যীকা‘দা ১৪৩৯ হিঃ (৩/৫)

বিজ্ঞান বিচিত্রা

বিজ্ঞানসাধক আব্দুল্লাহ আলমুতি

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

এদেশে বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃত ছিলেন আব্দুল্লাহ আলমুতি। তাঁর প্রধান অবদান হলো, বিজ্ঞানের মত কঠিন ও জটিল বিষয়কে তিনি সাধারণ মানুষের বোধগম্য ভাষায় সহজ সরলভাবে উপস্থাপন করেছেন। ফলে বিজ্ঞানচর্চার প্রতি আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে প্রবল আগ্রহ তৈরী হয়েছে।

১৯৩০-এর পয়লা জানুয়ারী সিরাজগঞ্জের ফুলবাড়ী গ্রামে তার জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে বিএসসি-এর পর এমএসসি করেন ১৯৫৩ সালে। ১৯৬০ সালে যুুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ করেন, আর ৬২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

সারা জীবন তিনি বিজ্ঞান সাধনায় নিয়োজিত ছিলেন। সাধারণ মানুষের কাছে, বিশেষ করে শিশু ও কিশোরদের কাছে বিজ্ঞানকে আনন্দদায়ক বিষয়-রূপে উপস্থাপনের জন্য নিরলস চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। বিজ্ঞানের মত কঠিন ও জটিল বিষয়কে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা খুবই কঠিন একটি কাজ। এই কঠিন কাজটি তিনি অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। বলা যায়, এক্ষেত্রে তিনি শতভাগ সফল হয়েছেন। বিজ্ঞান-সমাজ এ বিষয়ে তাঁর সৃজন -শীল প্রতিভার কথা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে।

কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি বিজ্ঞানবিষয়ক লেখাচর্চা শুরু করেন। যখন যে কর্মক্ষেত্রেই ছিলেন, তার কলম অভীষ্ট লক্ষ্যের পথে সচল ছিলো।

মূলত তাঁরই প্রচেষ্টায় ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ পালিত হয়ে আসছে।

১৯৫৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় শিশু-কিশোরদের জন্য তাঁর লেখা ‘এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে’। এর পর একের পর প্রকাশিত হতে থাকে, ‘অবাক পৃথিবী, রহস্যের শেষ নেই, তারার দেশের হাতছানি, মহাকাশে কী ঘটছে?!

তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবনে বহু পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন, তবে পুরস্কারলিপ্সা তার মধ্যে মোটেও ছিলো না। বিজ্ঞানের সাধনা তিনি করেছেন শুধু নিজের প্রাণের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য। (১৯৯৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।)

তাঁর বিজ্ঞানচর্চার জীবনে সবচে’ বড় ‘ট্রাজেডি’ এই যে, সৃষ্টির রহস্যলোকে বারবার তিনি উঁকি দিয়েছেন, কিন্তু সৃষ্টি ও ¯্রষ্টার মধ্যে যে সেতুবন্ধন সে সম্পর্কে খুব একটা ভাবতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। অন্তত পাঠকের সামনে সেটা তিনি তুলে ধরেননি।

আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন এবং পুরস্কৃত করুন, আমীন)

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা