মুহররম.১৪৪০হিঃ (৩/৬)

তোমাদের পাতা

তাকে

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

যদি বলি তাকে, একটু বসো আমার কাছে। তোমার কিছু কথা বলো, আমার কিছু কথা শোনো!যদি বলি তাকে, কিছু না হয় বলো না, আমার কথা না হয় শোনো না, তবু একটু কাছে এসে বসো উভয়ের মাঝে নীরবতার ব্যবধান রেখে, নৈশব্দের দেয়াল তুলে।যদি বলি তাকে, এসো আমরা সবকিছু ভুলে, সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে জীবনের গান শুনি, প্রকৃতির বার্তা গ্রহণ করি!ঠোঁটের ফাঁকে একটা শুকনো হাসি টেনে শুধু বলে, আমার কিছু ব্যস্ততা আছে; চারপাশে সবার কাছে আমার কিছু দায় আছে; ঘরে বাইরে এবং নিজের কাছেও আমার কিছু কর্তব্য আছে। তোমার কাছে বসতে হলে তো সব ব্যস্ততা ও বাস্তবতা পরিত্যাগ করতে হয়! তাহলে তো সব দায় ও কর্তব্য ভুলে যেতে হয়!আমি অবাক হই! কিছু বলি না। অবাক দৃষ্টিতে শুধু চেয়ে থাকি তার দিকে! আমারও বিরক্তি ধরে, ক্ষুব্ধ কণ্ঠে আমিও বলি, আচ্ছা, যাও তাহলে!ইচ্ছে হয় বলি, কিসের এত ব্যস্ততা! কিসের এত দায় ও কর্তব!! জীবনের জন্য জীবন থেকে কিছু সময় ব্যয় করা কি সম্ভব নয়?! এদিকে যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো! লাল সূর্যটা যে ডুবুডুবু! সন্ধ্যার আঁধার যখন সব ব্যস্ততা ও বাস্তবতার উপর, সব দায় ও কর্তব্যের উপর পর্দা টেনে দেবে তখন কী করবে তুমি? কোন্ পিছুটান দিয়ে সন্ধ্যার আঁধার দূর করবে শুনি!!সংসারের দায় ও কর্তব্যের জালে  জড়িয়ে তুমি ভুলে গিয়েছো জীবনের দায়! জীবনের কর্তব্য!! আমি এক তুচ্ছ মানুষ! আমাকে তুমি অস্বীকার করতে পারো এবং পারো আমার ভালোবাসাকে প্রত্যাখ্যান করতে; কিন্তু জীবন! জীবনের দায়-দায়িত্ব এবং জীবনের কর্তব্য কীভাবে অস্বীকার করবে? জীবনের বাস্তব দাবী কীভাবে তুমি প্রত্যাখ্যান করবে?ইচ্ছে হয় শেষবারের মত তাকে বলি, কারণ আমি যখন থাকবো না, তাকে বলারও কেউ থাকবে না। সবাই তো তারই মত ব্যস্ত ও ব্যতিব্যস্ত নিজের ঘেরাটোপে। ইচ্ছে হয় তাকে বলি, এখনো সময় আছে, এখনো আছে তোমার জন্য বরাদ্দ কয়েকটি শ্বাস; এখন অন্তত অর্পণ করো নিজেকে জীবনের দায় ও কর্তব্যের কাছে! মৃত্যুর পরে যে জীবন সেই জীবনের হাতছানির কাছে!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা