শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

মুহররম ১৪৩২ হি: (১৮) | তোমাদের পাতা

তাকে

 কোথায় পাবো তাকে? ইরানের গুলিস্তানে? কোহকাফের পরিস্তানে? কিংবা দিগন্তহীন সাহারার মুরুদ্যানে? কোথায় বাস করে সে? কেন দেখা দেয় না? কেন ধরা দেয় না?

 কোথায় পাবো তাকে? দূরের তারকালোকে? চাঁদে, মঙ্গলে, কিংবা অন্য গ্রহলোকে? কোথায় বাস করে সে? কেন দেখা দেয় না? কেন ধরা দেয় না?

 কোথায় পাবো তাকে? হিমালয়ের কোন পর্বতগুহায়? সাগরের বুকে নাম না জানা কোন দ্বীপে? কিংবা আফ্রিকার গভীর বনে? কোথায় বাস করে সে? কেন দেখা দেয় না? কেন ধরা দেয় না?

 সে কি খুব দূরে? কত দূরে? তারকালোক ছাড়িয়ে, আকাশের শেষ সীমায়, মহাশূন্যের ওপারে? আরো দূরে?

 সে কি খুব কাছে? কত কাছে? বাড়ীর পাশে বাঁশঝাড়ে, আমবাগানে, ফুলবাগিচায়? আরো কাছে?

কখনো কেউ কি পেয়েছে তাকে? কোথাও কি আছে তার পদচিহ্ন? কিংবা শুধু চিহ্ন? কেউ যদি খুঁজে পাও, বলো, আমি ভালোবাসি তাকে!

আমি পেতে চাই তাকে? আমার বুকের সবটুকু ভালোবাসা আমি নিবেদন করতে চাই তাকে। তার জন্য আমার মন কাঁদে, প্রাণ কাঁদে। অনেক কবিতা লিখেছি আমি তাকে বন্দনা করে? যদি কোনদিন দেখা পাই, আমার একটি কবিতা তাকে শোনাতে চাই, যে কবিতার জন্ম শব্দ দিয়ে নয়, ফুল দিয়ে।

যদি দেখা পাও, বলো তাকে, অনেক মালা গেঁথেছি আমি তার জন্য।

 যদি কোনদিন তার দেখা পাই, একটি মালা আমি তাকে পরাতে চাই, যে মালা আমি গেঁথেছি মুক্তার দানা দিয়ে নয়, ফোঁটা ফোঁটা অশ্রুর মুক্তাবিন্দু দিয়ে।

কখনো যদি খুঁজে পাও বলো তাকে, বড় দুঃখী আমি! বড় নিঃসঙ্গ আমি! তার চোখের সদয় চাহনির, তার মুখের মধুর হাসির, তার একটু আদরের, একটু সান্ত্বনার বড় কাঙ্গাল আমি!

যদি দেখা পাও, বলো তাকে, বিরহের যন্ত্রণা আর সইতে পারি না, দগ্ধ হৃদয় এখন আর কাঁদতে পারে না, শুধু দগ্ধ হয়, আর আর্তনাদ করে।

বিষণ্ণ চোখ এখন আর অশ্রু ঝরাতে পারে না, ঘোলা দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। এখনো কি সময় হয়নি বিরহের অবসানের! এখনো কি সময় হয়নি মিলনের আনন্দের!

অন্তত বলো তাকে, আমার হৃদয়ে যেন আরো ভালোবাসা থাকে তার জন্য। আমার বুকে যেন আরো যন্ত্রণা থাকে তার জন্য। আমার চোখে যেন আরো কান্না থাকে তার জন্য! তার ভালোবাসায় আমি আরো দগ্ধ হতে চাই এবং তাকে পাওয়ার সাধনায় আমি কান্নার সাগরে ডুবে থাকতে চাই।