মুহররম.১৪৪০হিঃ (৩/৬)

তোমাদের পাতা

পাঠকের আদালত

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

প্রিয় পাঠক! লেখক ও সম্পাদকের জন্য পাঠকের আদালতই নাকি বড় আদালত! হয়ত তাই। এজন্য পুষ্পের মজলিসে পাঠকের আদালত কায়েম করা হলো এবং হে ‘মহামান্য পাঠক’ আপনাকে বিচারকের আসনে বসানো হলো। আশা করি আপনি ‘ইনছাফের তারাজু’ সামনে রেখে পুষ্পের লেখা, বিষয়, সজ্জা এবং অন্য যে কোন বিষয় সম্পর্কে আপনার সুচিন্তিত ও ন্যায়ানুগ ফায়ছালা জানাবেন। আমরা সে আলোকে সামনের পথ ও পন্থা নির্ধারণের চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ!আমার পক্ষ হতে শুধু একটা পরামর্শ। আদালতে ইনছাফের চোখে সবসময় পট্টি বাঁধা থাকে, আপনি কিন্তু চোখের পট্টিটা খুলে নেবেন।  আর মর্জির খেলাফ ফায়ছালা করলে কী ‘হাশর’ হয় তার নমুনা দেখেছেন নিশ্চয়!! সুতরাং ...(-সম্পাদক)‘আমার মতে প্রত্যেক পাঠকের কর্তব্য হলো প্রতিটি লেখা ন্যায়পরায়ণ বিচারকের দৃষ্টিতে পড়া। তো পড়তে গিয়ে মনে হলো, যারা মুদ্রণবিভ্রাট ও বানানপ্রমাদের সমালোচনা করছেন তারা ঠিক করছেন না। কারণ কলঙ্ক ছাড়া চাঁদ কি সুন্দর হতো? তাছাড়া ‘আলিফ থেকে ইয়া’ মানে ‘এ থেকে জেড’ মানে ‘অ থেকে অনুস্বার’ সব তো বেচারা সম্পাদককেই করতে হয়! আমরা বিভিন্ন বিভাগে পর্যাপ্ত লেখা পঠিয়েও একটু সাহায্য করছি না!সম্পাদক ঃ কী সুবিচার! এবং কী পরিমিত অলিভ ওয়েল!! ‘প্রধান বিচারপতি’ বানানোর বিষয়টি চিন্তা করা যায় বোধহয়! 
একটা লেখা পড়ে আমার ভালো লাগেনি, ‘বিশ্ব -কাপ এবং চায়ের কাপ। কারণ আমার মনে হয়, হালকা ও তরল বিষয় এ বিভাগটির ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুণœ করে। ভালো লাগেনি বিষয়বস্তুটা, তবে ভাষা ও শব্দচয়ন এবং উপস্থাপন সুন্দরই হয়েছে; তদুপরি এখান থেকেও কিছু না কিছু বার্তা দেয়ার এবং শিক্ষা নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।সম্পাদকের রোযনামচায় বক্সের ভিতরের লেখাটি অসাধারণ! ‘প্রথম আলো’ নামটির যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে পত্রিকাটার চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ইনকিলাবের প্রসঙ্গ এনে প্রথম আলোর নিক্ষিপ্ত তীরটা তাদের দিকেই ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে, কিন্তু দায়টা সম্পাদক নিজের উপর রাখেননি, ‘ইনকিলাব অবশ্য মধুর প্রতিশোধ নিতে পারতো...’ বলে! তারপর একটা দু’টো শব্দ যোগ করে ইনকিলাবের অতীত ও বর্তমানের দিকে সূক্ষ্ম ও প্রচ্ছন্ন একটা ইঙ্গিত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সুন্দর ও শিক্ষণীয়। ‘অথেন্টিক’ শব্দটির তির্যকতাও মনে রাখার মত এবং শেখার মত। (আব্দুর-রশীদ,টাঙ্গাইল, মধুপুর)নাহ আর পারা গেলো না! আর চুপ করে থাকা গেলো না! এক এক করে পাঁচটি সংখ্যা! পাঁচ/সাত মাসের সময়-পরিসরে! একজন বুড়ো মানুষের পক্ষে! চারপাশের সবাই যাকে ভাবে, শুধু ‘মাযূর’ নয়, অসুস্থ! তাহলে বলি, ওরে তাগড়া যুবকের দল, সবার আগে হও না এমন মাযূর!হুড়মুড় করে এত কথা ভিতর থেকে আসতে চাচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত লাগাম টেনে ‘ওভার হলো। আমার উপর তো আবার অতিরিক্ত ওয়েলিং’-এর অভিযোগ! তাও কিনা স্বয়ং সম্পাদকের তরফ থেকে! এমন উপযুক্ত সময়ের জন্যই বুঝি তৈরী হয়েছে বাংলার প্রবাদ, ‘যার জন্য কী যেন করি, আর সেই কিনা কী যেন বলে?’্ইতিহাস, রাজনীতি, কূটনীতি-এগুলো তো আগেই দখল ...! শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, এ দু’টোও রক্ষা পেলো না! এখানেও তিনি হাযির এবং সগৌরবে! কে বলবে, পাকা হাত নয়!!কারণে অকারণে এতদিন শুনেছি, কার দৌড় যেন কোন্ পর্যন্ত! এখানে তো দেখি...।‘নেট মানে জাল, জাল মানে ফাঁদ’, এর চেয়ে মর্মস্পর্শী ও জীবন্ত শিরোনাম আর কী হতে পারে! এই ফাঁদ কীভাবে সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে, কিছু মানুষ এখন তা বুঝতে পেরে চোখের নোনা জল ফেলছেন, কিন্তু কোন কাজে আসছে না, হয়ত নোনা অশ্রুর বদলে  রক্তাশ্রুতেও এখন আর...।আকাশের চাঁদ ও সূর্যকে সাক্ষী রেখে সত্যের যে ডাক তিনি তাঁর কাউমের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, পাঠক হিসাবে আমরা অবশ্যই সাক্ষ্য দেবো, আপনার আওয়ায আমরা শুনেছি। আল্লাহ্ আপনার ছায়া এই কাউমের উপর দীর্ঘ করুন। দিলের এ দু‘আ সবসময়ের জন্য, আমীন। সুলতান আব্দুল হামীদ রহ. সম্পর্কে লেখাটি আমার জ্ঞানের ভা-ার সমৃদ্ধ করেছে, সন্দেহ নেই। পুরো লেখায় কোথাও ছন্দপতন নেই। আল্লাহ তা‘আলা পুত্রকে পিতার ....।‘আমাকে’ এবং ‘সঙ্গীর জন্য মর্মবেদনা’ দু’টো লেখার উৎস অভিন্ন। সম্ভবত পুষ্পে দ্বিতীয় প্রকাশনায় আছে, ‘আমি কে?’ আমার মনে হয়, এ তিনটি লেখা একই জাতের। এককথায় অনন্য! আল্লাহ পাক লেখকের কলবে এবং কলমে ...। (ইয়াসীন)

প্রথম কথা সম্পর্কে আমার প্রথম কথাগত সংখ্যার প্রথম কথার প্রথম বাক্যটি হলো, ‘উদীয়মান সূর্য এবং অস্তগামী সূর্য, তুমি কি মনে করো এ দু’য়ের মধ্যে কোন বন্ধন নেই?’এখানে বাক্য-বিন্যাসে অস্বাভাবিকতা রয়েছে; স্বাভাবিক বিন্যাস হওয়া উচিত, ‘তুমি কি মনে করো, উদীয়মান সূর্য এবং অস্তগামী সূর্যের মধ্যে কোন বন্ধন নেই?স্বাভাবিক বাক্যবিন্যাস ক্ষুণ করে সম্পাদক সাহিত্যের উপর অবিচার করেছেন। এজন্য তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।সম্পাদকের জবানবন্দী ঃ মহামান্য আদালত! এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অমূলক, বরং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। দু’টি বাক্যবিন্যাসই সাহিত্যের অঙ্গনে গ্রহণযোগ্য। তবে প্রতিটি বিন্যাসের রয়েছে নিজস্ব স্থান। আর নিজস্ব স্থানে প্রতিটি বিন্যাসই সুন্দর। ঐ যে বলে, ‘বন্যরা বনে সুন্দর, পোষ্যরা সুন্দর ঘরে।’ এটা মনে রাখতে হবে।দ্বিতীয় বিন্যাসে বাক্যটি এক শ্বাসে পড়তে হয়। ফলে প্রশ্নটির আলাদা গুরুত্ব উদ্ভাসিত হয় না। অথচ এখানে প্রশ্নের অংশটি আলাদারূপে তুলে ধরাই উদ্দেশ্য। তাছাড়া সূর্যের দু’টি অবস্থার প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করাও উদ্দেশ্য। তো প্রতিটি অংশের প্রতি আলাদা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বাক্যটিকে তিনটি পর্বে বিভক্ত করার প্রয়োজন ছিলো।এ বক্তব্যের আলোকে উভয় বিন্যাসে বাক্যটি পড়ে দেখা হোক, আশা করি, সম্পাদক হিসাবে আমার নির্দোষিতা রাতের আঁধারের মত, দুঃখিত মহামান্য আদালত, আসলে আমি বলতে চেয়েছি, দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে কিনা আদালতকক্ষ কিছুটা অন্ধকার হওয়ার কারণে মুখ ফসকে ‘রাতের আঁধার’ কথাটা এসে পড়েছে!যাই হোক, আমি আশা করি, মহামান্য ‘পাঠক-আদালত’ সম্পাদক হিসাবে আমাকে বেকসুর খালাস প্রদান করবেন। এবং ... নাহ, এবং এর পরের অংশটুকু থাক। কারণ আশঙ্কা হয়, ‘মহামান্য বিচারক’ অসন্তুষ্ট হয়ে অধমকে ‘বাইচান্স সম্পাদক’ বলে পরিহাস করবেন। বিচারকের হাতে তো আবার ‘অসীম’ ক্ষমতা!!(অভিযোগকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)সম্পাদক ঃ ভীরু, বুযদিল কোথাকার!
ওবায়দুল্লাহ, তারানগরী/দুধনই, ধোবাউড়া, মোমেনশাহীআমি যদি চাঁদের সৌন্দর্য না দেখি; কালো দাগ ও কলঙ্কের কথাই শুধু ভাবি তাতে আমার কী লাভ! চাঁদেরই বা কী ক্ষতি! আমি যদি সূর্যের আলো ও উত্তাপের প্রতি কৃতজ্ঞ না হই, শুধু তার আগুণ-রোদের সমালোচনা করি, তাতে আমার কী লাভ! সূর্যের কী ক্ষতি!আমি যদি পুষ্পের আলো ও সুবাসে আলোকিত ও সুবাসিত না হই; আমি যদি পুষ্পের অনিবার্য কিছু সামান্য খুঁত ও অসম্পূর্ণতা নিয়ে তোলপাড় করি তাতে আমার কি লাভ, পুষ্পের কী ক্ষতি! এরপরো একটা কথা! আমাদের পুষ্প চিরসুন্দর, চিরনিখুঁত হোক, পাঠকের এ আকুতিকে অবশ্যই মূল্য দিতে হবে। তাই নীচে কিছু অপ্রিয় আলোচনা তুলে ধরা হলো। হয়ত তাতে...। বিজ্ঞপ্তির দাগ থেকে আমাদের পুষ্প মুক্ত, এজন্য আমরা গৌরব বোধ করি, কিন্তু ‘ছবি’র দাগ! আমার মনে হয়, বহু পাঠক একারণে ব্যথিত। তারপরো কেন সাবই পুষ্পের প্রতি নিবেদিত?! এর উত্তর- ‘আমার অধরে হাসি দেখিয়া, অবাক হয়ো না। এ আমার আহত হৃদয়ের অশ্রু যা হাসি হয়ে ঝরে পড়ছে।’সম্পাদকের জবানবন্দী-‘মাই লর্ড’! আমার বিশ্বাস, সবার প্রিয় পুষ্প ‘সীমা-রেখা’র মধ্যেই রয়েছে এবং আমাদের বড়দের পরিচালিত পত্রিকায় এর নযির রয়েছে। তখনই হয় অন্যায় যখন বৈধতার সীমা অতিক্রম করা হয়। তারপরো আদালতের যে কোন ফায়ছালা আমি মাথা পেতে নেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকবো। আদালত অবমাননার পথে কিছুতেই যাবো না। তবে বুড়ো বয়সে যে ভুলো মন! ভুলে যেতে কতক্ষণ! 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা