মুহররম.১৪৪০হিঃ (৩/৬)

কিশোর পাতা

তোমাদেরজন্যলেখা

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

যে, চাঁদের জোসনা একদিন আমার প্রিয়তমের মুখম-লের ‘স্পর্শ’ লাভ করেছিলো!নির্জন রাতে, জোসনার ¯গ্ধ আলোতে হৃদয় যখন বিগলিত হয়, সৃষ্টিকে অতিক্রম করে ¯্রষ্টার প্রতি; হৃদয় যখন তৃষ্ণার্ত হয় করুণার সাগরতীরে দাঁড়িয়ে তখন পরম একটি আকুতি অনুভব করি চাঁদকে একান্ত করে কাছে পেতে; চাঁদের ¯গ্ধ জোসনায় ¯াত হয়ে চাঁদকে কিছু বলতে এবং চাঁদের কিছু কথা শুনতে।জোসনাধোয়া রাতের নির্জনতায় চাঁদের সান্নিধ্যে হৃদয় যখন পরম সত্তার প্রতি সমর্পিত হয় তখন অনুভক করি, আমার ভিতরের আমি যেন চাঁদকে বলে, ‘তোমার প্রতি, তোমার জোসনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ হে চাঁদ! তুমি আমাকে শিক্ষা দিয়েছো, আচরণে উচ্চারণে ¯গ্ধ কোমল হতে, তোমার জোসনার মত! তুমি আমাকে শিক্ষা দিয়েছো সবার মাঝে জ্ঞানের, প্রজ্ঞার এবং চিন্তা ও চেতনার ¯গ্ধতা বিতরণ করতে, তুমি যেমন বিতরণ করো সবার মাঝে তোমার শিশির-কোমল জোসনা।তখন আমার ভিতরের আমি যেন শুনতে পায় চাঁদের কথা। চাঁদ যেন বলে আমার ভিতরের আমিকে, ‘তুমি আছো বলেই আমি সার্থক। তুমি গ্রহণ করছো বলেই আমার জোসনা ধন্য। তবে কামনা করি, এই সব আবরণ সরিয়ে আরো ঊর্ধ্বের সত্যকে, পরম সত্যকে তুমি অনুধাবন করো। এ আলো দিয়ে, এ জোসনা দিয়ে সেই পরম আলোক-বিন্দুর দিকেই আমি তোমাকে পথ দেখাতে চাঁ  দে  র  প্র  তি  আ  মা  রভালোবাসা!চাঁদকে আমি ভালোবাসি। চাঁদের প্রতি আমার ভালোবাসা শৈশবের অবুঝ সময় থেকে। সে ভালোবাসা আজো অব্যাহত রয়েছে। কারণ এ ভালোবাসার সৃষ্টি হৃদয় ও আত্মার আকুতি থেকে; সৌন্দর্যের মোহ থেকে নয়। হাঁ, চাঁদের প্রতি আমার ভালোবাসা তার সৌন্দর্যের জন্য নয় এবং নয় তার ¯গ্ধ জোসনার জন্য। চাঁদের প্রতি আমার ভালোবাসার কারণ শৈশবে কী ছিলো, মনে নেই; এখন তো কারণ এই যে, চাঁদ আমার আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন এবং চাঁদ একথার প্রমাণ যে, আমাদের আল্লাহকে একদিন আমরা দেখতে পাবো, যেমন দেখতে পাই পূর্ণিমার এই চাঁদকে! চাঁদের প্রতি আমার ভালোবাসার কারণ এই চাই। একটি পরম অনন্দের অনুভূতি আমাকে আপ্লুত করে যখন পূর্ণিমার রাতে দূর দিগন্তের দিকে পথ চলি। সঙ্গে যখন কেউ থাকে না। পৃথিবীতে আমি, আকাশে চাঁদ! চাঁদের সঙ্গ এত নিবিড়ভাবে অনুভব করি যে, পৃথিবীর সবকিছু মনে হয় দূরের, চাঁদকে মনে হয় কত কাছের! চাঁদ যেন পৃথিবীতে নেমে এসে আমার সঙ্গে পথ চলে। দূর দিগন্তে গিয়েও দেখি, আকাশের পথ পাড়ি দিয়ে চাঁদ আমার সঙ্গে এসেছে! তখনকার পুলক-অনুভূতি শব্দের আবরণে প্রকাশ করা যায় না; হৃদয়ের নিভৃতে শুধু তা লালন করা যায়। তখন অন্য একটি আকুতি, আরোগভীর, নিবিড়; আরো অন্তর-স্পর্শী একটি আকুতি অনুভব করি। ঊর্ধ্বজগতের পরম সত্তার সমীপে তখন এই আকুতি নিবেদন করি, এভাবে, আরো অন্তরঙ্গরূপে জীবনে মরণে, মাটির উপরে এবং মাটির নীচে তোমার সঙ্গ কামনা করি হে প্রিয়! হে পরম!! *


চাঁদ এত সুন্দর কেন?!চাঁদ তো এমনিতেই সুন্দর, তারপর যখন আকাশে ভাসমান মেঘের ফাঁকে ফাঁকে চাঁদের হাসি দেখা যায়, আবার দেখতে না দেখতে তা মেঘের আড়ালে চলে যায় তখন চাঁদকে মনে হয় আরো সুন্দর। এটাকে কবিরা বলেন, মেঘের সঙ্গে চাঁদের লুকোচুরি। চাঁদ দেখে কবির মনে কবিতা জন্ম নেয়, চাঁদ দেখে দূর দেশের প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে। চাঁদ দেখে মায়েরা কোলের শিশুকে বলে, তুমি আমার চাঁদ, তুমি আমার চাঁদের কণা!চাঁদের জোসনায় পৃথিবী যখন হেসে ওঠে, মানুষ তখন মুগ্ধ হয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে, পৃথিবীর সবকিছু যদি হতো চাঁদের মত সুন্দর। চাঁদকে যেমন ভালোবাসে, তেমনি যদি ভালোবাসতো মানুষ মানুষকে!চাঁদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েই তো কবি লিখেছেন, ‘হে চাঁদ, এত সুন্দর কেন তুমি!’আসল সমস্যা তো এটা নয় যে, চাঁদ কেন এত সুন্দর?! আসল সমস্যা হলো, আমরা কেন চাঁদের মত সুন্দর নই। চাঁদ যদি কবি-হৃদয়ে আত্মজিজ্ঞাসা সৃষ্টি করতে পারে তাহলেই সার্থক হবে চাঁদের এ গ্ধ পবিত্র সৌন্দর্য। কবি চাঁদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবিতা লেখেন, চাঁদের মত সুন্দর হওয়ার স্বপ্ন দেখেন না, এটাই মানবতার দুঃখ।প্রিয় ইহতিশামুল হাসান সাইফ!তোমাকে জাযাকাল্লাহ! তোমার লেখাটিকে ‘কাঁচা উপকরণ’রূপে ব্যবহার করে দেখো আমার উপরের লেখাটি তৈরী হয়েছে। তোমার লেখাটি না হলে আমার কলম থেকে এ লেখা সৃষ্টি হতে না। আমার কলমের প্রতি তোমার কলমের এটা বড় অবদান, এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। তুমি এ সংখ্যার অতিথিসম্পাদক।(তোমার লেখটির অংশবিশেষ নিজের হস্তাক্ষরে দেখো, আর বাকিটা নীল দাগের ভিতরে।)সামনে সুযোগ হলে তোমার লেখা সম্পর্কে পর্যালোচনা করার ইচ্ছে রয়েছে। আপাতত লাল অংশটি দেখো। এর কী কোন প্রয়োজন ছিলো! তুমি পেরেছো, ব্যস, শোকর আদায় করো। অন্যদের ছোট করার কী প্রয়োজন বলো! এটা সারা জীবন মনে রাখতে হবে। আর এমন একটা সুন্দর ভাবপূর্ণ লেখার মধ্যে ‘ভোঁ দৌড়’! তদুপরি ‘বন্ধুকে ফাঁকি দেয়া’ এটা বলার কী দরকার?! তার চেয়ে বন্ধুর প্রসঙ্গটাই থাক না!!এক রাতে একাকি বেরিয়ে পড়লাম বন্ধুটাকে ফাঁকি দিয়ে; নির্জনতায় কাটাবো কিছু সময়। তাই তো আদর করে আঁজলা ভরে, পরশ দেবে বেশী করে।আনন্দে ছুটে বেড়াচ্ছি এদিক সেদিক। কিছু দূর গিয়ে থমকে দাঁড়ালাম। এই! কি দেখছি!? চাঁদ আমার সাথে চলছে। আমার কদমে কদম বাড়াচ্ছে। কদমের মোড় ফিরিয়ে দিলাম। দেখি এখন কী করে সে? না, সে আমার সাথে চলছেই! আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। আমি সফল। আমি চাঁদকে আপন করে নিতে পেরেছি। তাই সে আমার সঙ্গ ছাড়ছে না। আর কেউ কি পেরেছে তাকে আপন করে নিতে।না, কীভাবে সে তো আর কারো সাথে চলছে না।হে আল্লাহ! তোমাকেও যেন এভাবে আপন করে, তোমার স্মরণ নিয়ে চলতে পারি। আর শামিল যেন হতে পারি সেই দলে যারা চাঁদ থেকে চিনতে পেরেছে তোমাকে, আমীন।



শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা