শাবান ১৪৩৯ হিঃ (৩/৪)

কাশগর ও কায়রো

কাশ্মীরে রক্ত ঝরছে তো ঝরছেই!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 

একটি দু’টি করে দীর্ঘ পাঁচটি দশক পার হয়েছে, কাশ্মীরের স্বাধীনতা এখনো আটকা পড়ে আছে চাণক্যবাদী ভারতীয় শাসকদের কূটচালের মধ্যে; কিংবা ঝুলে আছে জাতিসঙ্ঘের পাঁচ মোড়লের মর্জির উপর।

জাতিসঙ্ঘেরই প্রস্তাব ছিলো, গণভোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কাশ্মীরের জনগণ নিজেরাই নির্ধারণ করবে নিজেদের ভাগ্য। ভারত সে প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলো। ঐ মেনে নেয়া পর্যন্তই। তার পর থেকে শুধু চলছে চাল, চালাচালি ও চালবাজি। কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে একাধিক যুদ্ধও সঙ্ঘটিত হয়েছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। জাতিসঙ্ঘ ছিলো নীরব দর্শকের ভূমিকায়। কারণ সম্ভবত এই যে, কাশ্মীর পূর্বতিমূর ছিলো না এবং ছিলো না দক্ষিণ সুদান! ঝিলাম নদীর পানি বারবার শুধু লাল হয়েছে কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী মুসলিম জনতার রক্তে।

হানাদার ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে শুধু ঝাঁঝরা হয়ে চলেছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সোচ্চার নিরস্ত্র তরুণদের বুক। ইতিমধ্যেই অন্ধত্ব বরণ করেছে শত শত কাশ্মীরী তরুণ-তরুণী হানাদার বাহিনীর ছোঁড়া ছররা গুলিতে। আটলাখ ভারতীয় সৈন্য শাব্দিক অর্থেই সমগ্র কাশ্মীরকে বানিয়ে রেখেছে উন্মুক্ত কারাগার ও বধ্যভূমি।

ভারতীয় হানাদার বাহিনীর সর্বশেষ নৃশংসতার ঘটনা ঘটেছে গত রোববার পয়লা এপ্রিল। সৈনিকদের বেপরোয়া গুলিবর্ষণে ১৩জন স্বাধীনতাযোদ্ধাসহ বিশজন শহীদ হয়েছেন, আর আহত হয়েছেন শত শত নিরস্ত্র মানুষ। আহতদের মধ্যে বহু মানুষ পেলেট গানের ছররা গুলিতে মারাত্মকভাবে বিদ্ধ হয়েছেন।

এর প্রতিবাদে গতকাল সোমবার যৌথ প্রতিরোধ নেতৃত্বের আহ্বানে সর্বাত্মক ধমঘট পালন করা হয়েছে। তাতে সমগ্র কাশ্মীর অচল হয়ে পড়েছিলো।

মারমুখী জনতাকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীও মরিয়া হয়ে উঠেছে। নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মতে, তুমুল বিক্ষোভ উপেক্ষা করেই কাশ্মীরে দমন অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। কারণ ভারত মনে করে, কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীরা হচ্ছে সন্ত্রাসী।

ভারতীয় জনগণের বিবেকবান অংশ অবশ্য ভারতকেই মনে করে হানাদার শক্তি, কারণ ইতিহাসের কোন অধ্যায়েই কাশ্মীর ভারতের অংশ ছিলো না। এ প্রসঙ্গে ভারতের স্বনামধন্য মানবাধিকার নেত্রী অরুন্ধতি রায় এর বক্তব্য স্মরণ করা যায়।

এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসী কাশ্মীরের ভারতীয় বাহিনীর সাম্প্রতিক বর্বরতার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এভাবে কাশ্মীরের জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, ভারতের দখলকৃত কাশ্মীরের জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামকে কোনভাবেই সন্ত্রাসবাদ বলার সুযোগ নেই।

পাকপ্রধানমন্ত্রী জাতিসঙ্ঘমহা-সচীবের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে কাশ্মীরবিষয়ক একজন দূত নিয়োগ করুন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী খাজা আসিফ এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘রক্তে ভেসে গেছে কাশ্মীর। তরুণেরা শহীদ হচ্ছে, আর যারা বেঁচে আছে তারা কফিন বহন করছে।’

আমরা শোনাতে চাই ইতিহাসের শাশ্বত বাণী, কাশ্মীরের স্বাধীনতা একদিন .....

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা