মুহাররম ১৪৪৫ হিঃ

রোযনামচার পাতা

মাদরাসাতুল মাদীনায় ঈদুল আযহা

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

৯/৯/৪৪ হি. শনিবার

বাইতুর-রাসূলে আমরা এ বছর পঞ্চম বর্ষ সমাপ্ত করেছি। আমাদের মধ্য হতে দশজনকে আদীব হুযূরের মেহমানরূপে মাদরাসাতুল মাদীনায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে, আমাদের প্রতি আদীব হুযূরের অনুভূতি কেমন তা সামান্য হলেও আজ বুঝতে পেরেছি।আদীব হুযূর আমাদেরসহ বাইতুর রাসূলের সমস্ত তালিবানে ইলমকে সাহরী ও ইফতারের দাওয়াত দিয়েছেন। আলহামদু লিল্লাহ্! ছুম্মা আলহামদু লিল্লাহ্! জাযাহুল্লাহু খায়রান। আমাদের যেন কষ্ট না হয় তাই আদীব হুযূর তার দাওয়াতের ব্যবস্থা করেছেন বাইতুর-রাসূলের দস্তরখানে। আমার অবশ্য খুব ভালো লাগতো যদি এই উছিলায় আজ আদীব হুযূরের সান্নিধ্যে যেতে পারতাম।

সবাই ইফতারের প্রতিটি পদ গ্রহণ করেছে, আমি শুধু ফল নিয়েছি। হোটেল থেকে আনা খাবার গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। একজন তালিবে ইলম বললো, এত বড় কোরবানি সে করতে পারবে না। আসলে এটা তো সামান্য কোরবানি, বরং কোন কোরবানিই নয়। তাছাড়া আমার সবসময় মনে থাকে ঐ বয়ানের শিরোনামটি, ছোট ছোট ভুল বড় বড় ক্ষতি’!

০০ মাদরাসার পক্ষ হতে যখন ব্যবস্থা করা হয়েছে, নিশ্চয় মজবূরির কারণে করা হয়েছে। পছন্দ না হলেও তোমার গ্রহণ করা কর্তব্য ছিলো। আসলে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত, এটা বড় বিষয়। আর এক্ষেত্রে বড়দের দিকনির্দেশনা গ্রহণ করাই উত্তম।আমারই ভুল হয়েছে। মাদরাসাতুল মাদীনাহর পক্ষ হতে ইফতারের দস্তরখান পাঠানো উচিত ছিলো। বুঝতে পারিনি যে, মাদরাসার ভিতরে ব্যবস্থা নেই।

২৩/৯/৪৪ হি, শনিবার

এতদিন শুধু আদীব হুযূরের প্রতি মুহব্বতের কারণে কলার ছাড়া জামা পরার চেষ্টা করতাম। এ বিষয়ে আদীব হুযূরের এত কঠিন অবস্থানের রহস্য জানা ছিলো না। আজ আদীব হুযূরের বয়ান থেকে জানলাম, পোশাকের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। জামার বৈশিষ্ট্য হলো কলারবিহীন। পক্ষান্তরে সার্টের বৈশিষ্ট্য হলো কলার। তাই কোন সার্ট কলার ছাড়া দেখা যায় না। তাহলে জামার মধ্যে কলার দেখা যাবে কেন!

আদীব হুযূর বললেন, মাঝে মধ্যেই সার্টের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের আগ্রাসন হয় জামার উপর, আবার চলেও যায়। মাঝখানে আমাদের গায়রাতের পরীক্ষা হয়ে যায়। আদীব হুযূর বলেন, এটা কিন্তু হালকা বিষয় না। ‘তাশাব্বুহ’ এর বিষয় এবং সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করার বিষয়।

এবছর মক্তবে এবং প্রথম বর্ষে যারা দাখেলা নেয়ার জন্য অবস্থান করেছে। কারা দাখেলা পাবে, কারা পাবে না, তখনো তা নির্ধারিত হয়নি। কিন্তু যাদের জামার পিছনে উপররের দিকে সার্টের মত তালিযুক্ত অংশ ছিলো, আদীব হুযূর ঐ জামাগুলি জব্দ করে জরুরি ভিত্তিতে নতুন জামা তৈরী করে দিয়েছেন। তাতে হুযূরের পঞ্চাশ হাযারের বেশী অর্থ ব্যয় হয়েছে। হুযূর কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, কিন্ত আর্থিক দায় অভিভাবকের উপর রাখেননি। হয়ত কারো ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু তালিবানে ইলমের প্রতি আদীব হুযূরের এই যে কল্যাণ-আকুতি, এর কী কোন তুলনা আছে! আদীব হুযূর তো ইচ্ছা করলেই আইন করে দিতে পারেন, তা তো তিনি করেন না। তিনি নিজের মত করে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আদীব হুযূরের চিন্তা গ্রহণ না করা সহজ, আদীব হুযূরের মত হওয়া কঠিন।

২৭/৯/৪৪ হি. বুধবার

আজ আদীব হুযূর এক বিরাট বিপ্লবী চিন্তার কথা বললেন। আমরা তো চূড়ান্ত পর্যায়ের গাফেল, তাই আমাদের মধ্যে কোন আলোড়ন সৃষ্টি হয়নি। এমনকি, মজলিসের পর এ বিষয়ে একটা কথাও হয়নি আমাদের নিজেদের মধ্যে।

তিনি বলেন, শখছ ও ব্যক্তির তো অভাব নেই, শখছিয়াত ও ব্যক্তিত্বের বড় অভাব। আমাদের তালিবানে ইলমকে হতে হবে ছাহিবে শাখছিয়াত ও ব্যক্তিত্ববান। ব্যক্তিত্ব ছাড়া না ব্যক্তির কোন মূল্য আছে, না তার ইলমের কোন কীমত আছে।

তুমি মাদরাসাতুল মাদীনার তালিবে ইলম। তুমি আকিল বালিগ! তোমার অর্থের প্রয়োজন! তোমার উচিত নয় মা-বাবার কাছে অর্থ চাওয়া। তারা যে তোমার জন্য অর্থ ব্যয় করেন, এটা তাদের উপর ওয়াজিব নয়। এটা তোমার প্রতি তাদের ইহসান। মা-বাবার কাছ থেকে চেয়ে অর্থ নেয়া এটা ব্যক্তিত্ববান তালিবে ইলমের জন্য আত্মমর্যাদার পরিপন্থী। তারা নিজেদের পক্ষ হতে যা করেন তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকা, এটাও ব্যক্তিত্ববান তালিবে ইলমের শান। হাঁ, প্রয়োজন হলে তুমি মাদরাসার কাছ থেকে অর্থ নিতে পারো। অন্য মাদরাসার কথা জানি না, তবে মাদরাসাতুল মাদীনাহ্ তোমাকে অর্থ দেবে। কারণ মাদরাসাতুল মাদীনাহ্ ‘দায়দায়িত্বসহ’ তোমাকে সন্তানরূপে গ্রহণ করেছেন। অন্যদের কাছে যা মাজায, মাদরাসাতুল মাদীনাহর কাছে তা হাকীকত!মাদরাসাতুল মাদীনাহ্ মৃত্যু পর্যন্ত তার প্রতিটি সন্তানের বিপদে আপদে পাশে থাকবে। মাদরাসা যদি এক লোকমা খায়, তুমি যেখানেই থাকো, তুমিও একলোকমা পাবে। এমন হবে না, মাদরাসা তো পোলাও খায়, আর তুমি ক্ষুধার্ত। এটা হলো মাদরাসার পক্ষ হতে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক।

এর পর কথা হলো, মাদরাসার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কেমন হতে হবে!  মাদরাসার চিন্তা চেতনার প্রতি তোমার বিশ্বস্ততা কেমন  হতে হবে! মাদরাসার ....এগুলো শুধু আদীব হুযূরের মুখের কথা নয়। এখানে এসে কিছু কিছু জেনেছি, আদীব হুযূর তার সন্তানদের জন্য কী করতে পারেন, কত দূর যেতে পারেন।রহায় সুবহান! এ যুগেও আছেন এমন মানুষ!

২৪/১০/৪৪ হি. সোমবার

মাদরাসাতুল মাদীনার পরিবেশ খুব সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন। সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি আদীব হুযূরের দিন-রাতের যে চিন্তা-ফিকির এবং যে উদার অর্থব্যয় তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না, কিন্তু ...  আমরা যদি একটু সচেতন ও রুচিসম্পন্ন হতে পারতাম তাহলে অনেক কিছুই হতে পারতো! সৌন্দর্য, পরিচ্ছন্নতা ও রুচিশীলতা, এগুলোর যথেষ্ট সুপ্রভাব রয়েছে সমাজে!

এখন যাদের বলা হয়, আধুনিক সমাজ, শিক্ষিত সমাজ, অভিজাত সমাজ, এককথায় সুশীল সমাজ, তাদের সামনে আমাদের বড় হীনম্মন্যতাবোধ রয়েছে, অস্বীকার করার উপায় নেই। এর অনেক কারণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ আমাদের অসুন্দর, অপরিচ্ছন্ন ও অরুচিশীল জীবনযাপন।

২০/১১/৪৪হি. শনিবার

গতরাতে আমি দুইজন তালিবে ইলমের সঙ্গে রাতের কিছু সময় রিবাত (আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দেয়া)এর দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। কিছু সময়ের জন্য হলেও পুরো মাদরাসার নিরপত্তার দায়িত্ব, আল্লাহর হিফাযতের পর, আমাদের উপর অর্পিত হয়েছিলো। এটা অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়।....

১৭/১২/৪৪ হি. বৃহস্পতিবার

আজ জীবনে প্রথম পায়েশ রান্না করলাম। আলহামদু লিল্লাহ্! আমার এক ছোট ভাই সাহায্য করেছে। জাযাহুল্লাহু খায়রান। ‘রাফতা রাফতা’ রান্না শিখে ফেলবো ইনশাআল্লাহ্। সর্বক্ষেত্রে না হলেও জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আাত্মনির্ভরশীল-তার কোন বিকল্প নেই। মাদরাসাতুল মাদীনাহ্ যে মহান উদদ্দেশ্য সামনে রেখে তালিবানে ইলমকে রান্নার খেদমত শেখাতে চায় সে উদ্দেশ্যের জন্য নিজেকে আমি নিবেদন করবো ইনশাআল্লাহ্। মাতবাখকে কেন্দ্র করে আদীব হুযূরের যা কিছু চিন্তাফিফির আল্লাহ্ যেন তা কবুল ও মকবূল করেন।

কয়েকদিন আগে আমরা দশজন মাদানী মক্তবের শিশুদের কাপড় ধুয়ে দিয়েছিলাম। (যদিও মাদানী মক্তবে ধোলাইযন্ত্র/ধোলাইকা আছে)আদীব হুযূর সেদিন মাগরিবের পর আমাদের অনেক কথা বলেছিলেন। একটি কথা এই যে, কাপড় ধোয়া তো মায়েদের কাজ। তো যারা মায়েদের কাজ করেছে আশা করা যায়, তাদের যখন সন্তান হবে, আল্লাহ্ তাদের সন্তানদের জীবনে এর সুফল দান করবেন। তিনি আরো বলেছিলেন, রান্না করা, সংসারে এটাও মায়েরা করেন। তো যারা মায়ের মমতা নিয়ে মায়ের মত সুস্বাদু করে রান্না করে তালিবানে ইলমের মুখে খাবার তুলে দেবে....

ফারহান ইশরাকআদীব হুযূরের মেহমান/ষষ্ঠবর্ষের তালিবে ইলম


***

আমার রোযনামচা

ঈদুল ফিতর বলি, বা ঈদুল আযহা, এতদিন আম্মু-আব্বুর সঙ্গেই করেছি। এবারই প্রথম উভয় ঈদ মাদরাসায় করলাম এবং মাদরাসাতুল মাদীনায়।আম্মুর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় আম্মু কান্না করছিলেন।

০০ তুমি লিখেছো, কান্না করছিলো। কেন এতটুকু সম্মান কি তোমার আম্মুর প্রাপ্য নয় তোমার কাছে!

০ আম্মু কান্না করলে সাধারণত আমারো কান্না পায়। কিন্তু আজ কান্না এলো না। আম্মু তো জানে আমি ‘মাদরাসায়’ আছি, আর মাদরাসা মানে তো সাধারণ মানুষ যা জানে!....

০০ তোমার আম্মুর কাছে জানতে ইচ্ছা করে, তাঁর সন্তান কি মক্তবে পড়ে, না....! হায়রে মায়েদের অবুঝ মমতা!

০ একটু চুপ থেকে আম্মুকে বললাম, আম্মু জানো, আমি কোন মাদারাসায় আছি! যে মাদারাসায় রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামে আলাদা কোরবানি হয়! যে মাদরাসায় হাজেরা (আ.), আছিয়া (আ.), মারয়াম (আ.) এবং হযরত খাদীজা (আ.)এর নামে আলাদা আলাদা যাবীহা কোরবানি হয়। সেই কোরবানি দেখার সৌভাগ্য তোমাার ছেলের হয়েছে মা! নিজের চোখে দেখেছি মা, আল্লাহর রাসূলের নামে কোরবানি হওয়া যাবীহাটিকে কীভাবে আদীব হুযূর আদর করেছেন। কোরবানি হওয়া পর্যন্ত কীভাবে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কাউকে ছাতা পর্যন্ত ধরতে দেননি। নিজের চোখে দেখেছি শত শত পরিবারকে কেমন ইকরাম ও সম্মানের সঙ্গে কোরবানির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গোশত হাদিয়া দিতে। (সঙ্গে আবার একশটাকা হাদিয়া, আর মায়েদের সঙ্গে আসা বাচ্চাদের জন্য চকোলেট।)এমন পবিত্র দৃশ্য তো দেখার মধ্যেও.....

০০ আচ্ছা, তিরস্কার বরদাশত করার যোগ্যতা কি তোমার আছে! তাও প্রকাশ্যে কাগজের পাতায়!শোনো, তোমার বানানের করুণ দশা দেখে, লেখাগুলো কাগজের ঝুড়িতে ফেলেই দিচ্ছিলাম। মযমূন দেখে মনে হলো, সবার জন্য শিক্ষার বিষয় রয়েছে তাই এ লেখাটা রেখে দিলাম।

০০ সে কান্না করে, আর সে কাঁদে, এখনো এ পার্থক্য বুঝতে পারোনি, মাদানী নেছাবে ছয়বছর পড়ার পরো!

০০ এ লেখাগুরো তো পুষ্পে প্রকাশের জন্য দিয়েছো। তোমার চারপাশে অন্তত পঞ্চাশটা বাংলা লোগাত আছে। একটু লোগাত খোলার প্রয়োজনও বোধ করলে না! আবার লেখা ছাপা না হলে ‘গোস্সা’ করো! পুষ্পের পাতাগুলো তোমাদের কাছে তাহলে এতই সস্তা!

০০ যাই হোক, তোমার লেখার ভালো দিক এই যে, তাতে সাবলীলতা রয়েছে। শুধু যত্নের অভাব। শুরু থেকে যদি কলমের প্রতি, লেখার প্রতি যত্নবান হতে তাহলে ...এখন অন্তত সেই চেষ্টা করো। আল্লাহ্ তাওফীক দান করুন, আমীন।

***


মাদরাসাতুল মাদীনায় ঈদুল আযহা

আল্লাহ্ যাকে উম্মতের প্রতি দরদ-ব্যথা দান করেন তার পক্ষেই সম্ভব এমন উত্তম চিন্তা করা। কেমন নূরানি ও জ্যোতির্ময় হতে হবে মুসলিমের কোরবানি! আল্লাহর শোকর আদীব হুযূররের কাছ থেকে কিছু শেখার এবং উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি।

ঈদুল আযহার কোরবানি, এর প্রথম হাকীকত হলো, আল্লাহর মুহব্বতের সামনে সমস্ত মুহব্বতের কোরবানি করার শিক্ষা গ্রহণ। দ্বিতীয় হাকীকত হলো, কোরবানি, আল্লাহর পক্ষ হতে ধনী-গরীব সমস্ত বান্দার জন্য আসমানের মেহমানদারির দস্তরখনা। ধনীরা যাবীহা কোরবানি করবে, আর সেই মেহমানদারিতে গরীবকে শরীক করবে। কোরআনির এই যে বড় দু’টি হাকীকত এর উত্তম নমুনা আমরা আদীব হুযূরের চিন্তায় কর্মে দেখতে পেয়েছি।

ঈদুল আয্হার কয়েকদিন আগে থেকেই আমাদের ব্যস্ততা শুরু হয়, যাতে সর্বসুন্দরভাবে আল্লাহর বান্দাদেরকে আল্লাহর মেহমানদারির দস্তরখানে শরীক করা যায়। আদীব হুযূর আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, কী অনুভ‚তি নিয়ে আমরা  এই মহান খেদমত আঞ্জাম দেবো। প্রথম কথা হলো, খেদমত যেন সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও সম্মাজনক হয় সে জন্য মেহমানদের কাছে গিয়ে ‘বিতাকা’ বিতরণ করা। বিতাকায় লেখা থাকে: ‘আলিমসমাজের পক্ষ হতে কোরবানির হাদিয়া’।

তালিবানে ইলমের জামাত কী আন্দাযে বিতাকা বিতরণ করবে, এ শিক্ষাও দিয়েছেন আদীব হুযূর। প্রত্যেক ঘরে গিয়ে প্রথমে সালাম, তারপর কুশল বিনিময় এবং দুঃখপ্রকাশ যে, সবসময় আপনাদের খবর নিতে পারি না। তারপর একথা বলা যে, আল্লাহর পক্ষ হতে আল্লাহ্র দস্তরখানে আপনাদের করার জন্য দাওয়াত দিতে এসেছি। আপনারা দাওয়াত গ্রহণ করলে খুশী হবো।

বিতাকা বিতরণের সময় দেখা যায়, নির্ধারিত এলাকার বাইরে থেকেও আল্লাহর বান্দারা আসেন এবং অনুরোধ করেন। আদীব হুযূর বলেছেন, তাদেরকে অপরাধবোধের সঙ্গে মা‘যিরাত করতে হবে যে, আপনাদেরও শরীক করতে পারলে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করতাম। কিন্তু সামর্থ না থাকার কারণে...আপনার দু‘আ করুন, আল্লাহ্ যেন আমাদের সামার্থ্য....!

আল্লাহর শোকর, এভাবে বলার সুফল নিজের চোখেই দেখেতে পেয়েছি যে, মানুষ কী পারিমাণ...এরপর কোরবানীর যবীহা সংগ্রহের বিষয়। সবসময় শুনেছি, কোরবানির পশু/জন্তু বা কোরবানির গরু/ছাগল; আদীব হুযূরের কাছে শুনেছি কোরবানির যাবীহা, (বড় যাবীহা এবং ছোট যাবীহা)! এখান থেকেই বোঝা যায়, চিন্তা ও চেতনার তারবিয়াত কত জরুরি! যাবীহা সংগ্রহ করার সময় আমাদের আন্দায কী হবে, তার শিরোনাম হলো এই হাদীছ: আল্লাহ্ রহম করুন ঐ বান্দাকে যে খরিদ করার সময় উদারতা অবলম্বন করে.....যিম্মাদার হুযূরকে দেখেছি, কীভাবে কথা দিয়ে এবং ক্রেতার চাহিদার প্রতি সম্মান দেখিয়ে কথা বলেন, আর ক্রেতা কেমন আপ্লুত হয়, যিনি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আদর যত্নের সঙ্গে যাবীহাগুলো প্রতিপালন করেছেন।

কোরবানি পর্যন্ত যাবীহাগুলোর প্রতি আমাদের আচরণ কেমন হবে তা শুধু আদীবহুযূরের একটি কথা থেকেই সুস্পষ্ট। আদীব তার পুত্র (যিম্মাদার হুযূর)কে বলেন, এই যাবীহাগুলো তোমার স্থলবর্তী। সন্তানের বিপরীতে এই যাবীহা কোরবানি করা হয়।....

আল্লাহর দস্তরখানের মেহমান যা মাদরাসায় আসবেন তাদের জন্য মাদরাসা এত সুন্দর করে সাজানো হয় ফুল দিয়ে, ফুলগাছ দিয়ে যে আমাদেরও অন্তরে প্রশান্তি হয়, তারাও খুশী হন। কোরবানির উদ্বোধন হয়েছে আদীব হুযূরের পক্ষ হতে আল্লাহর নবীর নামে একটি যাবীহা কেরবানি করে। এভাবে ও দ্বিতীয় দিনে ত্রিশটি যাবীহার কোরবানি হয়েছে। হযরতপুরে প্রথম দিন, আশরাফাবাদে দ্বিতীয় দিন হাদীয়া বিতরণ করা হয়েছে। উভয় স্থানে বিতরণের যে দৃশ্য তা এমনই জান্নাতি দৃশ্য ছিলো যে,.......

০০ তোমার লেখার আন্দায যেমন ভালো তেমনি অন্তরের স্পর্শ রয়েছে বলে মনে হয়। বানানও বিশুদ্ধ। তোমার পুরো লেখাটি দিতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু পুষ্পের পাপড়ির সীমাবদ্ধতা।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা