রমযান ১৪৩০ হিঃ (১৩)

টেকনাফ ও তেতুলিয়া (স্বদেশ)

এ লজ্জা আমাদের সবার!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট
ফ্রান্সে হিজাবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বিদ্বেষ আমি বুঝতে পারি; অস্ট্রেলিয়ায় ‘হিজাবিনী’ মুসলিম নারীর লাঞ্ছনাও বুঝতে পারি; এমনকি এ ঘটনা যদি ‘ধর্মনিরপেক্ষ মহান’ ভারতে ঘটে তাহলেও আমি তা বুঝতে পারবো, কিন্তু বাংলাদেশ তো মুসলিম দেশ, পরদা-পুশিদা ও আবরু-লজ্জার দেশ; বাংলাদেশ তো ‘মা-বোনদের’ দেশ। এখানে কাউকে তিরস্কার করতে হলে আমরা বলি, তোমার ঘরে কি মা-বোন নেই! এখানে কেন এমন হবে? এখানে কেন পরদানশীন নারী লাঞ্ছিতা হবে? আমার-তোমার পথে ও মতে গরমিল হতে পারে, কিন্তু আমাদের ঘরে তো মা আছে, বোন আছে! আমি তো ভেবেছিলাম, আমরা এমন জাতি যাদের পৌরুষ আছে; যাদের লড়াই হয় পুরুষে পুরুষে; আমি তো জানতাম, আমার শত্রুর মা-বোনও আমার কাছে নিরাপদ, যেমন নিরাপদ আমার ঘরে আমার মা-বোনের আবরু-ইয্‌যত! আমি কি ভুল ভেবেছিলাম! কারো মধ্যে বিবেক বলে যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে দয়া করে আমাকে বলো, আমি কি ভুল ভেবেছিলাম! ঘটনা এখন সবার সামনে; সুতরাং নতুন করে তা বলার প্রয়োজন নেই। আমি মনে করি, এটা গোটা জাতির লজ্জা, সারা বাংলাদেশের কলংক; তাহলে কেন তারা নীরব, মাত্র সেদিন যারা দেশজুড়ে ভালো হওয়ার শপথ নেওয়ার মহড়া দিলো? আমার জানতে ইচ্ছে করে, ঐ বখাটে তরুণগুলোর মা-বোনেরা কি ওদের তিরস্কার করেছিলো? ঐ পুলিশগুলোর ঘরে কি মা-আছে! বোন ও মেয়ে! ওরা কি বলেছিলো, ছি, কীভাবে করতে পারলে এমন কাজ! জাতির বিবেকের কাছে আমার দরদভরা আবেদন! আর যাই করো, এভাবে কোন নারীকে অপদস্থ করো না। এভাবে পথের মাঝে নারীর হিজাব ছুঁড়ে ফেলো না। এর পরিণাম কী হতে পারে, ভাবতেও গা শিউরে ওঠে! আসমানি আযাব নেমে এলে কিন্তু কেউ বাঁচে না। আর তোমরা যারা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছো, তোমরা আমাদেরই বোন। এ লজ্জা তোমাদের নয়, আমাদের; এ লজ্জা এদেশের সকল নারী-পুরুষের; এ লজ্জা বাংলাদেশের সেই সব মানুষের যারা গর্ব করে একসময় বলতো, ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি!’ তোমরা আমারই বোন, আমারই মেয়ে। তোমাদের লজ্জা ঢেকে দেয়ার জন্য, ছুঁড়ে ফেলা হিজাব তোমাদের গায়ে তুলে দেয়ার জন্য আমি তোমাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারিনি, আমার এ অক্ষমতা, আমার এ ভীরুতা তোমরা ক্ষমা করো। তোমাদের সঙ্গে যা কিছু হয়েছে আল্লাহর দ্বীনের জন্য হয়েছে!
শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা