রমযান ১৪৩০ হিঃ (১৩)

প্রথম পাতা

প্রথম কথা

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

হে পাঠক, সারা জীবন ‘ছোট-বড়’ অনেক বই তুমি পড়েছো, এবার পড়া বন্ধ করো, অন্তত কিছু সময়ের জন্য। হে লেখক, দিন-রাত ‘সত্য-মিথ্যা’ বহু গল্প তুমি লিখেছো, এবার কলম বন্ধ করো, অন্তত কিছু সময়ের জন্য। হে কবি, সকাল-সন্ধ্যা ‘আকাশ-কুসুম’ অনেক কবিতা তুমি রচনা করেছো, এবার গোটাও তোমার ছন্দের জাল, অন্তত কিছুক্ষণের জন্য। হে শিল্পী! তুলে রাখো তোমার রং-তুলি, হে গানের বুলবুলি, ভুলে যাও তোমার গানের কলি। সবাই সবকিছু ভুলে যাও এবং হৃদয়ের বদ্ধ দুয়ার খুলে দাও। তুমি নির্বাক হও এবং তন্ময় হও। হৃদয়কে গ্রহণ করতে দাও প্রকৃতির পাঠশালা থেকে; পাতার সবুজ থেকে, কৃষ্ণচূড়ার লাল লাল ফুল থেকে, প্রজাপতির রঙ্গিন ডানা থেকে; পাখীর ডাক থেকে, শিশুর হাসি-কান্না থেকে; ময়ুরের পেখম থেকে, হরিণের চাহনি থেকে; শিশিরবিন্দু থেকে, রিমঝিম বৃষ্টি থেকে, কুলকুল ঝর্ণা থেকে; নদীর ঢেউ থেকে, সমুদ্রের গর্জন থেকে; অরণ্যের নির্জনতা থেকে, পর্বতের নৈশব্দ থেকে; আকাশের নীলিমা থেকে, মেঘের আল্পনা থেকে, চাঁদের জোসনা থেকে, তারকার ঝিলমিল থেকে, জোনাকির আলো থেকে। বইয়ের পড়া, কলমের লেখা, রং-তুলির রেখা, কবিতার ছন্দ ও গানের সুর থেকে তোমার সারা জীবনের যত সঞ্চয়, তার চেয়ে অনেক বেশী পাবে তুমি প্রকৃতির প্রতি হৃদয়ের এই তন্ময়তা থেকে।। ভাবে, অনুভবে, কোমলাতায় ও স্নিগ্ধতায় হৃদয় তোমার এমন সমৃদ্ধ হবে যে, মনে হবে, তুমি নিজেই ফুল, তুমি নিজেই ফল, তুমি নিজেই আকাশ, মেঘ, বৃষ্টি, নদী ও ঝর্ণা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে রয়েছে প্রাণের উষ্ণতা ও হৃদয়ের সজীবতা এবং রয়েছে পরম সত্তার মমতা ও করুণার ছায়া। তোমার হৃদয়ে একবার যদি হয় সেই মমতা ও করুণার ছায়াপাত তাহলেই তুমি ধন্য; ধন্য তোমার কলম-কালি ও রং-তুলি; ধন্য তোমার কবিতার ছন্দ ও গানের সুর।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা