জুমাদাল উলা ১৪৩২ হিঃ (২০)

প্রথম পাতা

পাঠক-সংখ্যার সম্পাদকীয়

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 

তুমি কি পুষ্পের ছোট্ট ফুলকলি! তোমার জন্য তাহলে পুষ্পের রেণুমাখা আদর।

তুমি কি পুষ্পের আধ-ফোটা ফুল! তোমার জন্য তাহলে পুষ্পের সুবাসমাখা স্ণেহ।

তুমি কি পুষ্পের সদ্যফোটা ফুল! তোমার জন্য তাহলে শুভকামনা; একদিন তুমি যেন হতে পারো এ মালঞ্চের মালাকর।

তোমাদের সকলকে আমার আন্তরিক সালাম।

এই নাও পুষ্পের পাঠকসংখ্যা। এটি একান্তভাবে তোমাদের। কয়েকটি মাত্র পাতা রেখেছি  আমার জন্য, তাও আসলে তোমাদেরই জন্য।

ইচ্ছে ছিলো, পাঠকসংখ্যাটি সাজিয়ে গুছিয়ে একেবারে ‘ফুলের তোড়া’ বানিয়ে তোমাদের হাতে তুলে দেবো। কিন্তু এদিকে তোমাদের লেখার যে ঢল নেমেছে! সাজানো  গোছানোর আর জায়গা কোথায়! একেবারে ঠেসে ঠেসে সব লেখা দিতে হয়েছে। তারপরো অবস্থা এই যে, কারটা রাখি, কারটা ধরি! শেষে অনেক ভেবে চিন্তে শুধু এ সংখ্যার জন্য কলেবর কিছুটা বাড়ানো হয়েছে, যাতে সবার মুখে হাসি ফোটাতে পারি। তাও বুঝি পারা গেলো না! এখন তোমরা যদি কষ্ট করেও একটু হাসো, ভালো হয়। কারণ ছাপা না হলেও তোমাদের প্রতিটি লেখা আমি পড়েছি। আর খুশির বিষয়, সবারই লেখার উন্নতি হচ্ছে, আলহামদু লিল্লাহ!

তবে এটা হলো পথচলার শুরু। যেতে হবে বহু দূর। লেখার ফাঁকা মাঠে ইসলামের শত্রুরা এখন...। তাদের মোকাবেলার  জন্য এখনই তোমাদের প্রস্ত্ততি নিতে হবে। আজ সন্ধ্যায় যে সূর্যটি অস্ত যাবে, আগামী প্রভাতে তা নতুন কিছু দেখার প্রত্যাশা নিয়ে উদিত হবে। এত আলো দেয় যে সূর্য তার প্রত্যাশা যেন পূর্ণ হয়।

***

লেখা যে শুধু আল্লাহর দান, বহু বারের মত এবারও তা অনুভব করলাম। ইচ্ছে করছে, আল্লাহর দয়া ও করুণার কথা তোমাদের বলি!

সেদিন পুষ্পের পাঠক-সংখ্যার কাজে আমি নিমগ্ন। বড় মেয়ে (উম্মে যামেনাহ) ধীরে ধীরে আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। কম্পিউটারের পর্দায় অনেক্ষণ লেখা দেখলো। তারপর হঠাৎ বলে উঠলো, আববু! এবার ‘জাদ্দু যামেনাহ’ কিছু লিখবে না?

কান্নাভেজা কণ্ঠস্বরে চমকে উঠে ফিরে তাকালাম। মেয়ের চোখে পানি!

আমার তখন কেমন লাগলো, বলতে পারি না, শুধু মনে হলো, ওর চোখের পানি আমার কলমের কালি হয়ে গেলো, আর আকাশ থেকে একটি লেখা ঝিরঝির শিশিরের মত হৃদয়ের সবুজ আঙ্গিনায় ঝরে পড়লো! সেই লেখা মেয়েকেই শুধু কাঁদালো না, আমাকেও কাঁদালো। কাঁদালো এবং সান্তবনা দিলো! কলবের লেখা যখন কলমের কালি হয়ে ঝরে তখন তা অনেক সান্তবনা দান করে।

***

এবার আরেক গল্প। আমার নাতি আফনান বিন সালমান। বয়স তিন পার হয়ে চার পুরো হতে চলেছে। আলিফ, বা, তা চিনতে শরু করেছে। বাংলা না লিখতে পারে, না পড়তে পারে। মা পুষ্পের ‘কচি ও কাঁচা’ পড়ে শোনায়, তাতেই খুশী! সেদিন মা ওকে পড়ে শুনালো খাঁচার মধ্যে আটকে রাখা একটি পাখীর গল্প। লেখাটি শুনে ও বলে, আমারও তো একটি পাখী ছিলো, মুনিয়া পাখী! নানা পাখীটি ছেড়ে দিতে বললো। আমি পাখীটি ছেড়ে দিলাম, আর পাখীটি উড়ে চলে গেলো! সেই পাখীটির কথা আমার লিখতে ইচ্ছে করে। নানা আমার লেখা পেলে কত খুশী হবে! কিন্তু কীভাবে লিখবো? আমি যে লিখতে জানি না!

ওর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। তখন মা বললো, আচ্ছা, তুমি লেখাটা বলো, আমি লিখে দেবো। মায়ের কথা শুনে ওর ছোট্ট মনটা খুশিতে যেন নেচে উঠলো। ‘সত্যি আম্মু, তুমি লিখে দেবে আমার লেখাটা!’

তখনি সে বসে গেলো লেখাটা লিখতে; না, লেখাটা বলতে। লেখা যেমন লেখা যায় তেমনি বলাও যায়। অবাক হচ্ছো কেন! অনেক বড় বড় লেখক নিজেরা লেখেন না, বলে যান, আর কেউ একজন তা লিখে নেয়। বড়দের বেলা যা হয় ছোটদের বেলা কেন  হবে না!  আমি কিন্তু খুব খুশী হয়েছি ছোট্ট নাতি আফনানের লেখাটি পেয়ে। তোমরা যারা ওর মত ছোট্ট মণি, আর লিখতে পারো না, তোমরাও কিন্তু এভাবে লেখা বলতে পারো; তুমি বলবে, কেউ লিখে দেবে,  ব্যস সেটাই হয়ে যাবে তোমার লেখা। সেই লেখাটাই  পাঠিয়ে দাও না, দেখবে, কত আদর করে পুষ্পের পাতায় তুলে দেই সবুজ পাতায় সাজিয়ে। যাক, এবার পড়ো আমার ছোট্ট নাতির ছোট্ট লেখাটি।    ( কচি ও কাঁচা :  আমার মুনিয়া পাখী )

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা