আল কুদসসংখ্যা (৩/২)

তোমাদের পাতা

তাকে / সবাইকে

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

তাঁকে

অনুতপ্ত হৃদয়ে আজ আমাদের স্বীকার করতে হবে, তাকে ভুলে গিয়ে, তাকে অবহেলা করে আমরা অপরাধ করেছি। তার আজকের যিল্লতি ও দুর্গতির জন্য আমরাই দায়ী, আমরাই অপরাধী। এর প্রায়শ্চিত্ত আমাদেরই করতে হবে, শুধু কান্না দিয়ে, শুধু অশ্রু দিয়ে নয়, প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে, প্রয়োজনে জানের নাযরানা পেশ করে।

আমি তাকে উদ্ধার করবো দুশমনের কয়েদখানা থেকে, করবোই। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনবো আমাদের সাজানো বাগানে। আমরা তাকে বরণ করবো স্বমর্যাদায়,

স্বমহিমায়। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, আর তাকে অবহেলা করবো না। তাকে রক্ষার মহাদায়িত্বে আর কখনো ভুল করবো না।

আমরা তাকে সাজিয়ে রাখবো আমাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় আমাদের প্রিয়তমের ‘আকাশযাত্রা’র স্মৃতিরূপে।

 হে আল্লাহ, আমাদের কান্না ও আর্তনাদ কবুল করো। আমাদের চোখের পানি ও মুনাজাত কবুল করো। আমাদের বুকের রক্ত জানের নাযরানা তুমি কবুল করো। তুমি তাকে উদ্ধার করো হে আল্লাহ!

একদিন তাকে আমি পেয়েছিলাম এখানে এই পথের ধারে। অবহেলায় পড়েছিলো পথের ধুলোর মধ্যে। পথচারী কেউ ফিরে তাকিয়েছে নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে, কেউ এত বেশী ব্যস্ততার মধ্যে ছিলো যে, ফিরে তাকাবারও অবসর হয়নি। পথের ধুলায় সে ছিলো নিজের চিন্তায় বিভোর হয়ে। তারও যেন অবসর ছিলো কারো অবহেলা গায়ে মাখার!

পথের ধুলায় এভাবে অবহেলায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে কোথায় যেন টান পড়েছিলো আমার ভিতরে! আমারও ব্যস্ততা ছিলো; আমারও পথচলার তাড়া ছিলো। কিন্তু পথের দাবী ভুলে আমি থমকে দাঁড়ালাম তাকে ধুলিশয্যায় এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখে। হৃদয়ের কিছু একটা বন্ধন এমনও থাকে, যাকে মানুষ সারা জীবন ভুলে থাকে। সেই বন্ধন হঠাৎ কোন এক উপলক্ষে জেগে ওঠে! পুরো অস্তিত্বকে তখন নাড়া দিয়ে যায়। সেদিন আমার জীবনেও হয়ত তেমন কিছু হয়েছিলো!

সেও তাকালো চোখ তুলে আমার দিকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা এত মানুষ গেলো তার পাশ দিয়ে। কারো দিকে তাকায়নি সে। আমার দিকে তাকালো। তারো কি হৃদয়ের কোন তারে টান পড়েছিলো সেদিন?

এবং আরো অবাক হলাম যখন প্রায় মিনতিঝরা কণ্ঠে বললো আমাকে, হে পথিক, জানি না কে তুমি! পথের শেষে কোথায় তোমার ঠিকানা!! তবু আমি যেতে চাই তোমার সঙ্গে। তুলে নাও আমাকে পথের এই ধুলিশয্যা থেকে! তুমি যদি তুলে না নাও হয়ত কেউ নেবে। পথের ধুলোর মধ্যেই হয়ত পড়ে থাকবো আমি জীবনের বাকি দিনগুলো!! তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু আমি যেতে চাই তোমার সঙ্গে! হয়ত অদৃশ্যের কোন বন্ধনের দাবী আছে তোমার প্রতি আমার!!

বুঝতে পারিনি তার রহস্যঘেরা কথার কোন মর্ম। শুধু অবাক হয়ে ভেবেছি, এত মিনতি ঝরে, ঝরতে পারে কারো কণ্ঠ থেকে!!

কিছু না বুঝেই অনেকটা যেন ভিতরের কোন বন্ধনের টানে তুলে নিলাম তাকে পথের ধুলো থেকে। তারপর জীবনের দীঘ পথ পাড়ি দিলাম তার সঙ্গে, কিংবা তাকে সঙ্গে করে। কিন্তু এ রহস্য চিরকাল রহস্যই রয়ে গেলো, আমি তাকে তুলে নিলাম, না সে আমাকে তুলে নিলো পথের ধুলো থেকে! একটু একটু করে যতই জানছি তাকে, রহস্যের ঘোর যেন জটিল থেকে জটিল হয়ে চলেছে আমার জীবনে!

আমার জীবনে কখনো কোন কিছুর অবভাব ছিলো না। আলোর বড় অভাব ছিলো। অন্ধকার পথে এবং পথের অন্ধকারে হুঁচট খেয়ে খেয়ে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেছি জীবনের দীর্ঘ সফর। কখনো আমি আলোর পরশ অনুভ করিনি আমার জীবনে। যদি সত্য বলি, জীবনে আলোর প্রয়োজন রয়েছে, এটাই জানা ছিলো না আমার। পথের ধুলো থেকে তুলে নিয়ে তাকে যেদিন আলিঙ্গন করলাম। জীবনের আকাশ থেকে আঁধার যেন ধীরে ধীরে সরে যেতে লাগলো। একটু একটু করে যেন পূর্বদিগন্তে আলো ফুটতে শুরু করলো।

একদিন নিজের কাছে মনে হলো, আমি এখন এক আলোকিত মানুষ। অহঙ্কার হলো না, কৃতজ্ঞতার অনুভূতি হলো। তখন একটু একটু করে মনে হতে লাগলো পথের ধুলো থেকে হয়ত সেই আমাকে ...! হৃদয়ের নরম মাটিতে চিন্তাটা মাত্র শিকড় বসাতে শুরু করেছো। হঠাৎ করেই আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো সে! পথিক, তোমার তো পথচলা শেষ হয়ে আসছে। বিদায় দাও। এবার যাই আমি। আবার আমি পড়ে থাকবো পথের ধুলিশয্যায় নতুন কোন পাথিকের আশায়!!

পথের ধুলোয় তাকে পেলাম। জীবনের চলার পথে তাকে আপন করে নিতে চাইলাম। একটু একটু করে তাকে চিনতে শুরু করলাম। কিন্তু তার আগেই এসে গেলো বিদায়ের বেলা। বেজে উঠলো হারানোর সুর। বড় আফসোস হয়, যাওয়ার সময় তার ঠিকানা জেনে রাখা হলো না।

হে প্রিয় বন্ধু! তুমি কি কখোন দেখেছো তাকে পথের ধুলিশয্যায় পড়ে থাকতে অবহেলায়! যদি দেখা পাও।  পথচলার ব্যস্তা কিছু সময়ের জন্য ভুলে গিয়ে একটু দাঁড়িয়ো তার পাশে। হয়ত সে তোমাকে বলবে তাকে তুলে নিতে! তোমার সঙ্গে তোমার ঠিকানায় তাকে নিয়ে যেতে। নাও যদি বলে, তুমি নিজেই এগিয়ে গিয়ে পরমত মমতায় তুলে নিয়ো তাকে।

 

সবাইকে

পৃথিবীর সবাইকে, প্রত্যেক জাতির এবং  প্রত্যেক ধর্মের সবাইকে আমরা আজ পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, জেরুসালেম আমাদের ছিলো, আমাদের আছে এবং আমাদের থাকবে। লুণ্ঠনকারীর দখল কখনো বৈধতা পেতে পারে না। সবাইকে আজ বুঝতে হবে, মুসলিম উম্মাহর উপর বুঝে শুনে এক ঐতিহাসিক অবিচার চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।

আমেরিকার ধনী-গরীব, সাদা-কালো, ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান সবাইকে বলছি, সময় থাকতে আপনারা আপনাদের প্রেসিডেন্টকে সংযত করুন। অন্যথায় ...

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা