শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

কাশ্মীরসংখ্যা | প্রথম পাতা

প্রথম কথা

 

  প্রথম কথা

কাশ্মীরের সবুজ উপত্যকায় বন্দুক হাতে যারা শিশুদের হত্যা করে, সারা পৃথিবী বলছে, ওরা সৈনিক এবং ওরা মানুষ! আমি বিশ্বাস করিনি। কারণ একটি ফুল আমাকে বলেছে, ওরা মানুষ নয়। নিষ্পাপ শিশুকে যারা হত্যা করে তারা মানুষ হতে পারে না। আমি পৃথিবীর কথা বিশস করিনি, ফুলের কথা বিশ্বাস করেছি। আমি কি ভুল করেছি!

আজ ভোরে আমার বাগানের একটি ফুল; বাগানের ঠিক মাঝখানে যে গোলাবগাছটি, তার উপরের ডালে বড় সাদা গোলাব ফুলটি, মনে হলো আমাকে কিছু বলতে চায়! ফুলের কথা শোনার, ফুলের সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য আমার হয়েছে জীবনে বহুবার; আজ আবার হলো! এজন্য ফুলের ¯স্রষ্টার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ!

সাদা গোলাবের পাপড়িগুলো, স্পষ্ট যেন শুনছি, আমাকে বলছে, হে বৃদ্ধ, তোমাকে আমি ভালোবাসি। কারণ তোমার কলম কাশ্মীরের মযলূম মুসলিমানের জন্য কাঁদছে; মযলুমানের কথা লিখছে।

তিনটি জিনিস আমি ভালোবাসি;  ভোরের শিশির, যখন বাগানে ফুলের উপর ঝরে!  লেখকের কলম, যখন বঞ্চিত মানুষের জন্য কাঁদে এবং কালো কালির অশ্রু বর্ষণ করে!! আর ভালোবাসি প্রতিবাদের কণ্ঠ, যখন যালিমের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে!!!

হে বৃদ্ধ, তোমাকে আমি ভালোবাসি, কারণ তোমার চোখদু’টো শিশিরভেজা; তোমাকে আমি ভালোবাসি, কারণ তোমার কলম কাঁদে; তোমার কলম থেকে অশ্রু ঝরে মযলুমানের জন্য।

হে বৃদ্ধ, তোমার কণ্ঠ দুর্বল, তবু তুমি প্রতিবাদ করো! তোমার হাত কাঁপে, তবু তুমি বঞ্চিতের অধিকারের জন্য কলম ধরো; তোমাকে ধন্যবাদ! তবে আমার, তোমার বাগানের সাদা গোলাবের, মিনতি শোনো; কলমের অশ্রুর চেয়ে কাশ্মীরের মযলুমানের এখন বেশী প্রয়োজন কলমের আগুনের, আগুনঝরা শব্দের।

আর শব্দের চেয়ে বেশী প্রয়োজন বুকের...!

 

সোনার হরফে

জীবনের চেয়ে দৃপ্ত মৃত্যু

     তখনি জানি শহীদী রক্তে হেসে ওঠে যবে জিন্দেগানি।

 

আমাদের প্রতিজ্ঞা

  মৃত্যুর সময় তো নির্ধারিত,

না আগে, না পরে।

সুতরাং আমরা মৃত্যুভয় থেকে

মুক্ত হবো, বরং আল্লাহর পথে

মৃত্যুর আকাক্সক্ষা বুকে লালন করবো।

 

بسم الله الرحمن الرحيم

السلام عـلــيـكم ورحـمة الله وبــركاتــه

 

ফোঁটা হৃদয়ের ফোঁটা রক্ত এবং চোখের ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু দিয়ে লেখা

     কাশ্মীরসংখ্যা

যার আর্তনাদ, বিশ্বাস করি, শব্দকে অতিক্রম  করে যাবে বহুদূর! এমনকি  আরশের...!

শহীদানে কাশ্মীর, বুকের তাজা খুনে যারা আযাদীর পথ রাঙিয়েছেন এবং পূর্বদিগন্তে ‘রক্তিম’ সূর্যের উদয় নিশ্চিত করে অমরত্বের মর্যাদা লাভ করেছেন

গাযিয়ানে কাশ্মীর, কণ্ঠে যাদের আহত সিংহের হুঙ্কার, চোখে যাদের আগুনের শিখা, ক্রোধের নয় এবং নয় প্রতিহিংসার, বরং আযাদীর পথে এগিয়ে চলার প্রত্যয়ের,

মযলুমানে কশ্মীর, নারী-বৃদ্ধ-শিশু; দশলাখ ‘বন্দুকের নল’ যাদের বুক ঝাঁঝরা করে দিতে উদ্যত, অথচ তাদের বুকে নেই মৃত্যুর ভয়, আছে শুধু আযাদীর অদম্য স্পৃহা

কাশ্মীরের প্রতিটি মুসলিমের জিহাদি জাযবা, তামান্নায়ে শাহাদাত এবং ত্যাগ ও কোরবানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পের বর্তমান সংখ্যা, প্রিয় পাঠক, আপনার হাতে তুলে দিতে চাই। হয়ত আমাদের হৃদয় বিগলিত হবে এবং চোখ অশ্রুসিক্ত হবে। হয়ত তাতে আমাদের অসহায়ত্বের উপর আসমানের দয়া হবে এবং আল্লাহ্র পাকড়াও থেকে আমরা বেঁচে যাবো।

কাশ্মীরে আমাদের মযলূম ভাইদের এ ঘোর বিপদের দিনে হৃদয়ের কিছু চাপা আর্তনাদ, আর চোখের কয়েক ফোঁটা অশ্রু ছাড়া আর কী দিতে পারি আমরা!

বুকের আর্তনাদও এখন চেপে রাখতে হবে! চোখের অশ্রুও এখন লুকিয়ে রাখতে হবে! কারণ কাশ্মীর ভারতের ‘আভ্যন্তরীণ সমস্যা’!

হে আল্লাহ্, তুমি সাহায্য করো! হে আল্লাহ, তুমি রক্ষা করো; তুমি উদ্ধার করো; তুমি মুক্ত করো; তুমি ...!

সম্পাদক

 প্রিয় পাঠক, 

 

লেখা শুরু করার আগে এবং পড়া শুরু করার আগে, প্রিয় পাঠক, আসুন আমরা আল্লাহ্র কাছে ইস্তিগফার করি এবং আশ্রয় গ্রহণ করি ঐ আয়াতের নূর-নূরানিয়াতের যা আল্লাহ্ তা‘আলা নাযিল করেছেন তাঁর পাক কালামে

رَبَّــنَــا لاتَـجْـعَـلْـنـا فِــتْــنَــةَ لّـِـلَّــذيـنَ كَــفَـرُوا، وَاغْـفِــرْ لَــنــا، رَبَّــنــا إنَّــكَ أنْـتَ الـعَـزيـزُ الـحَـكـيـم.

  (হে) আমাদের প্রতিপালক, বানিয়েন না আপনি আমাদেরকে ফিতনা ঐ লোকদের জন্য, যারা কুফুরি করেছে, আর মাগফিরাত করুন আপনি আমাদের। (হে) আমাদের প্রতিপালক, নিঃসন্দেহে আপনিই মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়।