রমযান ১৪৩০ হিঃ (১৩)

একটি চিঠি / একটি উত্তর

মাহমুদুল হাসান, নামাজপুর পিরোজপুর ৭-৯-২৯ হিঃ

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট
মুহতারাম, আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ আশা করি আল্লাহর রহমতে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থেকে আমাদের মত দুর্ভাগাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন, আল্লাহ আপনাকে আরো তাওফীক দান করুন। আপনার কলম-প্রদীপের উজ্জ্বল আলো যে আমাদের চলার পথে সত্যি অনেক প্রয়োজন! আমার এ দীর্ঘ চিঠি পড়তে আপনার অনেক মূল্যবান সময় চলে যাবে জেনেও মুহব্বতের দাবীতে আব্দার করছি, দয়া করে তা শেষ পর্যন্ত পড়ুন। একসময় সত্যি আমি মানুষের কাতারে ছিলাম না। আমি জানতাম না উস্তাযের ইহতিরাম কাকে বলে এবং জীবনের সফলতা কোন্‌ পথে আসে! আমাকে পথ দেখাতেই যে আলকাউছারের পাতায় এলো আপনার ‘এখনো জোনাকি জ্বলে’। সেই জোনাকির আলোতে আমি পথের দিশা পেলাম এবং মানুষ হওয়ার সাধনায় আত্মনিয়োগ করলাম। যতই পড়ি, জোনাকির আলো যেন আমার চলার পথে ততই ঔজ্জ্বল্য ছড়ায়। জোনাকির আলোই আমাকে এই বয়সে নিয়ে এসেছে মাদানী নেছাবে। ... আপনি শুনে খুশী হবেন, আল্লাহর ইচ্ছায় আমি আমাদের এলাকায় ‘নামবিহীন’ একটি পাঠাগার গড়ে তুলেছি। তরুণরা সেখান থেকে বই নিয়ে পড়ে। বহু কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকারের ফল আমার প্রিয় এই পাঠাগারটি। আপনি আপনার মোবারক কলম দ্বারা পাঠাগারটির একটি সুন্দর নাম রেখে আমাকে আরো কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করবেন, এই কামনা। ... পুষ্প যে মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা বলে তার উপর আমি অবিচল থাকার চেষ্টা করে যাবো ইনশাআল্লাহ। হুযূর! অন্যসবার মত আমিও আপনাকে সম্পাদক ভাইয়া বলে সম্বোধন করতে পারতাম, কিন্তু আমার দিলের তামান্না এই যে, আপনাকে সম্বোধন করবো আমার অভিবাকের মর্যাদায়। কারণ আমরা ভাই-বোনেরা পিতৃস্নেহ মর্মান্তিকভাবে বঞ্চিত। আমি শুনেছি আপনার অসন্তুষ্টি কখনো ক্রোধের আকারে প্রকাশ পায় না, সংযমের পুরু আবরণে আবৃত থাকে। কিন্তু আমার আন্তরিক নিবেদন, দীর্ঘ লেখার কারণে আমার প্রতি অসন্তুষ্টি যেন না হয়, তাহলে হয়ত আমি অন্ধকারে হারিয়ে যাবো। হুযূর, আমরা ভাই-বোনেরা মিলে ...। আমি গ্রামের তরুণদের নিয়ে কীভাবে কাজ করলে সমাজের উপকার হবে সে বিষয়ে পরামার্শ চাচ্ছি। ... উত্তর: ওয়া আলাইকুমুস্‌সালাম ওয়া.. ‘কলম-প্রদীপ’ উপমাটুকুর জন্য এবং সুধারণা পোষণের জন্য ধন্যবাদ। তুমি লিখেছো মানুষ হওয়ার সাধনায় আত্মনিয়োগ করার কথা; মানুষ তো তুমি আল্লাহর রহমতে আগে থেকেই আছো। এটা হলো তোমার সুন্দর থেকে আরো সুন্দর হওয়ার সাধনা, আল্লাহ তোমাকে কবুল করুন। যে কাজ শুরুতে নামবিহীন থাকে পরবর্তীতে আল্লাহ সেটাকে নামী ও দামী করে দেন। তোমার জন্য সে দু‘আই করছি। যারা কোন কাজ করে, কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেই করে। এছাড়া কখনো কোন কাজ হয়নি, হবেও না। ‘প্রদীপ পাঠাগার’ বা ‘পুষ্প পাঠাগার’ অথবা ‘নূর পাঠাগার’ নাম হতে পারে। তবে ছাত্রত্বের কালে এধরণের কাজ খুব সীমিত পরিসরে করাই ভালো। সকাল থেকে সন্ধ্যা এবং সন্ধ্যা থেকে সকাল তোমার প্রতিদিনের সুনির্দিষ্ট ‘নিযামুল আওকাত’ দরকার। তাহলে কাজের সময়ে বরকত হবে, ইনশাআল্লাহ। তোমার পুরো চিঠিটি আমাকে আপ্লুত করেছে। তোমার জন্য আমার দু‘আ অব্যাহত রয়েছে।
শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট