রবিউল আওয়াল ১৪৩২হিঃ (১৯)

শেষের পাতা

শেষ কথা

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অতীত যেন করুণ সুরের অপূর্ব এক মূর্ছনা হয়ে আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। তখন ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, চার দশক আগে আমার কিশোর বয়সে।

চারপাশের পৃথিবীটা তখন অন্য রকম ছিলো। এত কোলাহল ছিলো না, এত ইট-পাথর ছিলো না। এত নির্দয়তা, এত নিষ্ঠুরতা ছিলো না এবং হয়ত এত লোভ-লালসাও ছিলো না। অনেক কিছুই ছিলো না।

সবুজ মাঠ ছিলো, বাঁশঝাড় ছিলো, গাছের ছায়া ছিলো, পাখীর গান ছিলো, রাখালের বাঁশীর সুর ছিলো। নিজের মধ্যে নিজে হারিয়ে যাওয়ার মত নির্জনতা ছিলো। কিছু মায়া, কিছু মমতা ছিলো এবং হয়ত কিছুটা সততাও ছিলো। অনেক কিছুই ছিলো।

আমার চারপাশের পৃথিবীটা তখন সত্যি অন্যরকম ছিলো। এখনো বৃষ্টি হয়, কিন্তু কোথায় সেই বৃষ্টির রিমঝিম সুর! এখনো চাঁদ ওঠে, জোসনা ঝরে, কিন্তু কোথায় সেই জোসনার স্ণিগ্ধতা! এখনো বাড়ীর পিছনে সেই দীঘিটা আছে, কিন্তু কোথায় তার সেই স্বচ্ছ জল!

তখন আমার ছোট্ট একটি বাগান ছিলো। সেই বাগানে একটি গোলাবগাছ ছিলো। তাতে প্রথম যে গোলাব ফুটেছিলো তার একটি শুকনো পাপড়ি এখনো আছে আমার কাছে, আমার হারিয়ে যাওয়া অতীতের, আমার ফুরিয়ে যাওয়া কৈশোরের স্মৃতি হয়ে।

সেই পাপড়িটি দেখে মন যেন আমার কেমন করে ওঠে! একজন অক্ষম বৃদ্ধের দুরন্ত কৈশোরের সাক্ষীএই শুকনো পাপড়িটিকে, তখন ইচ্ছে করে, কোন বাগানে রেখে আসি। বাগানের মাটিতে মিশে যাক পাপড়িটি। সেই বাগান তো আর নেই। বাগানের মালীও থাকবে না একদিন। তখন কে বহন করবে এই শুকনো পাপড়ীর ...!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা