বার একেপির
বিশাল বিজয় অর্জন
২০০৭ তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে মেয়েদের
হিজাবের উপর দীর্ঘদিনের আরোপিত
নিষেধাজ্ঞা একেপিকর্তৃক প্রত্যাহার ,
ইসলামবিদ্বেষী সেকুলার এলিটদের প্রবল
আপত্তি।
২০০৮ আদালতকর্তৃক একেপি নিষিদ্ধকরণের
অপচেষ্টা। একই রকম সাংবিধানিক
অভিযোগ, ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক
রাখতে একেপির ব্যর্থতা।
২০০৯ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অর্থনৈতিক
সম্মেলনে এরদোগান ইসরাইলের
তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজকে
ফিলিস্তিনী শিশুদের হত্যাকারী বলে
অভিযুক্ত করেন।
বক্তব্যপ্রদানকালে সঞ্চালক বারবার বাঁধা
দেয়ার একপর্যায়ে তিনি সম্মেলক কক্ষ
ত্যাগ করেন।
এভাবে বিশ্বমঞ্চে এক নতুন এরদোগান ও
নতুন তুরস্কের আবির্ভাব।
২০১০ আরব ও মুসলিমবিশ্বের নীরবতার
বিপরীতে গাযার পনের লক্ষ অবরুদ্ধ
ফিলিস্তীনী জনগণের জন্য তুরস্কের ত্রাণ
প্রেরণের সাহসী ঘোষণা। ত্রাণবোঝাই
জাহায প্রেরণ।
ইসরাইলি কমান্ডোকর্তৃক ত্রাণবাহী
জাহাযে হামলা। নয়জন নিরস্ত্র ত্রাণকর্মীর
শাহদাত বরণ।
ইস্তাম্বুলে শোকার্ত লক্ষ জনতার সঙ্গে
এরদোগানের শহীদানের জানাযা আদায়।
২০১১ টানা তৃতীয়বারের মত জাতীয় নির্বাচনে
একেপির জয়লাভ।
২০১৪ তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে
দায়িত্ব পালনশেষে তুরস্কের
ইতিহাসে জনগণের সরাসরি ভোটে
নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে
দায়িত্ব গ্রহণ।
২০১৬ সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যূত্থান
প্রচেষ্টা।
এরদোগানের ডাকে সেই গভীর
রাতে রাজপথে নেমে আসে তুর্কী জনতা।
আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে
গর্জে ওঠে তুরস্ক। সাজোয়াবহরের
সামনে দাঁড়িয়ে ট্যাংকবহরের নিচে
বুক পেতে দিয়ে সব অপচেষ্টা রুখে
দেয় নাম না জানা লক্ষ তুর্কী বীর।
রচিত হয় নেতার প্রতি ভালোবাসা ও
আত্মনিবেদনের এক নতুন ইতিহাস।
২০১৭ আরাকানে নিষ্ঠুর গণহত্যার শিকার
রোহিঙ্গা মুসিলম জনগোষ্ঠীর পক্ষে
শুরু থেকেই সোচ্চার ভূমিকা পালন।
তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি রোহিঙ্গাদের
উপর পরিচালিত নিধনযজ্ঞকে
‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।
* আলকুদস (জেরুসালেম)কে
ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে
ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদে
এরদোগানের আহ্বানে তুরস্কে ও আই
সির জরুরি সম্মেলন, ও আই সির
বর্তমান প্রধান
হিসেবে ইস্তাম্বুল থেকে এরদোগানের
ঘোষনা, ‘আলকুদস ফিলিস্তীনের
রাজধানী, আলকুদস আমাদের।
রাবেয়া বিজয়চিহ্ন
২০১৪ সালে মিশরের সামরিক স্বৈরাচার সিসি-এর আদেশে ঐতিহাসিক রাবেয়া আদাবিয়া মসজিদে সমবেত ইখওয়ানের অনুসরাী কয়েক হাজার নিরস্ত্র জনতাকে নির্মমভাবে হত্য করা হয়। রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াও সম্পূর্ণ দ্বীনী গায়রত ও হামদর্দির দিক থেকে এ মর্মন্তুদ ঘটনা এরদোগানকে গভীরভাবে বিচলিত করে। বিশেষত ঐ গণহত্যায় বিশিষ্ট ইখওয়াননেতা বালতাজীর ষোলবছরের শহীদ কন্যার লেখা চিঠি পড়ার সময় এরদোগানের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। তিনি তখন মিশরের জান্তার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
মসজিদটি মূলত মহান তাপসী রাবেয়া বছরীর পুণ্যনামের স্মৃতিগৌরবধারণকারী। রাবেয়া অর্থ চতুর্থ। সম্ভবত এই মহান তাপসী তার পিতার চতুর্থ সন্তান ছিলেন।
এই বেদনাদায়ক ঘটনাকে ইসলামী জনতার আগামী বিজয়ের প্রতীকরূপে জাগরূক রাখার জন্য এবং পাশ্চাত্যের প্রবর্তিত বিজয় চিহ্ন া এর বিকল্প উপস্থাপনের জন্য রজব তৈয়ব এরদোগান তখন থেকে চারআঙুলের বিজয়চিহ্ন প্রদর্শনের ধারা প্রবর্তন করেন।
এটি তার অনুসারীদের মধ্যে অত্যন্ত সাড়া জাগিয়েছে।
রজব তৈয়ব এরদোগান মুসলিম উম্মাহর সেবায় আরো সমৃদ্ধ জীবন যাপন করুন, এই কামনা।