সফর ১৪৩১ হি:(১৫)

তোমাদের পাতা

হে আলোকবিন্দু!

লিখেছেনঃ হাফীদা শামস

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 

দাঁড়িয়ে ছিলাম রাতের নির্জনতার মাঝে। আকাশে তখন চাঁদ ছিলো না, মেঘ ছিলো না, ছিলো মিটিমিটি তারা। রাতের অন্ধকারটুকুর প্রয়োজন ছিলো। দিনের আলোতে কি দেখা যায় তারার আলো!

পৃথিবীর মানুষগুলো ঘুমিয়ে পড়েছিলো, সবকিছু নিঝুম ছিলো; তবু ইচ্ছে হয়নি নিঝুম প্রকৃতির সান্নিধ্য থেকে সরে আসতে। দাঁড়িয়ে ছিলাম উন্মুক্ত আকাশের নীচে, তাকিয়ে ছিলাম দূরের তারাগুলোর দিকে।

জীবনের সুখ যেন ঐ তারাগুলোর মত। অাঁধার ছাড়া ধরা দেয় না, আবার সবটুকু অাঁধার দূর করে না। জীবন কি রাতের আকাশ! হয়ত। মিলনের আনন্দ, বিচেছদের বেদনা, দু’টোই তো জীবনের সৌন্দর্য! আকাশকে এবং আকাশের তারাগুলোকে এজন্যই এত আপন মনে হয়।

সেদিন ছিলো না, আজও আকাশে চাঁদ নেই; তবু ভাবলাম, আমার ছোট্ট বাগানটিতে বসে তারাভরা আকাশ দেখবো। কিন্তু আজ তারাগুলোও নেই। কারণ আকাশে মেঘ জমেছে। আকাশের বুকে আজ এত মেঘ কেন? মেঘ কি আকাশের মনের কষ্ট! কত মেঘ হলে বৃষ্টি হয়!             

বাগানে একা বসে আছি অন্ধকারের চাদর মুড়ি দিয়ে। আমি তখন বড় নিঃসঙ্গ। যেন পড়ে আছি পৃথিবীর এক কোণে।

রাতের বাগানে সবুজের সৌন্দর্য দেখা যায় না; একটি ফুলও যদি থাকতো! একটু সুবাস আসতো! কোথায় বাগানের বসন্ত; বসন্তের বাহার! কোথায় চাঁদের যৌবন; যৌবনের জোয়ার!

হারিয়ে গেছে আমার আকাশ থেকে চাঁদ-তারা? তাতে কী! ঝরে গেছে আমার জীবন-উদ্যান থেকে ফুল এবং ফুলের সবকলি? তাতে কী! আমার দৃষ্টি তো এখন আরো দূরে, অনেক দূরে! যেখানে আছে জীবন এবং জীবনের আলো! যেখানে আছে আনন্দ-বেদনার মিশ্রসৌন্দর্য! যেখানে আছে জীবনের সুন্দর পরিণতি!

হঠাৎ একবিন্দু আলো যেন নেমে আসছে আকাশ থেকে। আমি জানি, এ আলোকবিন্দু ‘আকাশের’ এবং তা আমারই জন্য। আমি বিশ্বাস করি, ঐ একবিন্দু আলোতেই আছে আমার...!

হে আলোকবিন্দু! আমার অশ্রুভেজা দৃষ্টির শুভকামনা শুধু তোমার জন্য। তুমি নেমে আসো নিরাপদে আমার কোলে! আমি তোমার, শুধু তোমার! 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা