কাশ্মীরসংখ্যা

রোযনামচার পাতা

মনে পড়ে কাশ্মীরী মায়ের কথা!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

মনে পড়ে কাশ্মীরী মায়ের কথা!

২৭/৩/৪১ হি. রোববার

কয়েকদিন আগে পত্রিকার পাতায় ছবিটি দেখেছি। তারপর আর ভুলতে পারছি না। আজ তো মনটা রীতিমত উতলা হয়ে উঠেছে! বারবার যে কথাটা মনে হচ্ছে তা হলো, ‘কত নিষ্ঠুর হতে পারে হিন্দুস্তানের হায়েনা! আর কত সাহসী হতে পারে একজন কাশ্মীরী মা! যদি কখনো প্রয়োজন হয়, আমরা কি হতে পারবো এমন! অন্তত এর কাছাকাছি!

চানতারা পতাকা দিয়ে সাজানো কাশ্মীরের এক শহীদের জানাযা। পাশে তার মায়ের ছবি, চোখে মুখে বিষাদের চিহ্নমাত্র নেই। অপূর্ব এক দীপ্তি ও প্রত্যয় যেন ফুটে উঠেছে তার মুখম-লে, বিশেষ করে তার চোখের দৃষ্টিতে! এমনও হতে পারে কোন মায়ের মুখম-ল যুবক পুত্রের জানাযার সামনে দাঁড়িয়ে! আসলে মা যখন শহীদের মা হন, তখন তার অন্তর থেকে অন্যরকম এক শক্তির স্ফুরণ ঘটে। মায়ের মন্তব্য, আগামী পরশু আমার বেটার শাদি হওয়ার কথা ছিলো; এখন ইনশাআল্লাহ্ জান্নাতেই সে দুলহার সাজ পরবে। হুরানে জান্নাতের সঙ্গেই তার শাদি হবে। দূর থেকেই তোমাকে সালাম কাশ্মীরের হে ‘শহীদমাতা’! তুমি ধন্য হে মা! মুসলিম মায়েদের তুমি গর্ব হে মা!

নূর হাফছা, মীরপুর ঢাকা

২৮/১২/৪০ হি. ৩০/৮/১৯ খৃ. শুক্রবার

কাশ্মীরে নতুন বিস্ফোরণ ঘটেছে, ক’দিন হলো? তেসরা যিলহজ্জ থেকে ২৮শে যিলহজ্জ কত দূর! উপমহাদেশে এবং বাংলাদেশে ক্ষোভের আগুন দপ করে জ্বলে উঠলো, দপ করেই যেন নিভে গেলো! তাহলে উপমহাদেশের জনমতকে কেন পরোয়া করতে যাবে, হিন্দুত্ব-বাদী বিজেপি সরকার!?

পুষ্প যদি আরাকান ও আলকুদস-এর মত কাশ্মীর- সংখ্যা প্রকাশ করে তাহলে অন্তত একটা মৌলিক কাজ হতে পারে, যার প্রভাব হয়ত হবে ধীর, তবে সুদূরপ্রসারী। কিন্তু বেচারা আদীব হুযূর!

বশীর বিন নাযীর, ডেমরা, ঢাকা

০০ এখনই বেচারা হয়ে গেলাম। মিয়াঁ, এই বুড়ো রগে এখনো ‘খূন দৌড়তা হ্যয়!’

***

২৫/১২/৪০ হি. ২৭/৮/১৯ খৃ.বৃহস্পতিবার

বিজেপি সরকার ভারতের সংবিধান থেকে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদাদানকরী ৩৭০ অনুচ্ছেদ (এবং তার আওতাধীন ৩৫কধারা) বাতিল করার বারদিন পর নরেন্দ্র মোদিকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানা প্রদান করেছে আরব আমিরাত ও বাহরাইন!  হেফাযাতে ইসলামের মহাসচীব মাওলানা বাবু নগরী ছাহেব এক বিবৃতিতে এজন্য দেশদু’টির কঠোর সমালোচনা করেছেন।

হায় হেফাযতে ইসলাম! তোমার জন্য বড় মায়া হয়! একসময় কী ছিলো তোমার ধার ও ভার, আর আজ! শুধু কাগজের একটা বিবৃতি!!

আলমাস হাসান, অন্দরকিল্লা, চাটগাম

***

২৮-১২-৪০হি. ৩০-৮-১৯খি.শুক্রবার

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানতে চেয়েছেন পাকিস্তানের কাছে, জম্মু ও কাশ্মীর কবে পাকিস্তানের ছিলো যে আপনারা এখন এ নিয়ে কান্নাকাটি করছেন?

রাজনাথ বাবুর কথার জবার তো পাকিস্তান দেবে, হয় কথা দ্বারা না হয় বোমা দ্বারা; আমরা এখানে শুধু মুসলিম হিসাবে বলতে চাই, যখন থেকে ঈমানের বন্ধনে উভয় এলাকা আবদ্ধ হয়েছে তখন থেকেই কাশ্মীর পাকিস্তানের; অর্থাৎ যে ভিত্তিতে পাকিস্তান জন্মলাভ করেছে এবং আপনাদের তা মেনে নিতে হয়েছে সেই একই ভিত্তিতে কাশ্মীর পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আপনারা কাশ্মীরের বিশাল ভূখ- দখল করে রেখেছেন, এখন আবার বড় গলায় কথা বলছেন, একেই বলে, ‘সিনাজুরি’।

ইউসুফ মুজতাবা, মীরপুর, ঢাকা

***

০৫/১২/৪০ হি. ৭/৮/১৯ খি.বুধবার

আজকের নয়া দিগন্ত ভিতরে আন্তর্জাতিক পাতায় একটি প্রতিবেদন ছেপেছে, ‘বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ভারত-অধিকৃত কাশ্মীর’ শিরোনামে। উপরে একটি ছবি রয়েছে, দেখলে সত্যি মনটা কেঁদে ওঠে। পুরো সড়কের এমাথা থেকে ওমাথা কাঁটাতারের বেড়া, পথে কোন মানুষজন নেই, একটা কুকুরও নেই, আছে শুধু অস্ত্র হাতে একজন ভারতীয় সেনা। সেনা ও হায়েনা এখন যেন সমার্থক হয়ে গিয়েছে!

কাশ্মীরে এখন কী ঘটছে, কেউ জানে না। ভয়াবহ কিছু যে ঘটছে লোকচক্ষুর আড়ালে তাতে কোন সন্দেহ নেই। মুসলিম বিশ্বের নেতা ও জনতা এমন নির্লিপ্ত কেন? কাশ্মীরের মযলূম মুসলিমানকে আল্লাহ্ যেন হেফাযত করেন, আমীন।

মুখতার হোসাইন, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা

***

 ২৪/১২/৪০ হি. ২৬/৮/১৯ খি.সোমবার

এত দিন কাশ্মীরের আলাদা পতাকা ছিলো, এখন আর নেই। ভারতের তেরাঙ্গা পতাকাই এখন থেকে কাশ্মীরের পতাকা। গতকাল কাশ্মীরের সচীবালয় ভবনে কাশ্মীরী পতাকা নামিয়ে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।...(হাফিয, মুহম্মদপুর, ঢাকা)

কাশ্মীরের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে!

২৮/৩/৪১ হি. ২৬/১১/১৯ খি.মঙ্গলবার

কাশ্মীরকে আমি ভালোবাসি, যেমন ভালোবাসি নিজেকে। কাশ্মীরের প্রতি আমার ভালোবাসা জন্মেছে আম্মুর কাছে কাশ্মীরের কথা, কাশ্মীরের শিশুদের কথা এবং কাশ্মীরের মেয়েদের কথা শুনে শুনে।

কাশ্মীরের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে! কাশ্মীরের শিশুদের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে।

আমার আদরের ছোট্ট বোনটি যেদিন পৃথিবীতে এসেছে, সেদিন কাশ্মীরের উপত্যকায়ও কত মেয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। আল্লাহ্র রহমতে আমার বোনটি আমাদের দেশে কত নিরাপদ! কিন্তু কাশ্মীরে! সেখানে প্রতিটি মায়ের বুক দুরু দুরু করে, কখন ভারতের হিংস্র হায়েনা...!

আমার খুব ইচ্ছে করে, যদি কাশ্মীরের নিষ্পাপ শিশুদের জন্য কিছু করতে পারতাম! কিন্তু...!

কাশ্মীরের সবুজ উপত্যকার জন্য, কাশ্মীরের ‘সবুজ’ মানুষগুলোর জন্য আমি দু‘আ করি, আল্লাহ্ যেন কাশ্মীরকে, কাশ্মীরের মানুষকে রক্ষা করেন। আল্লাহ্ যেন কাশ্মীরকে আযাদ করে দেন, আমীন 

(নাযরানা বিনতে সালমান)

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা