জিলহজ্ব ১৪৪০ হিঃ (৩/৮)

রোযনামচার পাতা

তোমাদের লেখা আমাদের দেখা, দু’য়ে মিলে হোক ভবিষ্যতের স্বপ্নরেখা!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 

অশ্রু দিয়ে লেখা একটি চিঠি!

 

০০ চিঠিতে তোমার নাম বোধহয় নেই। অন্তত আমি খুঁজে পাচ্ছি না! তুমি চশমাটা খুলে পড়তে বলে’ছো তো, তাই হয়ত ভালো করে পড়তে পারিনি। তুমি লিখেছো, ‘বহু কষ্ট করে পুষ্পের ই-মেইলে পাঠিয়েছি।’ কী পরিমাণ কষ্ট হয় একটা ছেলের একটা ই-মেইল করতে!

তুমি লিখেছো, ‘এবার চশমাটা পড়ো। ...’ ড় দিয়ে চশমা পরা আমার পক্ষে সম্ভব হলো না, কী করি বলো তো!

তোমার বড় একটা অভিযোগ, মেয়েদের লেখা বেশী ছাপা হয় পুষ্পের পাতায়। ....

আচ্ছা বলো তো, তোমরা লেখা পড়া করার জন্য কী পরিমাণ সুযোগ পাও এবং কী পরিমাণ সময়? ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সুযোগ ও সময় কতটুকু? সময় ও সুযোগের কী পরিমাণ অপচয় করো তোমরা! আর মেয়েরা! তারপরো তোমার বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, মেয়েদের প্রতি কেন পুষ্পের একটু কোমলতা!

পুষ্পের কোন একটা সংখ্যা খুলে ছেলেদের এবং মেয়েদের লেখার অনুপাত দেখো তো!  এবার রামাযানে সাধারণ পরিক্ষার যে ফল প্রকাশ করা হয়েছে তাতে সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও মেয়েরা ছেলেদের ছাড়িয়ে গিয়েছে, এ সম্পর্কে কী বলবে, বেটা!

ইনছাফ করো বেটা, ইনছাফ করো।

 

তোমার লেখা, আমার অনুভূতি!

প্রিয় আফীফা আমাতুল্লাহ্ নূর! দীর্ঘ অসুস্থতার পর আল্লাহ্ তোমাকে সুস্থতা দান করেছেন এবং তুমি আবার কলমের সঙ্গ গ্রহণ করতে পেরেছো, এ জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার বে-ইনতেহা শোকর। আল্লাহ্ তোমাকে, পুষ্পের সকল পাঠক-পাঠিকাকে এবং সকল মুমিনীন মুনিনাতকে সুস্থ রাখুন, এই দু‘আ করি।

তুমি তোমার রোযনামচার বেশ কিছু নির্বাচিত অংশ পাঠিয়েছো। যথেষ্ট সময় নিয়ে আমি পড়েছি এবং অত্যন্ত পুলকিত হয়েছি। লেখাগুলো পড়ে আমার মনে হয়েছে, আল্লাহ্র রহমতে তুমি তোমার বয়স ও সময় থেকে যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছো।

একদিন তোমাকে ফোন করেছিলাম। কিছু উৎসাহ দিয়েছিলাম। সে  সম্পর্কে তুমি যে পরিচ্ছন্ন ভাষায়, যে সুনির্বাচিত শব্দে তোমার মনের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছো, সত্যি অপূর্ব।

আমি জানি, পুষ্পকে এবং আমাকে তুমি কত ভালোবাসো; পুষ্পের জন্য, আমার জন্য কী পরিমাণ কল্যাণ কামনা করো; এর বিনিময় শুধু আল্লাহ্র কাছে।

তোমার কলম আল্লাহ্র রহমতে গতি লাভ করেছে এবং লাভ করেছে সাবলীলতা। সেই সঙ্গে তোমার চিন্তা ও ভাবনা অর্জন করেছে যথেষ্ট গভীরতা ও বিস্তৃতি; সর্বোপরি তোমার হৃদয় অর্জন করেছে অত্যন্ত কোমলতা ও মিগ্ধতা। এগুলোই তো নিয়মিত রোযনামচা লেখার উদ্দেশ্য।

এখন যে কাজটা তোমাকে করতে হবে সেটা হলো বানানের প্রতি আরো যত্নবান হওয়া, যেমন সীমা ও সীমানা তুমি লিখেছো ি দ্বারা। আরেকটা কাজ হলো নিয়মিত পড়া এবং সময় ও সমাজ সম্পর্কে পূর্ণ অবগতি অর্জন করা। তাতে কলম আরো সমৃদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ্।

আমার মেয়েদের জন্য আমি যতটা কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করি, তোমার জন্য এবং ঘরে ঘরে প্রতিটি মেয়ের জন্য সেই পরিমাণ কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করি। মেয়েরা কলম হাতে চিন্তায় চেতনায় এবং মন ও মননে এগিয়ে চলেছে সংহত পদক্ষেপে, দেখলে অন্তর ও হৃদয়...

তোমার রোযনামচা সামনের সংখ্যায় ইনশাআল্লহ্         আ, তা, মেছবাহ

 

ফাতেমাখাতুন,  বেলকুচি,সিরাজগঞ্জ

০০ তোমার দীর্ঘ পত্র দীর্ঘ দিন পরে আমার হাতে এসেছে। জানি না, এখন তুমি কী অবস্থায় আছো! যা লিখেছো, এটাই জীবনের বাস্তবতা। আর জীবনের বাস্তবতাকে আল্লাহ্র ফায়ছালা মনে করে যারা ছবর ও ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারে তারাই কামিয়াব হয়। আমি অন্তর দিয়ে তোমার জন্য দু‘আ করছি।

লুবাবা তাবাস্সুম, মনপুরা,কচুয়া, চাঁদপুর

০০ তোমার ‘টক-মিষ্টি-ঝাল’ চিঠি পেয়েছি, যাকে বলে থ্রি-ইন ওয়ান! তুমি পারো বটে! তার উপর পাঠিয়েছো পুরো মাসের রোযনামচা। সম্পাদনা করতে বলেছো, তো শোনো, ‘কান্না করতে দেখে...’ নয়, বরং ‘কাঁদতে দেখে...’।

তুমি লিখেছো, ‘লিখলেই লিখা হয়ে যায়’, সঠিক হলো, ‘লিখলেই লেখা হয়ে যায়।’

তোমাকে এবারের জন্য দ্বিতীয় অতিথিসম্পাদক নির্বাচন করা হলো।

তোমার একদিনের রোযনামচা তুলে ধরার লোভটা আর সম্বরণ করা গেলো না। বেশ চমৎকারিত্ব আছে-

‘কী কারণে যেন আম্মু আপুকে (লাবীবা) কড়া করে বকলেন, আর আপু কান্না করতে লাগলো। আপুকে কান্না করতে দেখে, ছোট্ট খালাত ভাইটি বলতে লাগলো, ‘বুপ, বুপ’।

আম্মু তো অবাক, কী বলছে ও!

খালামণি বললেন, ও লাবীবাকে দুধ দিতে বলছে!

আমরা তো হেসেই অস্থির, এমন কি বড় আপুও কান্না থামিয়ে হাসতে লাগলেন।

ঘটনা হলো, ওর ছোট বোন কান্না করলে খালামণিকে দুধ দিতে দেখে তো, তাই ভাবছে বড় আপুও বুঝি দুধের জন্য কাঁদছে। (হায়, হায়, কান্না করছে লিখলে না কেন!)

হেদায়াতুল্লাহ জামিল, ধামরাই,ঢাকা

তোমার রোযনামচা পেয়েছি। লেখার প্রতি আরো যত্নবান হতে চেষ্টা করো।

জুয়াইরিয়া, মাইজদি কোর্ট, নোয়াখালী

০০ তোমার লেখা পেয়েছি। তুমি যে প্রশ্ন করেছো, মেয়েদের দ্বীনশেখার ব্যবস্থা নেই কেন? মেয়েরা যদি দ্বীন না শেখে তাহলে...!

প্রশ্নের চেয়ে বড় কথা হলো, এখন করণীয় কী? প্রতিটি মেয়ের সাধ্যের ভিতরে শিক্ষা লাভের যতটুকু সুযোগ, তা কী প্রতিটি মেয়ে কাজে লাগাচ্ছে?

জহির আহমদ, শর্শদী মাদরাসা

০০ তুমি লিখেছো, ‘আমার ছোট্ট  লেখাটি ছাপার অক্ষরে দেখতে চাই না, তবে ভূলগুলো ধরে দিতে হবে... আর আমার পথ চলার জন্য সামান্য কিছু দিকনির্দেশনা কামনা করছি।’

খুব ভালো কথা। ভুল লিখতে ভুল করো না, এটা কি শুনেছো?

ব্যাথা নয়, ব্যথা। যানি না, বর্গীয় জ হবে। বভিষ্যত সম্পর্কে ভবিষ্যতই বলতে পারবে। মোট কথা, আগে বানানে নির্ভুল হওয়ার চেষ্টা করো। প্রতিদিন অন্তত তিনটি শব্দের বানান শেখো লোগাত দেখে। নিয়মিত রোযনামচা লিখতে থাকো।

‘রোযনামচা কীভাবে লিখতে হয় জানি না’, আশা করি একথা বলার সময় আমরা পার হয়ে এসেছি।

হেদায়াতুল্লাহ আলহাদী,

মধুপুর, টাঙ্গাইল

০০ তোমার লেখা দু’টো পেয়েছি। তুমি অধ্যয়নের পদ্ধতি জানতে চেয়েছো। আসলেই কি তুমি জানতে চাও? তুমি কি পুষ্পসমগ্রের (১ম) ভূমিকা পড়েছো? জনে জনে ‘দিকনির্দেশনা’ আর কত ফেরি করতে হবে/করা লাগবে?

মাহমূদুল হাসান, আমানতপুর, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী

০০ জিহাদ সম্পর্কে তোমার পর্যালোচনামূলক লেখা পেয়েছি, শিরোনাম হলো, ‘এসো জিহাদকে বুঝতে শিখি’, তোমার লেখার আন্দায ভালো। তবে তোমার সমগ্র বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারিনি। তুমি লিখেছো, ‘তাই এসো হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা, জিহাদকে বুঝতে শিখি’ এ আহ্বানের সঙ্গে আমিও একমত, কাকে বলে জিহাদ? কী এর হাকীকত? জিহাদ ও কিতাল কোথায় সমার্থক, কোথায় ভিন্ন, অবশ্যই বুঝতে হবে? জিহাদ কখন কোন্ মাত্রায় ফরয হবে, অবশ্যই আমাদের জানতে হবে। সাধ্যের ভিতরে, আবারো বলছি, সাধ্যের ভিতরে জিহাদের জন্য প্রস্তুতিও নিতে হবে। তবে...

তুমি লিখেছো, ‘এসো আমরা নিজেদের আত্মমর্যাদাকে জাগিয়ে তুলি’। অত্যন্ত জরুরি বিষয়। প্রশ্ন হলো, এটা কি শুধু মুখের কথায় হয়ে যাবে? এর জন্য ধারাবাহিক ও পর্যায়ক্রমিক মেহনত, মুজাহাদা ও সাধনার প্রয়োজন নেই? দীর্ঘ শিক্ষা ও দীক্ষা অর্জনের প্রয়োজন নেই?

তোমার শেষ আহ্বান হলো, ‘এসো অস্ত্রহাতে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ি। শত্রুর মস্তক দিয়ে পাহাড় বানিয়ে...!

এখানে এসে কিন্তু আমি ভয় পেয়ে গেলাম! তুমি ডাক দেবে, আর আমি ঝাঁপিয়ে পড়বো! এরই নাম কি জিহাদ? মাথা ঠা-া করো।

ফারহান ছাদিক তাইয়িব বিন রিযাউল ইসলাম

০০ তোমার রোযনামচা পেয়েছি। তুমি কি নিয়মিত লেখার চর্চা করো? পুষ্পে প্রকাশিত রোযনামচাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ো?

ছালেহ্ আহমদ, মাদরাসাতুল মাদীনাহ

তোমার অল্প কয়েক লাইনের রোযনামচা, তার মধ্যে একটা শব্দের আ-কার ছুটে গিয়েছে। (সারজীবন)। তুমি দ্বিতীয়বার দেখে সংশোধন করতে পারতে। ‘মজা’ শব্দটা গোসলের সঙ্গে লিখেছো ঠিক আছে, খাওয়ার সঙ্গেও ঠিক আছে। ইলম শিক্ষা করার সঙ্গে ঠিক নেই। তুমি লিখেছো, ‘আমরা অনেক বেশী মজা করে ইলম শিখি...’

যদি লেখো, ‘আমরা অনেক বেশী আনন্দের সঙ্গে ইলম শিখি...’ তাহলে ভালো হয়।

তুমি লিখেছো, ‘আমরা যেন সারজীবন এভাবে মজা করে ইলম শিখতে পারি...’

যদি লেখো, ‘সারা জীবন আমরা যেন আনন্দের পরিবেশে সাধনার মাধ্যমে ইলম শিখতে পারি...’ তাহলে ভালো হয়।

তুমি যতেœর সঙ্গে লেখার চেষ্টা করো। নিয়মিত রোযনামচা লেখো এবং বানানের বিষয়ে যত্নবান হও। আশা করি, তোমার ভবিষ্যত সুন্দর হবে।

মুহাম্মদ হোসাইন আহমদ, খুকনী সিরাজগঞ্জ

০০ তোমার হাতের লেখা বেশ সুন্দর। যত্ন করে শিখেছো, বোঝা যায়। কিন্তু লেখা পড়ে মনে হলো, খুব একটা চেষ্টা করো না। যতেœর সঙ্গে নিয়মিত চেষ্টা না করলে লেখার উন্নতি হবে কীভাবে?

মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, দৌলতপুর, খুলনা

০০ ‘একজন মহান ব্যক্তি এত মধু কিভাবে যোগান দেয়!

লাল কালির উপর একটু চিন্তা করো।

তোমার চারপাশের জীবন ও জগত সম্পর্কে কত কিছু লেখার বিষয় রয়েছে! তুমি এ বিষয়টাই শুধু খুঁজে পেয়েছো!

তোমরা দুই বন্ধু তো তালিবে ইলম, বস্তির ছেলে নও। কিন্তু কথোপকথনের ভাষা!

‘দোস্ত’, একজন তালিবে ইলম কি অপর তালিবে ইলমকে এমন শব্দে সম্বোধন করে! এবং ‘তুই তুকারি’ করে!! অভিজাত মানুষের মুখের ভাষা অর্জন করো এবং মার্জিতভাবে কথা বলারচেষ্টা করো।

ভাই শফীকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ

০০ তুমি লিখেছো, ‘আগামী সুদীর্ঘ বন্ধ কীভাবে কাটাবো এবং ইলমের অন্বেষণে এ দীর্ঘ সময় কীভাবে কাজে লাগাবো, এসম্পর্কে পরামর্শ কেবল আপনার কাছে চাওয়াই সমীচীন মনে করছি। ...’

আমি গরীবের প্রতি কেন এ দয়া, বুঝতে পারলাম না! দরসী কিতাবের প্রতি নাকি তোমার মনোযোগ কম। খারেজি বইপত্র পড়ার আগ্রহ বেশী। মাদারাসায় যখন থাকো তখনো নাকি একই অবস্থা।

আসল কথাটা পরিষ্কার করে বলি, তোমাকে পরামর্শ দেয়া আমার সাধ্যের বাইরে। তোমার ‘বোঝা’ যারা বহন করে আসছেন তাদের কাছেই পরামর্শ চাও। আমি শুধু দু‘আ করি, কল্যাণের পথে, কামিয়াবির পথে আল্লাহ্ যেন তোমাকে পরিচালিত করেন। আমীন।

ভাই শহীদুল্লাহ মৌটুপী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ

০০ তোমার আগের ও পরের লেখা পেয়েছি। বানানে এত দুর্বলতা যে, ভাবতে অবাকই লাগে, অথচ তুমি হেদায়াতুন্নাহ-এর ছাত্র। (তুমি লিখেছো, ‘অতচ’)

সান্ত¡না লিখেছো তালব্য শ দিয়ে এবং  ¦ ছাড়া!

লেখার প্রতি একটু যদি যত্নশীল হও, আশা করি অনেক উন্নতি হবে। নিয়মিত রোযনামচা লেখো, আর প্রতিদিন তিনটি করে শব্দের বানান শিখতে চেষ্টা করো, ইনশাআল্লাহ্ অল্প দিনের মধ্যেই তোমার বানানদুর্বলতা দূর হয়ে যাবে।

তুমি তোমার মায়ের স্মৃতিচারণ করে লিখেছো, ‘স্মৃতির পাতায় মা’। তোমার কথামতে লেখাটি তুমি তৈরী করেছো ‘আমার কামনা ছিলো, কিন্তু ... লেখাটি অনুসরণ করে। তোমার লেখাটি সম্পাদনা করে প্রকাশ করা সম্ভব ছিলো, কিন্তু একটি ভুল সহ্য হলো না। নিজের হস্তাক্ষরেই দেখো ভুলের নমুনা-

 

তুমি যদি বানানের দুর্বলতা দূর করতে পারো তাহলে তোমার লেখাটি প্রয়োজনীয় সম্পাদনার পর পরবর্তী কোন সংখ্যায় ছাপা হতে পারে।

তুমি দেখা করার জন্য আসতে চেয়েছো; ্আসতে পারো, আগে ফোনে যোগাযোগ করে। আমি তোমার সর্বাঙ্গীন উন্নতি কামনা করি।

সা‘আদুদ্দীন মুহম্মদ আলমগীর

০০ তোমার লেখা এবং রোযনামচা পেয়েছি। তুমি একতার উপকারিতা ও কল্যাণকর দিক তুলে ধরেছো। তুমি লেখাটি শুরু করেছো, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি-জিতি নাহি লাজ’ প্রবচনটি দিয়ে। তোমার লেখার আন্দায ও শৈলী সুন্দর। তবে মনে হলো লেখার ক্ষেত্রে তুমি ‘নিয়মিত’ নও এবং খুব একটা যত্নশীল নও।  তোমার বানান মোটামুটি ত্রুটিমুক্ত, তবে একটা ভুল আছে গুরুতর। তোমার লেখাটির শিরোনাম হলো, ‘মৃত্যুর স্মরণ’, তুমি লিখেছো স+ব সংযুক্ত। লোগাত খুলে একটু দেখে নেবে সঠিক বানানটা!

‘তুমি লিখেছো, ‘দুনিয়া দেখতে যতই চাকচিক্যপূর্ণ হোক, এ দুনিয়া খুবই ক্ষণস্থায়ী। এখানে কেউ চিরকাল থাকতে পারবে না। তোমার সঙ্গে যতই ভালোবাসার বাঁধনে নিজেকে বাঁধুক, তোমাকে ছেড়ে যেতেই হবে যখন মৃত্যুর নির্ধারিত সময় উপস্থিত হবে...

নিজের মৃত্যুর চিত্র তুমি এভাবে কল্পনা করেছো, ‘আমার জন্মের সময় হেসেছে কত মানুষ এবং আনন্দ প্রকাশ করেছে। কিন্তু মৃত্যুর সময়! তখন কি মানুষ কাঁদবে আমার শোকে! মানুষের চোখ থেকে কি অশ্রু ঝরবে আমার জন্য। আমি আমার এ ক্ষুদ্র জীবন কি ব্যয় করতে পেরেছি মানুষের সেবায়, মানবের কল্যাণে! আমি কি পরিপূর্ণ ইবাদতের মাধ্যমে আমার ¯্রষ্টার উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পেরেছি...!

যখন মৃত্যু হবে, আমার হাসি-কান্না থেমে যাবে, আমার বাকশক্তি, শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি, আমার সমস্ত শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমার প্রাণহীন দেহ পড়ে থাকবে, মানুষ আমার চারপাশে জড়ো হবে। তখন কি তারা যিকির, তিলাওয়াত ও ইস্তিগফারে মশগূল হবে, নাকি অর্থহীন কথাবার্তায় লিপ্ত হবে!?

কেমন হবে তখনকার অবস্থা যখন শেষবারের মত গোসল দেয়া হবে। আমার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা হবে এবং আমাকে কবরে শোয়ানো হবে। আমার উপর মাটি ঢালা হবে...।

আমার কবর কি প্রশস্ত হবে এবং হবে আলোকিত! আমার কবরে কি জান্নাতের বাতাস ও খোশবু আসবে?! ...

তোমার লেখা পড়ে আমার দিল বড় নরম হয়েছে। দু‘আ করি, আল্লাহ্ আমাদের সবার খাতেমা উত্তম করুন, ঈমানের সঙ্গে, আসানির সঙ্গে। আমীন।

যাকিয়া বিনতে শহীদুল্লাহ্, মাদানী পল্লী, টাঙ্গাইল

০০ তোমার রোযনামচা পেয়েছি। যে যাই ভাবুক, সত্য কথা আমাকে বলতেই হবে, রোযনামচা লেখায় মেয়েরা ছেলেদের ছাড়িয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। আসলে মেয়েদের সহায়হীনতার প্রতি এটা হলো আল্লাহ্র বিশেষ করুণা, আর  ছেলেদের ক্ষেত্রে সময় ও সুযোগের অপচয় ও বে-কদরীর মাশুল।

তোমার প্রতিদিনের রোযনামচা খুব সুন্দর ও মর্মস্পর্শী। তুমি লিখেছো, ‘খাতাকলম হাতে নেয়ার সময় ভিতরে যে জড়তার অবস্থাটা ছিলো, এখন ধীরে ধীরে যেন তার পরিবর্তন ঘটছে। একটু একটু করে যেন সজীবতা ফিরে আসছে। উদাসীনতার কুয়াসায় ঢাকা হৃদয়টা যেন একটু একটু করে কুয়াসামুক্ত হচ্ছে। কলমের স্পর্শে এমনই জাদুময়তা! ...

কুয়াসার সঙ্গে উদাসীনতার উপমা, সত্যি সুন্দর!

২৫. ২. ৪০ হিজরীর রোযনামচা পড়ে তো আমি অবাক! মাশাআল্লাহ্, চিন্তার মধ্যে যথেষ্ট গভীরতা রয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা ‘দরদে দিলের’ ছাপ রয়েছে। কাউমি মাদরাসার স্বীকৃতি উপলক্ষে তোমাদের ওখানে ‘শুকরানা মাহফিল’ হয়েছে। এ সম্পর্কে তুমি অন্তরের যে অনুভব অনুভূতি প্রকাশ করেছো, আমার অনুভব-অনুভূতিও প্রায় অভিন্ন। তুমি তো মেয়ে, তাই অনুভূতির প্রকাশ হয়েছে কোমল ¯িœগ্ধ!

ঠিকই বলেছো, ‘সেই কালো রাতটির কথা কীভাবে আমরা ভুলতে পারি! ...’

কামনা করি, তোমার সবকিছু সুন্দর থেকে সুন্দরতর হোক।

ভাই আবুল কালাম, চৌদ্দগ্রাম

০০ তোমাকে (আপনাকে) সবসময় আমার মনে পড়ে। সড়কদুর্ঘটনায় আহত আমাদের শিক্ষক মাওলানা ফায়রোযকে ইয়াদাত করার জন্য সেদিন ফেনী গিয়েছিলাম। চৌদ্দগ্রাম এলাকা পার হওয়ার সময় বারবার মনে হচ্ছিলো, আমাদের ভাই আবুল কালামের বাড়ীটা এখান থেকে কত দূর!

আমি এ উপাধির উপযুক্ত কি না, সেটা আলাদা কথা, তবে আমাকে ‘বটবৃক্ষ’ বলায় গৌরব বোধ করছি, কারণ আমি আর কিছু না হোক বটবৃক্ষের ছায়ায় ছিলাম।

পুষ্পের বিভিন্ন লেখা অনুসরণ করে লেখা তৈরী করে পাঠানো যায়। আবার পুষ্পে প্রকাশিত কোন লেখা সম্পর্কে মন্তব্যমূলক লেখা পাঠানো যায়, যা পাঠকের আদালতে প্রকাশিত হতে পারে।

ভাই মসঊর্দু-রহমান, তেজগাঁ, ঢাকা

০০ তুমি লিখেছো, বড় কষ্ট লাগে যখন দেখি, কোন উত্তর আসে না। ভেবেছিলাম, আর লেখাই পাঠাবো না। ...

আমারও কষ্ট হয় যখন কেউ কলম ধরে, কলমকে ভালোবেসে নয় এবং কলমের প্রতি নিবেদিত হয়ে নয়, শুধু ছাপার হরফে দেখার ‘লিপ্সায়’।

অথচ তুমি বলছো, ‘আমার অনেক বড় স্বপ্ন ছিলো, এখনো আছে, আমি অনেক বড় দার্শনিক হবো, অনেক বড় সাহিত্যিক হবো বাংলাভাষায় এবং আরবীভাষায়।...’

কথা হলো, রাগ করে যদি কলমটাই হাত থেকে নামিয়ে রাখো তাহলে...!

আচ্ছা, এবার রাগটা পড়লো তো!

এখন শোনো। লোকে বলে, সকালের সূর্যোদয় থেকে বোঝা যায়, সারাটা দিন কেমন যাবে!

তো তোমার কাছে জানতে চাই, ইনছাফের সঙ্গে বলো দেখি, তোমার জীবনপ্রভাতের সূর্যোদয় কেমন হয়েছে! স্বচ্ছ ছিলো আকাশ, না মেঘলা! মেঘেরা বৃষ্টি হয়ে ঝরেছে, না আকাশটাকে শুধু ...!

একপশলা বৃষ্টি যদি হয়ে থাকে, তারপর কি রোদ উঠেছে! রঙধনু দেখা দিয়েছে!

কলমের সঙ্গ ত্যাগ করার কথা ভুলেও কখনো বলো না; তুমি  তো লিখবে তোমার হৃদয়ের প্রেরণায়। *

 

তোমাদের চিঠি আমাদের পত্র

তুমি রসগোল্লার মত একটি চিঠি পাঠাও, আমি তোমাকে চমচমের মত একটি পত্র দেবো। পুষ্পের পাঠকবন্ধুরা সেই রসগোল্লা আর চমচম খেয়ে বলবে, আহা, কী মজা!!

সিফাত আহমদ, মাদরাসাতুল মাদীনাহ

০ আমরা তো পুষ্পের বিরহে অনেক কেঁদেছি!

০০ তাই! বিশ্বাস হয় না যে! আচ্ছা, প্রমাণরূপে চোখের পানিগুলা দেখাও দেখি!

০ পুষ্প কি আমাদের বিরহে কেঁদেছে?

০০ পুষ্প তো কাঁদে যখন তোমাদের বিরহ থেকে বঞ্চিত হয়!

০ পুষ্পকে আমি খুশী করলাম রোযনামচা পাঠিয়ে, পুষ্প কি আমাকে খুশী করবে সেটা প্রকাশ করে?

০০ বেশ তো হিসাবী প্রেমিক! জানো না বুঝি, প্রেমের জগতে লেনদেন নেই।

রশিদ আহমদ, পিরোজপুর

০ লোকে বলে, সাহিত্যের জন্য সাধনা করা লাগে, এখন জানিবার বিষয় হইল, সাধনার জন্য কী করা লাগে?

০০ বৎস, আনন্দ কর, সাধনার জন্য কিছুই করা লাগে না, শুধু নিয়মিত ‘সাধনার সালসা’ সেবন করা লাগে, তাহাতে নেশা নেশা ভাব হয় এবং নিদ্রার সঙ্গে বড় ভাব হয়!

আলফাযুদ্দীন, চরমটোয়া, নোয়াখালী

০ আমাকে এমন একটা ‘লফয’ বলে দিন, যা দিনে একশবার জপলে আমার কলম থেকে বিনা  মেহনতে লফযের ফোয়ারা জারি হবে।

০০ কিন্তু কথা হল, তুমি নিজেই তো ‘আলফায’, তোমার আবার আলাদা লফযের জরুরত কেন? আচ্ছা, বাতাসা বা তামাশা, যে কোন একটা লফয দ্বারা ভাগ্য পরীক্ষা করে দেখতে পারো। আমার আলাদা কোন ফিস লাগবে না, শুধু দয়া করে ফলাফল জানালেই খুশী হবো।

রজব আলী, রেকাবি বাজার, মুন্সিগঞ্জ

০ অতীতের যুগে লোকেরা নাকি দিনের বেলা চেরাগ জে¦লে হারিয়ে যাওয়া যৌবন তালাশ করতো। বর্তমান যুগে আমাদের কী তালাশ করা উচিত?

০০ কঠিন প্রশ্ন! অতীতে শুধু যৌবন হারিয়েছিলো, এখন তো অনেক কিছুই হারিয়েছে। কোনটি ছেড়ে কোনটি তালাশ করতে বলি! আচ্ছা, প্রথমে বুদ্ধি তালাশ করো; যদি পাও, বিবেক তালাশ করো; যদি পাও, নিজেকে তালাশ করো। যদি না পাও, ক্ষান্ত হও, কারণ তুমি কিছুই পাবে না।

শফীকুল ইসলাম, মধুপুর, টাঙ্গাইল

০ প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার না আসলে  তার কিছু করার নেই। তার কাজ হলো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করা, মন্তব্য করুন।

০০ মাপ করো ভাই, জীবনের বাকি ক’টা দিন মুক্তবায়ু সেবনের বড় ইচ্ছা আমার!

০ আপনাকে যদি ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ হতে ভোটে দাঁড়াতে বলা হয়?

০০ কিন্তু লোকেরা নাকি বলে, ওদের প্রার্থীর অভাব নেই, অভাব ভোটারের!

হাফসা বিনতে জালাল, রংপুর

০ আমাদের গ্রামের বাড়ীতে কিবেড়াতে আসবেন?

০০ আগে তোমাদের শহরের বাড়ীতে দাওয়াত পেলে বিবেচনা করে দেখা যায়।

০ ওখানে মস্ত একটা তেঁতুল গাছ আছে। ঐ তেঁতুলের আচার খুব স্বাদের। আপনাকে খাওয়াবো, আসবেন?

০০ না বাবা, শেষে ‘ওরা’ বলবে, তেঁতুল হুযূর!

তাসকীন বিন জানে আলম, ঢাকা

০ আপনি দশজন তরুণ চেয়েছেন। আমি হতে চাই সেই দশজন তরুণের একজন, যদি...

০০ মাপ করো, তোমার ‘যদি’ এর পরের অংশটা প্রকাশ করলাম না। তাতে কেউ হাসবে, কেউ কাঁদবে।

তাছাড়া আমি তো চাই ‘অরুণ’ তরুণ, ‘করুণ’ তরুণ নয়।

রাযিয়া বিনতে মাসরূর, টাঙ্গাইল

০ আমরা মেয়েরা সামনের কাতারে আসতে চাই, আপনি আমাদের পথ দেখাবেন?

০০ শোনো মেয়ে, যারা পথ দেখাবার আশায় থাকে, সামনের কাতার তাদের জন্য নয়। যারা নিজেরা পথ করে নেয় সামনের কাতার তাদের জন্য।

আরেকটা কথা, তোমরা সামনের কাতারে এলে নামায হবে! আসলে সমস্যা হলো, পিছনের কাতারেও তোমাদের জন্য এখন জায়গা নেই। সুতরাং পিছনের কাতারটা উদ্ধারের চেষ্টা করো, আমি সাধ্যমত সাহায্য করতে প্রস্তুত।

ইকরাম বিন আকরাম, সৈয়দপুর

০ আমি কাফিয়ার ছাত্র। এবারত পড়তে পারি, কিন্তু তরজমা ‘তুলতে’ পারি না। মশওয়ারা চাই যেন সহজে তরজমা তুলতে পারি।

০০ মিয়াঁ ছাব, তরজমা কোথায় তুলতে চাও, কাঁধে, না মাথায়, না শিকায়?

আমার মশওয়ারা হলো, তরজমা বেশ ভারী জিনিস, সেটা তোলার চেষ্টাই করো না। শুধু বাংলা এবারতের মত আরবী এবারত বোঝার চেষ্টা করো।

মশওয়ারা পছন্দ না হলে, ডাক্তার পরিবর্তন করতে পারো।

রাশেদ হোসাইন, চান্দিনা, কুমিল্লা

০ দরসে নেযামি থাকতে, মাদানী নেছাবের কী প্রয়োজন ছিলো?

০০ যে কারণে দরসে নেযামির উৎপত্তি, সেকারণেই মাদানী নেছাবের আত্মপ্রকাশ।

আছিয়া ইফফত আরা, বাশখালি

০ আপনার কি পাখী হয়ে আকাশে উড়তে ইচ্ছে করে?

০০ ইচ্ছে তো করে, তবে বুড়ীকে সঙ্গে করে, কিন্তু বুড়ীটা এমন ভারী, আর পাখনা দু’টো এত ছোট যে...!

রাফিয়া, তাবাস্সুম, রাজশাহী

০ আপনাকে প্রশ্ন করে আটকানো যায় না, কী রহস্য?

০০ রহস্য কিছু না, একটা ‘তাবাস্সুম’ পেলে খুশিমনে আটকে যেতে বান্দা হাযির!

(যদি আটকাতে চাও তাহলে আরো বুদ্ধিদীপ্ত, আরো জীবনঘনিষ্ঠ চিঠি পাঠাও, যাকে বলে একেবারে টাঙ্গাইলের চমচম!)

   হ্যাল্লো আদীব ব্রাদার!

০০ অসময়ে কোন্ বেয়াড়ার বেয়ারিং ডাক!

০ শুনতে পাই, আপনি দিনের বেলা নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকেন, হাচাই!

০০ শুনেছোই যখন, জ¦ালাতন করতে এলে কেন? তা এককাজ করো, নিজের চরকাটা এনেছো সঙ্গে! আপাতত তাতে তেল দিতে থাকো আমি জেগে ওঠা পর্যন্ত।

০ আমার আবার ‘টাইম সট’, তাই ঘুমের মধ্যেই একটা কথা জিগাইবার চাই। ঘুমের মধ্যে জওয়াব দিলেই চলবে!

০০ ভালো ‘জিলাপি’ তো! আচ্ছা, জিগাও কী জিগাইবার চাও! ঘুমটা এখনো হালকা আছে। ডিপে চলে গেলে আমি আবার শোনবার পারুম না।

০ আপনে বলে রাজনীতি করবার চান? পোলাপানগো লইয়া একটা দল বলে করতেছেন!

০০ বোকা! রাজনীতির পোকা যাগো মাথায় ওরা বুঝি নাকে তেল দিয়া ঘোমায়? ওরা তো মিয়াঁ চোখে তেল দিয়া জাইগা থাকে!

০ আপনার দলের নামখান কী চিন্তা করছেন?

০০ দেখো মিয়াঁ, আমি এখন ঘুমের ‘ডিপে’ চইলা যাইতেছি!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা