শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

জিলহজ্ব ১৪৪০ হিঃ (৩/৮) | কাশগর ও কায়রো

চাঁদের কাছে ইসরাইল কোথায় মুসলিম বিশ্ব?

সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিজগতে একটা খবর বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ দিন থেকে অতি গোপনীয়তা রক্ষা করে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল মহাকাশ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলো। এক্ষেত্রে তারা কত দূর অগ্রসর হয়েছে তা জানা গেলো যখন ইহুদী বিজ্ঞানীরা চাঁদের উদ্দেশ্যে মহাকাশযান প্রেরণ করলো। অবশ্য তাদের কথিত চন্দ্রাভিযান শেষ মাথায় এসে ব্যর্থ হয়েছে। বিবিসির খবরে প্রকাশ, ইহুদী মহাকাশ-যানটি তার মূল ইঞ্জিন অকার্যকর হয়ে পড়ার কারণে অবতরণের পূর্বমুহূর্তে চাঁদের বুকে আছড়ে পড়েছে।

বেরেশিট নামের ইসরাইলী এই মহাকাশ-যানটি চাঁদের বুকে স্বাভাবিকভাবেই অবতরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলো এবং সবকিছু ঠিকমতই চলছিলো। কিন্তু অবতরণের সময় মূল ইঞ্জিনে কিছু কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

মহাকাশযান প্রেরণের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিলো চাঁদের বুকে কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো এবং পৃথিবীতে চাঁদের বিভিন্ন ছবি প্রেরণ করা। বেরেশিট সফল হলে ইহুদীবাদী ইসরাইল চাঁদে অবতরণকারী চতুর্থ দেশের স্বীকৃতি লাভ করতো। এর আগে শুধু সোভিয়েট ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন, এই তিন রাষ্ট্র চাঁদে অবতরণকারী দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। তবে এদিক থেকে ইসরাইল হচ্ছে প্রথম রাষ্ট্র এবং ইহুদীরা হচ্ছে প্রথম জাতি যারা ব্যক্তিগত অর্থায়নে মহাকাশ-গবেষণা ও চাঁদের উদ্দেশ্যে মহাকাশযান প্রেরণের অভিযান পরিচালনা করছে। পক্ষান্তরে চীন, রাশিয়া ও আমেরিকার সরকারপরিচালিত মহাকাশগবেষণা সংস্থার চন্দ্রযানই শুধু সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করতে পেরেছে। 

ইসরাইলী মহাকাশপ্রকল্পের অন্যতম উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক এ উপলক্ষে যা বলেছেন তা যথেষ্ট শিক্ষণীয়। তিনি বলেন, ‘আমরা পারিনি, কিন্তু চেষ্টা করেছি। তবে যতটা পেরেছি তাও অসাধারণ। আমার ধারণা, আমরা গর্ব করতে পারি। ইসরাইলের রাজধানী তেলআবীবের নিকটে অবস্থিত নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে বেরেশিটের চাঁদে অবতরণদৃশ্য অবলোকন করছিলেন ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেন্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের হতোদ্যম না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘প্রথমে যদি সফল নাও হন, আবার চেষ্টা করুন।’

শত্রুর ব্যর্থতায় উল্লাস প্রকাশ করা মানুষের স্বভাব। কিন্তু আমরা তা করতে চাই না। আমরা শুধু চাই প্রযুক্তির জগতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের ক্ষেত্রে শত্রুর নিরলস প্রচেষ্টা ও অগ্রগতি হতে শিক্ষা গ্রহণ করতে। আমরা চাই আত্মজিজ্ঞাসার সম্মুখীন হতে। কিসের অভাব মুসলিম বিশে^র? কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না? আর কিছু না হোক, প্রতিটি মুসলিম দেশ তো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চা-সাধনার পতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করতে পারে! ইহুদিরা যাবে, আমরা মজে থাকবো বিশ^কাপ আয়োজনে? আর কতদিন আমাদের শুনতে হবে শত্রুর মুখ থেকে, ‘আমাদের সমর্থন ছাড়া তোমরা দু’সপ্তাহও টিকবে না’...!