শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

রবিউল আউয়াল ১৪৪০হিঃ (৩/৭) | কিশোর পাতা

কিশোর বন্ধুরা!

সালাম গ্রহণ করো। আশা করি সবাই ভালো আছো। কথা ছিলো, সময় ও সুযোগ হলে আগামী সাক্ষাতে আমরা আত্মজিজ্ঞাসার সম্মুখীন হবো। তো এসো নিজেকে আজ বিবেকের আদালতে হাজির করি এবং নিজেকে জিজ্ঞাসা করি এবং নিজের কাছে প্রতিটি প্রশ্নের স্পষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত উত্তর দাবী করি!

‘পুষ্পের প্রথম প্রকাশনা শুরু হেয়ছিলো ১৪২০ হিজরীতে, এখন ১৪৪০ হিজরী। মাঝখানে পার হয়েছে একে একে বিশটি বছর! তখন যাদের বয়স ছিলো ১০ এখন তারা ত্রিশবছরের প্রাণচাঞ্চল্যে ও উদ্যম-উদ্দীপনায় পরিপূর্ণ ‘কর্মীপুরুষ’।

এ বিশ বছরে, আসুন নিজেকে জিজ্ঞাসা করি, আমরা কত বছরের পথ অতিক্রম করেছি? চল্লিবছরের, ত্রিশ, বিশ? অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা সময় থেকে এগিয়ে থাকতে পেরেছি? অন্তত সমান সমান? নাকি আমরা সময় থেকে পিছিয়ে গিয়েছি, পাঁচ, সাত, দশ বছর, কিংবা আরো বেশী?!

আমাদের চিন্তা ও চেতনার জগতে কি কোন বিপ্লব এসেছে? জীবনের প্রতি আমাদের যে আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি তাতে কি আভিজাত্য অর্জিত হয়েছে? কতটুকু হয়েছে?

এমন আত্মপ্রত্যয় কি আমরা অর্জন করতে পেরেছি যাতে পরম নির্ভরতার সঙ্গে সময় ও সমাজের মুখোমুখি হতে পারি এবং যারা দিকভ্রান্ত তাদের বলতে পারি, জীবনের আলোকিত পথ কোন্টি এবং কোন্টি অন্ধকার পথ?

শুভ্র, সুন্দর ও কল্যাণমুখী জীবন এবং পরিচ্ছন্ন, পরিশুদ্ধ ও পবিত্র জীবনদর্শনকে সময় ও সমাজের সামনে তুলে ধরার জন্য যে কলমের প্রয়োজন, কলবের সঙ্গে বন্ধনসমৃদ্ধ সেই কলম কি এই দীর্ঘ বিশটি বছরে আমরা অর্জন করতে পেরেছি নীরবচ্ছিন্ন সাধনার মাধ্যমে? পুষ্পের এ ‘স্বপ্নকলিটি’ সুবাসিত ফুল হয়ে ফোটার জন্য বিশটা বছর কি যথেষ্ট ছিলো না?

রক্তের বর্ণ লাল এবং আগুনের বর্ণ! সেই লাল বর্ণের লাল হরফে এবার একটা প্রশ্ন-

‘বিশ বছর আগের সেই কিশোরদের মধ্য হতে পুষ্প কি আজ এমন দশজন কর্মীপুরুষ পেয়েছে যারা পুষ্পকে পুষ্পের মত করে এগিয়ে নিতে পারে সামনের দিকে? পুষ্পের মালী যাদের হাতে পুষ্পকে অর্পণ করে নিশ্চিন্তে চোখ বন্ধ করতে পারে?’

রক্তবর্ণের এ জ্বলন্ত প্রশ্নের কোন সন্তোষজনক উত্তর কি আমরা দিতে পারবো সবুজ হরফে, অন্তত কালো হরফে?                       (আরো কিছু কথা আল্লাহ চাহে তো ...)

 

আমার নিজের সম্পর্কে যদি চিন্তা করি, তাহলে সত্যের প্রতি পরিপূর্ণ সম্মান রক্ষা করে যা বলতে পারি তা হলো- ‘আমার দু’টি চোখের তারায় দু’টি স্বপ্ন ছিলো, দরদী মালীরূপে নিজেকে উৎসর্গ করা এবং প্রতিটি কলিকে হৃদয়ের রক্তে সিঞ্চিত করে লাল গোলাপরূপে ফুটিয়ে তোলা। দয়াময়ের দয়ায় একটি স্বপ্ন কিছুটা বোধহয় সফল হয়েছে; তবে তা মলিন হয়ে গিয়েছে দ্বিতীয় স্বপ্নটির মর্মান্তিক ব্যর্থতায়!

 

জীবনের প্রতি আচরণ ও দৃষ্টি-ভঙ্গির ক্ষেত্রে আভিজাত্য অর্জন, এটাই হলো ইসলামের শিক্ষা এবং এটাই হলো মুমিনের জীবনের পরম সাধনা!

যা কিছু মহৎ ও মহান, যা কিছু শুভ্র ও সুন্দর, যা কিছু পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র সেটাই অভিজাত।

একটি হাদীছে আমাদের পেয়ারা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম বলেছেন-

‘আল্লাহ ভালোবাসেন যা কিছু মহৎ ও অভিজাত এবং ঘৃণা করেন যা কিছু তুচ্ছ।’

এ হাদীছ আমাদের পূর্ণরূপে অনুসরণ করতে হবে জীবনের সর্ববিষয়ে।

 

ভবিষ্যতের প্রতি কৃতজ্ঞতা

ভবিষ্যত কী? এবং কী ভবিষ্যতের মর্ম ও তাৎপর্য?

এখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে সময়কাল সেটাই আমার তোমার ভবিষ্যত! তো হতে পারে কারো ভবিষ্যত অল্প সময়ের, মাত্র দু’দিনের; হতে পারে কারো ভবিষ্যৎ দীর্ঘ সময়ের, ত্রিশ চল্লিশ, সত্তর আশি বছরের, কিংবা আরো বেশী।

কী মর্ম ও তাৎপর্য ভবিষ্যতের? ভবিষ্যৎ হলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের এবং আখেরাতের অনন্ত জীবনের সফলতা অর্জনের ক্ষেত্র।

ভবিষ্যতের গুরুত্ব ও সার্থকতা পরিমাণ ও পরিধিতে নয়, কর্মের প্রকৃতিতে। একজনের সামনে ছিলো চল্লিশ বছরের ভবিষ্যত; এ দীর্ঘ ভবিষ্যত তার কেটেছে উদাসীনতা ও গাফলতের মধ্যে, পাপ ও পাপাচারের মধ্যে। সেখানে ত্যাগ ও আত্মত্যাগ ছিলো না; ছিলো লোভ লালসা ও স্বার্থচিন্তা, তাহলে তো এত দীর্ঘ হয়েও এ অভিষ্যত তার জন্য হবে অভিশাপ।

একজনের সামনে ছিলো খুব অল্প সময়ের ভবিষ্যত, দু’দিনের, দশ দিনের, আরো বেশী বা কম। কিন্তু তা যাপিত হয়েছে শুভ কর্মে ও শুভ্রচিন্তায়, চরিত্রের পবিত্রতায়, নীতি ও নৈতিকতার স্বচ্ছতায়; আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিরন্তর প্রচেষ্টায়। সেখানে লোভ লালসা ছিলো না, ছিলো অল্পে তুষ্টি; সেখানে স্বার্থচিন্তা ছিলো না, ছিলো মানুষের প্রতি কল্যাণচিন্তা, ছিলো দুঃখী-জনের প্রতি সহানুভূতি ও হামদর্দি; ছিলো মানুষ ও মানবতার প্রতি আত্মনিবেদনের প্রতিশ্রুতি; এমন ভবিষ্যত পরিমাণে পরিসরে সামান্য হয়েও অসামান্য। এমন ভবিষ্যত তোমার জন্য হবে আশীর্বাদ। দু’দিনের বা দীর্ঘদিনের, ভবিষ্যত হলো মানুষের জীবনের সামনের

দিকে, পরমসত্তার পক্ষ হতে মেলে ধরা একটি সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনাকে যারা বিনয় ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করে, যারা জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সঙ্গে ব্যবহার করে; এটাকে যারা ¯্রষ্টার দান মনে করে ¯্রষ্টার সমীপেই অর্পণ ও সমর্পণ করে তারা সফল, তারা পরম সৌভাগ্যের অধিকারী; তাদের জীবন সার্থক; দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনও, আখেরাতের অনন্ত জীবনও।

আমার কাছে ভবিষ্যতের সবচে’ বড় সৌন্দর্য এই যে, আমি জানি না, তার পরিধি ও পরিসর কত? দু’দিনের না বহুদিনের? কিন্তু আমি জানি, পরিধি ও পরিসর যাই হোক, আমার ভবিষ্যত আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অনন্ত সফলতার অপার সম্ভাবনার হাতছানি নিয়ে। আমি শুধু চাই এ হাতছানিকে বিনয় ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করতে, আকুতি ও মিনতির সঙ্গে বরণ করতে এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সঙ্গে যাপন করতে। আমি চাই কিছু শুভকর্ম ও শুভ্র চিন্তা দ্বারা সুসজ্জিত করে ¯্রষ্টার দান ¯্রষ্টারই সমীপে অর্পণ ও সমর্পণ করতে। আমি চাই, আমার ভবিষ্যত যেন আমার আখেরাতের সঞ্চয়রূপে আমার ¯্রষ্টার কাছে সংরক্ষিত থাকে।

আমাদের ¯্রষ্টা আমাদের ভবিষ্যতের যে চিত্র এঁকেছেন তা এই-

‘আর যা কিছু তোমরা নিজেদের জন্য অগ্রবর্তী করবে, পাবে তা আল্লাহর কাছে।

ভবিষ্যত পরিমাণ ও পরিধির নাম নয়, কর্মের নাম, সৎকর্ম বা মন্দকর্ম-

আর যে সরষে পরিমাণও নেক আমল করবে সে তা দেখতে পাবে; আর যে সরষে পরিমাণও বদ আমল করবে সে তা দেখতে পাবে।

ভবিষ্যতের প্রতি কাফির ও মুমিনের দৃষ্টির মধ্যে রয়েছে আসমান-যমীনের পার্থক্য। মুমিনের দৃষ্টি হলো ইনতিযার ও প্রতীক্ষার! কখন তা সমাপ্ত হবে! কখন মৃত্যুর মধুর আলিঙ্গন আসবে! কখন তার সামনে অনন্ত জীবনের সফলতার দ্বার উন্মুক্ত হবে, পরম সত্তার সঙ্গে মিলনের মাধ্যমে!!

কাফিরের দৃষ্টি হলো দীর্ঘ লোভ- লালসার, গভীর ক্ষোভ-হতাশার। তার লোভের জিহ্বা তার জীবনের পরিধিকেও ছাড়িয়ে যায়! তাই তো সে ক্ষোভ প্রকাশ করে, তুচ্ছ প্রাণী হয়েও কচ্ছপ কেন তিনশ বছর বাঁচে! মানুষ হয়েও তার জীবন কেন এত ক্ষুদ্র!!

দৃষ্টি ও দৃষ্টিভঙ্গির এ পার্থক্যের কারণ মুমিন ভবিষ্যতকে গ্রহণ করে সম্ভাবনার বিচারে, পক্ষান্তরে কাফির ভবিষ্যতকে পেতে চায় পরিধি ও পরিমাণের অবয়বে।

আমার ভবিষ্যতের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ ভবিষ্যত আমার সামনে মেলে ধরেছে অপার সম্ভাবনার হাতছানি! আমি শুনতে পাই, ভবিষ্যত আমাকে আহ্বান জানায় শুভ ও শুভ্রতার প্রতি! আলো ও উজ্জ্বলতার প্রতি! নূর ও নূরানিয়াতের প্রতি! ভবিষ্যতকে আশ্রয় করেই আমি পারি জীবনের আঁধার দূর করতে; জীবনের সব কালিমা মুছে ফেলতে!! ভবিষ্যতকে অবলম্বন করেই আমি পারি কিছু আলো গ্রহণ করতে, কিছু আলো বিতরণ করতে এবং আলোর বিপুল সঞ্চয় গড়ে তুলতে।

আমার জীবনকে যিনি বিন্যস্ত করেছেন অতীতের ঐশ্বর্যে, বর্তমানের সৌন্দর্যে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনায়, জীবনের প্রতিটি ধাপের প্রতি কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে আসলে আমি জানাতে চাই আমার ¯্রষ্টারই প্রতি কৃজ্ঞতা! আমার অতীত, আমার বর্তমান, আমার ভবিষ্যত সবই তো তাঁর দান, সুতরাং তা তাঁরই জন্য নিবেদিত।

তোমার মায়াভরা ডাকের প্রতীক্ষায় ভবিষ্যতের দিনগুলো শুভ্রতার মাঝে যেন যাপন করতে পরি হে আল্লাহ, হে রাহমান, হে রাহীম।

 

 

 

একটি জীবন খুব নিকট থেকে দেখেছি; দেখেছি, আর অবাক হয়েছি; অবাক হয়েছি, আর ভেবেছি, জীবন আসলে কী? কোথায় কোন্ আঁধারে, কিংবা কোন্ আলোর উৎসে লুকিয়ে আছে জীবনের রহস্য?

জীবন কি বন্ধনহীন নিছক কিছু সময়? জীবন কি শুধু দিন-রাতের আবর্তন? জীবন কি কোন গন্তব্যহীন পথচলা? জীবনের উদ্দেশ্য কী? দায় ও দায়িত্ব কী?

এ প্রশ্ন আমার একার নয় এবং নয় শুধু আজকের। এ জিজ্ঞাসা যুগে যুগে প্রত্যেক জ্ঞানী ও চিন্তাশীল মানুষের। মানুষের এ প্রশ্ন কখনো ছিলো মানুষের কাছে, কখনো ছিলো তার নিজের কাছে।

উত্তর এসেছে কখনো আঁধার- ঘেরা, কখনো আলোবেষ্টিত!

জীবনের শুরু থেকে জীবনের সবচে’ বড় ট্রাজেডি এই যে, জাহেল-মূর্খদের কথা বলছি না; উলাাইকা কাল আন‘আামের কথা বলছি না; আমি বলছি তাদের জীবনের কথা, মানুষ যাদের ভেবেছে জ্ঞানী, এমনকি তারা নিজেরাও নিজেদের ভেবেছে প্রজ্ঞাবান, তাদের জীবনের বড় ট্রাজেডি এই যে, অন্ধকারের গহ্বর থেকে পাওয়া উত্তরই তারা গ্রহণ করেছে! আলোর উৎস থেকে পাওয়া উত্তর কখনো তারা বরণ করেনি।

ফল ও পরিণতি? প্রতিটি জীবনের উদ্বোধন ছিলো শুভ্র-সুন্দর ও আলোকিত, কিন্তু জীবনের সমাপ্তি ও পরিণতি, বেশীর ভাগ সময় হয়েছে অসুন্দর ও মলিন!! অথচ সুন্দর

উদ্বোধনের সুন্দর পরিণতিই তো ছিলো কাম্য!

খুব নিকট থেকে দেখা যে জীবনের কথা বললাম, তা সাধারণ কোন জীবন ছিলো না; ছিলো বিদগ্ধ, জ্ঞানসমৃদ্ধ ও প্রজ্ঞাম-িত জীবন!

সেই জীবনের কাছ থেকে আমি পেতে চেয়েছি আমার অস্থির জিজ্ঞাসার সুস্থির উত্তর! সেই জীবনের দিন-রাত ও সকাল-সন্ধ্যা এবং তার গলে গলে শেষ হওয়া সময়গুলো আমাকে বলেছে, জন্মের পূর্বে আকার-অবয়বহীন ‘অন্ধকার’, মৃত্যুর পরে অজ্ঞাত ও অনিশ্চিত আঁধার! মাঝখানের যা কিছু জৌলুস ও ভোগ-উপভোগ, এরই নাম জীবন। জীবন এ ছাড়া আর কিছু নয়!

তাহলে কোত্থেকে এসেছি? শূন্য থেকে।

কোথায় তাহলে আমাদের গন্তব্য? অসীম শূন্যতা।

কোথায় তাহলে জীবনের সফলতা? বাধা-বন্ধনহীন ভোগ -উপভোগে!

কিসে তাহলে জীবনের ব্যর্থতা? ভোগ-উপভোগের নাগাল না পাওয়া!

একসময় সেই জীবনের পরিণতিও দেখেছি; দেখেছি, আর ব্যথিত হয়েছি।

তারপর এলো আমার জীবনে সৌভাগ্যের পরম লগ্ন! একটি শুভ্র আলোকিত জীবনের সান্নিধ্য লাভে আমি ধন্য হলাম খুব সামান্য সময়ের জন্য। সেই জীবনের কাছে আমার কোন জিজ্ঞাসা ছিলো না এবং ছিলো না কোন প্রশ্ন। সেই জীবন যিনি বহন করেছেন একটি নিশ্চিত ও নিশ্চিন্ত গন্তব্যকে উদ্দেশ্য করে, তিনি নিজে একটি রাতের নির্জনতায় আমাকে ডাকলেন এবং মমতার ¯িœগ্ধ পরশ বুলিয়ে বললেন, জানতে চাও জীবনের রহস্য? ...ইলা রাব্বিকা!

জানতে চাও জীবনের গন্তব্য?

... ওয়াদখুলী জান্নাতী!

(লেখাটির শিরোনাম হতে পারে, ‘জীবনের জিজ্ঞাসা ও তার জবাব!)র্র্

 

 

মানুষ বলে, বেঁচে থাকার জন্য কোন না কোন অবলম্বনের প্রয়োজন। একটি শিশু বেঁচে থাকে মায়ের বুকের দুধ ও মাতৃমমতাকে অবলম্বন করে।

এ কথা সত্য! তবে আমি জানতে চাই-

যে শিশু জন্মের আগে বাবার ¯েœহের ছায়া এবং জন্মের সময় মায়ের মমতার আঁচল হারায়, সেই এতীম শিশুটি কীভাবে বেঁচে থাকে?! কোন্ অবলম্বনে?! তাড়াহুড়া নয়, গভীর চিন্তা -ভাবনার পর উত্তর দাও।

এখানেই বুঝতে হবে, শিশু থেকে বুড়ো প্রতিটি মানুষ জীবন ও জগতের এত শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বেঁচে আছে কীভাবে? কী তার অবলম্বন? কে তার সহায়? মাঝ দরিয়ায় ঝড়ঝঞ্ঝার মুখে অসহায় যাত্রী কাকে ডাকে? আল্লাহ ছাড়া আর কোন অবলম্বন কি তখন তার মনে পড়ে? জগতে মানুষের যা কিছু অবলম্বন তা দয়াময়ের ‘দয়ার আবরণ’ ছাড়া কিছু নয়। হে মানুষ, তোমার একমাত্র অবলম্বন, একমাত্র সহায় তোমার ¯্রষ্টা আল্লাহ! আল্লাহর দয়া-মায়ার শেষ নাই; আল্লাহ ছাড়া আমার তোমার কোন সহায় নাই।