মুহাররম ১৪৪৫ হিঃ

কাশগর ও কায়রো

ড্রোনপ্রযুক্তি আমাদেরকে কী র্বাতা দেয়?

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

সভ্যতার যখন থেকে শুরু তখন থেকেই মানুষে মানুষে, গোত্রে গোত্রে এবং দেশে দেশে যুদ্ধের শুরু। যুদ্ধ শুধু অন্যের ধ্বংস সাধনের জন্যই করা হয় না, নিজেকে রক্ষার জন্য করা হয়, করতে হয়। যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন অস্ত্রের এবং মারণাস্ত্রের। পৃথিবীর আদি মানুষ খুব সাদামাটা অস্ত্র ব্যবহার করলেও নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে শত্রুর চেয়ে উন্নত অস্ত্র তৈরীর। তারই ধারাবাহিকতায় তীর-তলোয়ারের যুগ পার হয়ে মানুষ প্রবেশ করেছে বারুদ, বন্দুক ও কামানের যুগে, অর্থাৎ আগ্নেয়াস্ত্রের যুগে। তারপরো কিন্তু মানুষ থেমে থাকেনি। উন্নত থেকে উন্নত অস্ত্রতৈরীর প্রতিযোগিতা চালিয়েই গিয়েছে। এসেছে ট্যাঙ্ক ও ক্ষেপণাস্ত্র। তারপর শুরু হয় আকাশযুদ্ধ। প্রথম প্রজন্মের বিমানের পর এখন চলছে পঞ্চম প্রজন্মের বিমান।বিমানের জন্য প্রয়োজন পাইলটের।  বিমানের অর্থমূল্য যেমন বিপুল তেমনি একজন পাইলটকে যুদ্ধবিমান পরিচালনার উপযোগী- রূপে গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। অথচ যুদ্ধবিমান ও তার পাইলট বিরাট ঝুঁকির মধ্যেই থাকে। বিমান ধ্বংস হওয়ার ক্ষেত্রে পাইলটের জন্য যদিও বায়ুছাতা (প্যারাস্যুট)  যোগে নেমে আসার সুযোগ আছে তবু ভয় থাকে শত্রুর হাতে বন্দী হওয়ার।তা থেকেই অস্ত্রবিশারদ -দের চিন্তায় এসেছে, এমন আকাশযুদ্ধযান তৈরীর, একদিকে যার ব্যয় হবে তুলনামূলক কম, অন্যদিকে তা পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন হবে না পাইলটের! বরং মাটিতে বসেই দূরনিয়ন্ত্রণের সাহায্যে তা পরিচালনা করা যাবে, অথচ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানবে নিখুঁত ভাবে। সুতরাং নিশ্চিতই বলা যায়, ভবিষ্যতের আকাশযুদ্ধ হবে যুদ্ধবিমানের স্থলে ড্রোননির্ভর।

***

মুসলিমবিশ্ব তার সোনালীযুগে সামরিক শক্তি ও অস্ত্রশক্তিতে ছিলো শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। মহান উছমানী খলীফা মুহম্মদ আলফাতিহ যে কামান ব্যবহার করেছেন তখনকার সামরিক বিচারে তা ছিলো শ্রেষ্ঠ। খৃস্টান-শক্তির হাতে এত দূরপাল্লার এবং এত কার্যকর কামান ছিলো না। নৌযুদ্ধেও মুসলিমরা ছিলো সেরা। এমনকি এই সেদিন ১৯শতকের শুরুতেও আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ভাসমান আমাদের যুদ্ধজাহায ছিলো তখনকার বিশ্বের সর্ববৃহৎ জাহায। তারপর শুরু হয় সামরিক শক্তিতে এবং অস্ত্রশিল্পে আমাদের পিছিয়ে পড়া এবং অন্যদের এগিয়ে যাওয়া! শুরু হয় আমাদের পতন এবং অন্যদের উত্থান। আমরা এখন অন্যের কাছ থেকে অস্ত্র খরিদ করে যুদ্ধ করি।...তবে সুখের বিষয়, এ ক্ষেত্রে তুরস্কের হাত ধরে মুসলিমবিশ্বে শুরু হয়েছে জাগরণ ও বিপ্লব। তুরস্কের তৈরী ড্রোন রীতিমত পশ্চিমাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে! সিরিয়া যুদ্ধে, আজরবাইজান-আরমেনিয়া যুদ্ধে এমনকি ইউক্রেনযুদ্ধে তুর্কী ড্রোন তার সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।...সর্বান্তকরণে কামনা করি মুসলিম বিশ্ব যেন এগিয়ে যায় অতীত গৌরবের সন্ধানে ঐক্যবদ্ধভাবে! ইরান নিজের স্বার্থ রক্ষা করুক, তবে কখনো যেন মুসলিবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন না থাকে! কারণ এটা তার জন্যও হবে আত্মঘাতী!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা