সফর ১৪৩১ হি:(১৫)

তোমাদের চিঠি / আমাদের পত্র

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

তুমি রসগোল্লার মত একটি চিঠি পাঠাও, আমি তোমাকে চমচমের মত একটি পত্র দেবো। পুষ্পের পাঠক বন্ধুরা সেই রসগোল্লা আর চমচম খেয়ে বলবে,আহা! কী মজা!

 মঈনুদ্দীন খান তানবীর

শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ

০ সব পত্রিকার সম্পাদক যেখানে বিজ্ঞাপনের পিছনে ছুটছেন তখন আপনার কেন বিজ্ঞাপনের নামে এত নাক সিটকানি!

০০ আমার মনে হয়, সম্পাদকরা বিজ্ঞাপনের পিছনে ছুটছেন না, বিজ্ঞাপনগুলো সম্পাদকদের সামনে দৌড়ুচ্ছে। আর আমার বিষয়ে কথা হলো, আমি কখনো নাক সিটকাই না, নাকটাকে একটু দূরে রাখার চেষ্টা করি। তাতে বাপু তোমার কী ক্ষতি!

০ বিজ্ঞাপনকে আপনি কি মনে করেন পত্রিকার কলংক?

০০ অন্তত শোভা তো নয়!

০ তা চাঁদেরও তো কলংক আছে! চাঁদের মত থাক না পুষ্পেও কিছু কলংক!

০০ কিন্তু ভাই, কলংক যে শুধু চাঁদকেই মানায়!

০ তবে আমার একটি অনুরোধ রাখতেই হবে। পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশ করুন।

০০ নিয়মিতই তো প্রকাশিত হচ্ছে দুই বা তিন বা চারমাস পরপর! হাঁ, মাঝখানের সময়টা আরো কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে।

সুলতান মাহমূদ সিরাজী ফরিদাবাদ মাদরাসা, ঢাকা

০ সম্পাদক ভাইয়া, সমস্যায় আছি শব্দের উচ্চারণ লইয়া, তাই পত্র লিখলাম সমাধান চাইয়া। পত্রটা পড়ুন একটু মনযোগ দিইয়া, তারপর জবাব লিখুন .. নাহ আর মিলাতে পারছি না!

০০ আমি মিলিয়ে দিই! ‘জবাব লিখুন ছন্দ মিলাইয়া’।

০ ‘বিদ্বেষ’-এর উচ্চারণ যদি হয় ‘বিদ্দেশ’ তাহলে ‘উদ্বেগ’-এর উচ্চারণ কেন ‘উদ্বেগ’?

০মিথ্যা বলবো না, সত্য বলতে শরমাইবো না, কারণটা আমি জানি না। কী আর করা যায়, না জেনেও বোধ হয় লেখা যায়! পানিতে পিপাসা দূর হয়, যদিও জানি না, পানি কীভাবে তৈরী হয়।

আমীরুল ইসলাম 

দড়াটানা মাদরাসা, যশোর

০ আপনাকে আমার আর ভালো লাগছে না!

০০ আচ্ছা, এত দিন তাহলে ভালো লেগেছে! আশ্চর্য তো!

০ যদি প্রশ্ন করেন, কেন? তাহলে উত্তর হলো ...।

০০ কিন্তু আমি প্রশ্ন করছি না!

তোমার চিঠিটা এত গরম ছিলো যে, রীতিমত ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে পড়তে হয়েছে, আর তাতে না, প্রায় সবটুকু লেখা মুছে গেছে! এককাজ করো, চিঠিটা আবার লিখে পাঠাও।

ওমর ফারূক

হাজিপাড়া মাদরাসা, এনগঞ্জ

০ সম্পাদক ভাইয়া, দেখো তোমার শানে কী সুন্দর একটি কবিতা নকল করেছি!

০০ হায় কপাল, সারা জীবনে অধমের শানে একটামাত্র কবিতা, তাও কিনা নকল! মিয়াঁ, নকল না হয় করেছো, কিন্তু বলতে কী দোষ ছিলো যে, ওটা ‘একশভাগ আসল’!

আরিফ রহমান

তা‘বীরুল আফকার, মোমেনশাহী

০ আচ্ছা সম্পাদক ভাইয়া! আমার ভাগ্যটা পরীক্ষা করে দেখুন তো, আমি কি লেখক হতে পারবো! অন্তত কোন লেখকের তল্পিবাহক হওয়া কি আমার ভাগ্যে আছে!

০০ শোন পাঠক ভাইয়া! ভাগ্য হলো এক অচিন পাখী, যার আছে দু’টি ডানা। সেই ডানায় ভর করে সে উড়ে আসে মানুষের কাছে। একটি ডানা হলো ‘সাধনা’, দ্বিতীয়টি হলো ‘প্রার্থনা’। এখন তুমিই পরীক্ষা করে দেখো, তোমার ভাগ্যের ডানাদু’টি ছহি-সালামত আছে কি না?

ভালো কথা, তুমি কিন্তু নিজের অজান্তেই একটি সত্য কথা বলে ফেলেছো, ‘আদর্শ লেখক হওয়ার আদর্শ উপায় হলো কোন আদর্শ লেখকের তল্পিবাহক হওয়া।’

আমাতুর-রহমান বিনতে সিদ্দীকুর-রহমান

লক্ষ্মীপুরহাট, নাটোর

০ ...আমার একটা কথা শোনো

০০ মাত্র একটা কথা! আমি যে লক্ষ্মীপুরের লক্ষ্মী মেয়ের দশটা কথা শুনতে প্রস্ত্তত!

০০ আমি তোমার উপদেশ মত নিয়মিত রোযনামচা লিখি না।

০০ তাই তো! আমার কলমে এখন আগের মত লেখা আসে না কেন! রহস্যটা এখন বোঝা গেলো, আমার লক্ষ্মী মেয়ে যে রোযনামচা লেখে না!

তামার ভাইয়ার লেখা পেয়েছি। লেখার চেহারা-সুরত ও শরীর-স্বাস্থ্য আরো সুঠাম ও সুদর্শন হওয়া দরকার।

মুহম্মদ এনামুল হক জিহাদ

মাদরাসা ছাওতুল হেরা, সাতপাই, নেত্রকোণা

০ সম্পাদক ভাইয়া! আমি পুষ্পের নতুন পাঠক ও লেখক। প্রথম লেখাটা লিখতে গিয়ে কলমটা কত বার যে ‘হোচট’ খেয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। জানতে ইচ্ছে করে, জীবনের প্রথম লেখাটা লিখতে গিয়ে আপনার কলমও কি ‘হোচট’ খেয়েছিলো?

আমাকে একটু ‘শান্তনা’ দেবেন?

০০ কলম ‘হোচট’ খায় চন্দ্র- বিন্দুর অভাবে। ভাগ্য ভালো, শৈশবে আমার কাছে পর্যাপ্ত চন্দ্রবিন্দু ছিলো। তা দেবো নাকি তোমাকে দু'টো চন্দ্রবিন্দু?

আর ‘শান্তনা’! দুঃখিত, ওটা যে আমার কাছে নেই!

শাফীকুল মাহমূদ

হাটহাযারি মাদরাসা

০ সম্পাদক ভাইয়া, জরুরি বিভাগে আছেন তো! ‘এ্যাম্বুলেন্স’ এসেছে।

০ তা রোগীটা কে, তুমি? যে রোগী এমন বহাল তবিয়তে কথা বলে সে জরুরি বিভাগে কেন?

০ আপনার নামের বানান নিয়ে সমস্যায় আছি, মিছবাহ, মেছবাহ, মিসবাহ, মেসবাহ, কোনটা ঠিক, আপনি দেখি সব- রকমই লেখেন, এটা কি ঠিক?

০০ এটাই বুঝি তোমার জরুরি রোগ! বানান যাই হোক, নামের পিছনের মানুষটা যিন্দা-সালামত থাকলেই তো হলো!

০ আমার আববা নাম রেখেছেন শফীকুল ইসলাম, কিন্তু আমি আমার নাম লিখি, শফীকুল মাহমূদ...

০০ বাবার দেয়া নাম পছন্দ নয় বুঝি! তাহলে তো তুমি খুব কামেল পুত্র হে! নাম থাক, তুমি কিছু ‘কাম’ করার ফিকির করো। কাম যত সুন্দর হবে নাম তত উজ্জ্বল হবে।

পুষ্প সম্পর্কে তোমার অভিব্যক্তি ভালো লেগেছে।

রুমাইয়া, তাসফিয়া

রামগতি রোড, লক্ষ্মীপুর

০ ... আপনাকে জাযাকাল্লাহ আমাদেরকে পুষ্পের মত একটি অসাধারণ পত্রিকা উপহার দেয়ার জন্য।

০০ আমি তো চেয়েছিলাম একটি সাধারণ পত্রিকা উপহার দিতে। সেটা অসাধারণ হলো কীভাবে? ও বুঝেছি, তোমার ভালোবাসার গুণে!

০ পুষ্প সত্যি পুষ্প!

০০ তুমিও সত্যি তুমি!

০ আমি চাই বড় লেখক হতে

০০ লেখক তুমি কখনই হতে পারবে না, চেষ্টা করো একজন বড় লেখিকা হতে।

০ সে জন্য আমার প্রয়োজন পুষ্পের সহযোগিতা। পুষ্পের সহযোগিতা পাবো তো?

০০ তুমি পুষ্পের সহযোগিতা নেবে তো!

ইবরাহীম খলীল সাঈদী

সুলতানিয়া মাদরাসা, লালপোল, হাজির বাজার, ফেনী

০ ...কখনো তোমাকে না দেখেও সেদিন স্বপ্নে প্রায় দেখে ফেলেছিলাম। আমি ছিলাম তোমার পেছনে কিছুটা দূরে। একজন বললো, ঐ যে তোমার মাহবূব! শুনে আমি দিলাম দৌড়। তোমার উজ্জ্বল মুখটি দেখার আকাঙ্ক্ষায়, কিন্তু হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলাম। তখন ঘুমটা গেলো ভেঙ্গে, স্বপ্নটাও গেলো হারিয়ে। কী করি বলো তো!

০০ ভাগ্য ভালো যে, হোঁচট খেয়েছিলে! নইলে তো পরে স্বপ্নের মধ্যেই আরো বড় হোঁচট খেতে!

কী আর করবে! বসে বসে বানান ঠিক করো; তোমার ‘তাবীলুন’ চিঠিতে বানান ভুল প্রায় দু’হালি। এমনকি ভুল লিখতেও ‘ভূল’ লিখেছো। তোমার ‘দিসেহারা’ দেখে আমিও দিশেহারা!

আব্দুল্লাহ মাসূম

হবিগঞ্জ, সিলেট

০০ তোমার চিঠি পেয়েছি। চিঠিটা পুরোটাই তুলে দেবো, না আংশিক, আংশিক হলে শুরুর অংশ, না শেষাংশ, না মধ্য-অংশ, বুঝে উঠতে পারছি না। তুমি যদি একটু বলে দিতে, কী করবো!

উত্তর দিতে গিয়ে দেখি কী,  তোমার চিঠিটা গোল্লা তো কোনক্রমে হয়েছে, কিন্তু রসের অভাবে রসোগোল্লা হয়নি, তাই চমচম আর পাঠানো হলো না।

রাবেয়া বিনতে ইদ্রীস

দারুল উলূম মাদরাসা, মিরপুর

০ সম্পাদক ভাইয়া! কষ্ট করে আমার প্রশ্নের উত্তর দিলে খুব খুশী হবো। প্রশ্ন হলো- ও, এবং, তবে, কিন্তু, অতএব, সুতরাং, এগুলোর মধে পার্থক্য কী?

০০ বড় বড় তিনটি পার্থক্য আছে। প্রথম পার্থক্যটি আমি জানি না, দ্বিতীয় পার্থক্যটি তুমি জানো না, আর তৃতীয় পাথক্যটি আমরা উভয়ে জানি না।

নূরুল কবীর আনওয়ার

বানিয়ার চর মাদরাসা, চকোরিয়া, কক্সবাজার

০ জানো, তোমাকে না, পেয়ে আমার ভাবনার গতি অনেক বেড়ে গেছে!

০০ জানতাম না, তবে মনে হয়, একটু ব্রেক লাগানোর দরকার আছে।

০ জানো, কী আমি ভাবি?

০০ জানি না, তবে আন্দায করি, তুমি ভাবো, ‘কবে আসবে আমার হাতে আলাদীনের জাদুর চেরাগ!’

০ জানো, আমি কী চাই?

০০ জানি না, তবে আন্দায করি, তুমি চাও, চেরাগের দৈত্যটা যেন তোমাকে এনে দেয় একটা জাদুর কলম। তুমি শুধু ইচ্ছে করবে, আর কলমটা লিখতে থাকবে।

মুসাম্মাত মারজানা

জান্নাতুন-নেসা, বালিকা মাদরাসা, বরিশাল

০ সম্পাদক ভাইয়া, কিয়ামত নাকি খুব কাছে এসে গেছে, আমার না, বড় ভয় করে। আমি এখন কী করবে। সম্পাদক ভাইয়া!

০ ভয় করো না ‘বাহ্না’! যত দিন তুমি আল্লাহ, আল্লাহ করবে কিয়ামত আসবে না!

(  পুষ্পের বন্ধুরা! চিঠিপত্র হচ্ছে সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গন। এ অঙ্গনে তোমাদের সাগতম। সুন্দর সুন্দর চিঠি পাঠিয়ে এ বিভাগে অংশগ্রহণ করো। তোমাদের চিঠিগুলো  দীর্ঘ  হলে ভালো হয়। তোমাদের মনের কথাগুলো বিস্তারিতভাবে লেখো। কামনা করি, তোমাদের কলম গতিশীল হয়ে উঠুক। )

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা