জুমাদাল উলা ১৪৩২ হিঃ (২০)

রোযনামচার পাতা

রোযনামচার কিছু পাতা

লিখেছেনঃ হাফীদা শামস

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

১ - ২ - ৩২ হি. 

আমাদের দেশে ঘরে ঘরে প্রতিটি মা যদি হতেন ইসলামী শিক্ষার আলোতে আলোকিতা তাহলে কেমন হতো এদেশের লক্ষ-কোটি শিশু! কেমন হতো আগামী দিনের নাগরিক! কেমন ছিলেন হযরত মাওলানা মুহম্মদ ইলয়াছ (রহ.)-এর আম্মা? কেমন ছিলেন আমাদের হযরত আলী মিয়াঁ (রহ.)-এর আম্মা?

এটা না করে কেন মাতৃজাতিকে আলোর নামে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা? প্রতিটি মেয়েকে মাতৃত্ব শিক্ষা দাও এবং প্রতিটি নারীকে মাতৃত্বের মর্যাদা দাও। প্রতিটি মাকে শিশুর সর্বোত্তম পাঠশালারূপে গড়ে তোলো। হে আলেম! হে বুদ্ধিজীবী! পরস্পর কলহ ত্যাগ করে সবার আগে এই কাজটি করো।

কথাগুলো বলা হলো, নারী-শিক্ষা সম্পর্কে একজন সুন্দর মানুষের অসুন্দর একটি মন্তব্য শুনে।

২ - ২ - ৩২ হি.

খোলা জানালা দিয়ে আকাশ দেখছিলাম। আজকের আকাশ একেবারে নীল। তার মধ্যে সাদা সাদা মেঘ ভাসছে। দেখতে অপূর্ব লাগছে!  শহরের জীবনে ঘরের জানালা দিয়ে আকাশ দেখতে পাওয়া সত্যি বড় ভাগ্যের বিষয়।

শরীর অসুস্থ হলেও মনটা আজ অনেক প্রফুলস্ন। এত সুন্দর নীল আকাশ দেখেও কি মন বিষণ্ণ থাকতে পারে?

লোকে বলে আকাশী রঙ মনের অবসাদ দূর করে। হয়ত কথাটা সত্য। তবে রঙ, না ‘রঙওয়ালা’ সেটাই হলো প্রশ্ন।

৫ - ২ -৩২ হি.

আমরা পাঁচ ভাই-বোন সবাই দেখছে মাকে, যার দৃষ্টি যেমন তেমন করেই। আমিও দেখেছি এতো দিন। তবে এখন যেন আমার মাকে আমি মায়ের দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি। মায়ের চোখের পানি দেখে আজ সান্তবনার কোন বাক্য খুঁজে পেলাম না। শুধু ভাবলাম...

আমাদের জন্য নিজেকে তিনি তিলে তিলে ক্ষয় করেছেন। শুধু কি আমার মা?! পৃথিবীর সকল মা-ই এমন। নিজেদের ক্ষয় করে সন্তানকে তারা গড়ে তোলেন। সন্তান শুধু বোঝে না, বুঝতে চায় না। কিন্তু কেন ক্ষয় হবে মায়ের প্রাণ?! সন্তান নিজেই কেন হয় না মায়ের নতুন প্রাণ! সন্তান যত সুবাসিত, যত আলোকিত হবে, মায়ের জীবন তো হবে তত ...

মেয়েরা একসময় ‘মা’ হয়ে কিছুটা হলেও বুঝতে পারে, কিন্তু  ছেলেরা! পৃথিবীর প্রতিটি মায়ের পুত্রসন্তান যদি হতো ‘তাঁর’ মত!

৭ - ২ - ৩২ - হি.

হে প্রিয়! আজ শুধু বলতে এসেছি, আজ তোমাকে কিছু বলবো না! তোমার পাতায় কিছু লিখবো না। মনের কথা আজ লিখে রাখবো শুধু মনের পাতায়।

১০ - ২ - ৩২ হি.

আদীব হুযূর বলেছেন, কাগজের পাতায় আমরা যে রোযনামচা লিখি তা আসল রোযনামচা নয়। আমাদের আসল রোযনামচা লেখা হচ্ছে দুই কাঁধে দুই কাতিবের কলমে এবং তাতে কোন খালি পৃষ্ঠা নেই! সেই রোযনামচার কিছু অংশ কালো, কিছু অংশ আলো। তবে যাঁর আদেশে এই লেখা তিনি এত মেহেরবান যে, সব কালো তিনি মুছে দেন, যদি একটু চোখের পানি...

১১ - ২ - ৩২ হি.

আজ আমার বড় সুখের দিন! সামান্য একটি দুঃখ আমার জন্য বয়ে এনেছে অনেক সুখের...

১৫ - ২ - ৩২ হি.

কীভাবে লিখবো আজ! কলমটা ধরে রাখাও যে সম্ভব হচ্ছে না! একটি সৃষ্টির আড়ালে এত কষ্ট! এত বেদনা! হে ‘আকাশ’! সৃষ্টির আনন্দ যেন মুছে দিতে পারে সব কষ্ট, সব বেদনা।

তুমি এসো, এসো হে ‘রঙধনু’, আমার জীবনে রঙ ধরাতে!

১৮ - ২ - ৩২ হি.

অস্থিরতা যখন তীব্র হয়, বুঝতে পারি, সময় হয়েছে আকাশ থেকে কিছু নেমে আসার। ব্যাকুল হৃদয়ে এবার শুধু প্রতীক্ষায় ছিলাম এমন একটি মুহূর্তের। এবং ... এলো স্বপ্নের সেই মুহূর্তটি। আমার সামনে তারজামাতুল কোরআন। তিনি পড়াচ্ছেন, আমি পড়ছি, পড়েই যাচ্ছি। এ পড়ার শুরু আছে শেষ নেই। একসময় সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলাম এবং ... জেগে উঠলাম। হায়, কেন মানুষ স্বপ্ন থেকে জেগে ওঠে! 

 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা