মুহাররম ১৪৪৫ হিঃ

কিশোর পাতা

তোমাকে...

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

তোমাকে আজ স্পষ্ট করে কিছু কথা বলি। আশা করি, অন্তত এটুকু যোগ্যতা তুমি অর্জন করেছো; স্পষ্ট কথা উদার চিত্তে শোনবার এবং গ্রহণ করবার যোগ্যতা। এমনকি তুমি যদি শুনতে না চাও, শোনবার যোগ্যতা থেকে তুমি যদি বঞ্চিত হও তবু আমার মনের তিক্ত কথাগুলো আজ আমি বলবো। তুমি যদি না হও, মহাকাল হবে আমার শ্রোতা। মহাকালের কাছে আমি আমার কষ্টের কথাগুলো গচ্ছিত রেখে তবে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবো। হয়ত তখন মহাকালের কাছে তোমার নামে একটা নালিশ আমি রেখো যাবো!

কী নালিশ, জানতে চাইবে না! আচ্ছা, বলো তো, এতটা নির্লিপ্ত হতে পারো কীভাবে তুমি! আমার বিষয়ে না হয় হলে নির্লিপ্ত, নিস্পৃহ, কিন্তু তোমার নিজের জীবন সম্পর্কে! আমি তো আসলে আমার জন্য তোমাকে চাইনি! আমি তো তোমাকে চেয়েছি তোমারই কল্যাণের জন্য! তোমার উজ্জ্বল, সমুজ্জ্বল ও প্রোজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য। কিন্তু বেদনায় বিমূঢ় হয়ে দেখি, আমাকে দেখতে হয়, এখানেও তুমি মর্মান্তিকরূপে নির্লিপ্ত। যেন জীবনটা শুধু রঙ্গিন ডানায় ভর করে লক্ষ্যহীন ভাবে উড়ে যাওয়ার জন্য, যেমন বাগান থেকে শুকনো পাতাকে উড়িয়ে তাড়িয়ে নিয়ে যায় বাতাস। তুমি বুঝতে পারো না, জীবন একটু একটু করে ফুরিয়ে যাচ্ছে, মোমের মত, কিংবা বরফের মত। মোম তো গলে গলে নিঃশেষ হওয়ার আগে আলো দেয়! বরফ তো গলে গলে বিলীন হওয়ার আগে কিছুটা শীতলতা দেয়! তোমার জীবন এই যে ফুরিয়ে যাচ্ছে, একটু আলো কি তোমার চারপাশে ছড়িয়ে যাবে না! প্রশান্তির একটু শীতল প্রলেপ কি দিয়ে যাবে না, কেউ যদি তোমার দুয়ারে ভিখারী হয়ে দাঁড়ায় একটু শান্তি ও প্রশান্তির জন্য, একটু তৃপ্তি ও প্রাপ্তির আশায়!

তোমার যে বয়স, তোমার যে স্বাভাবিক পক্বতা ও পরিপক্বতা, তাতে তো তোমার জানার কথা,  নির্লিপ্ত মানুষকে কেউ ভালোবাসে না, হয়ত করুণা করে। নিস্পৃহ মানুষকে কেউ শ্রদ্ধা করে না, হয়ত সহ্য করে। আমি যত স্পষ্ট করে বলছি, তোমার প্রতি কল্যাণ কামনার আকুতি নিয়ে, আর কেউ বলবে না। হয়ত নীরবে করুণা করবে, বা সহ্য করে যাবে। আমার স্পষ্ট উচ্চারণকে তাই আশা করি তুমি হৃদয় দিয়ে হৃদয়ের জন্য গ্রহণ করবে। 

আচ্ছা, নালিশের কথা থাক।আমার স্পষ্ট কথাটা, আমার তিক্ত কথাটা এবার শোনো। অনেক স্বপ্নভঙ্গের বেদনার পর তুমি এসেছিলে আমার জীবনে। আর আমিও কী দুর্ভাগা, তোমাকে কাছে পেয়েই, তুমি কাছের কি না না জেনেই তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হলো আমার এবং ...!

তুমি হে পাখী, হে বলাকা, আমার স্বপ্নের শেষ অবলম্বন। সন্ধ্যার এবং ভোরের পাখীর মত একটু না হয় কলরব করো জীবনের অঙ্গনে! শুভ্র বলাকার মত একবার না হয় ডানা মেলে উড়ে এসো আমার স্বপ্নের প্রাঙ্গণে! আমি নতুন করে আশার প্রাণরসে উজ্জীবিত হতে চাই এবং তোমাকেই অবলম্বন করে। কারণ, আলোর একটা ঝিলিক আমি দেখতে পেয়েছি তোমার চোখের তারায় সেই প্রথম দিন, প্রথম লগ্নে। একটু জাগো, একটু ওঠো, ঐ শোন মহাকাল ডেকে যায় তোমাকে!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা