সফর ১৪৩১ হি:(১৫)

টেকনাফ ও তেতুলিয়া (স্বদেশ)

ডাব ও খেজুর রসে আর্সেনিক

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 ভূগর্ভস্থ পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি এখন দেশের অন্যতম প্রধান জাতীয় সমস্যা। সারা দেশের, বিশেষত উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ টিউবওয়েল আর্সেনিক দূষণের কারণে বিপদ্জনক বলে ঘোষিত হয়েছে। ইতিমধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। বেশ কিছুদিন বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় হৈচৈ হয়েছিলো, যার কারণে জনগণের মধ্যে বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো, তবে কিছুটা জনসচেতনতাও সৃষ্টি হয়েছিলো। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা থেমে যায় এবং এত বড় একটি জাতীয় সমস্যা সম্পূর্ণ চাপা পড়ে যায়।

সম্প্রতি আর্সেনিকসমস্যা আবার ভয়ানক উদ্বেগজনকর্ভাবে মিডিয়ার আলোচনায় উঠে এসেছে। খবরে প্রকাশ, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের মল্লিকপুর গ্রামে ডাবের পানি ও খেজুরের রসে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রস্থ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত গবেষক মীর হোসেন উক্ত এলাকার নলকূপে আর্সেনিক ধরা পড়ায় কৌতূহলবশত পার্শ্ববর্তী গাছের ডাবের পানি ও খেজুরের রস পরীক্ষা করেন। তাতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশী আর্সেনিক পাওয়া যায়।

বলাবাহুল্য যে, বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ নলকূপের পানিতে আর্সেনিক চি‎‎হ্নত করা এবং তা এড়িয়ে চলা সহজ। তাছাড়া নলকূপের পানি আর্সেনিকমুক্ত করা কিছুটা হলেও সম্ভব। কিন্তু ডাবের পানি বা খেজুরের রস পরীক্ষা করা প্রায় অসম্ভব। ফলে জনস্বাস্থ্যের জন্য তা মারাত্মক বিপদের কারণ হতে পারে।

পরিবেশ বিজ্ঞানিগণ ইতিমধ্যে স্থির নিশ্চিত হয়েছেন যে, ফারাক্কাবাঁধই হচ্ছে আর্সেনিক-বিষক্রিয়ার কারণ। কেননা ফারাক্কাবাঁধের প্রতিক্রিয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। ফলে পানিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশী আর্সনিক ছড়িয়ে পড়েছে এবং ধীরে ধীরে আর্সেনিকের বিষ প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনচক্রেও সংক্রমিত হয়ে পড়েছে। ফারাক্কা যে বাংলাদেশের জন্য একটি মরণ ফাঁদ ছাড়া আর কিছু নয় তা এখন সন্দেহাতীত সত্য। প্রশ্ন হলো, আমরা কি এভাবেই ধীরে ধীরে নীরব মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবো!    

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা