আল কুদসসংখ্যা (৩/২)

রোযনামচার পাতা

দ্বিতীয় পাতা

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

প্রতিবাদসভা

আজ আমাদের মাদরাসায় প্রতিবাদসভা হলো। কয়েকজন ছাত্র বক্তব্য রাখলো নিজেদের ভিতরের টগবগ করা ক্ষোভ ও বিক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়ে।

অজপাড়া গায়ের এই প্রতিবাদসভায় বিশ্বরাজনীতির মোড় তো আর পরিবর্তন হবে না, তবে মুসলিম উম্মাহর ব্যথায় যে আমরা সামান্য ক’টি প্রাণ ব্যথিত, তার প্রমাণ পাওয়া গেলো।

দুনিয়ার কোথাও আমাদের এ প্রতিবাদী কণ্ঠ পৌঁছবে না, ঠিক; তবে আকাশের ঠিকানায় তো পৌঁছতেই পারে।

সেখানে তো যালিমের সবল কণ্ঠের চেয়ে মযলুমানের দুর্বল কণ্ঠের মূল্য ও কদর বেশী। বরং যালিমের কণ্ঠ যত উচ্চ হোক তার কোনই মূল্য নেই সেখানে। পক্ষান্তরে মযলূমানের ফরিয়াদেরই মূল্য সেখানে।

আলকুদ্সের জন্য তো এত দূর থেকে আমাদের কিছু করার উপায় নেই, আমরা ক’জন মিলে আরাকানের মুহাজিরীনের জন্য অতি সামান্য কিছু অর্থ সংগ্রহ করেছি। মশওয়ারা চলছে, কীভাবে এ অর্থ মুহাজিরীনের হাতে পৌঁছানো হবে।

 

২৩-৩-৩৯/১৩-১২-১৭

আজ জেরুসালেমট্রাজেডির উপর ইস্তাম্বুলে ওআইসির জরুরি শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা।

সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যেও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, কী ঘোষণা আসছে মুসলিমবিশ্বের সর্ববৃহৎ এই সংস্থার জরুরি শীর্ষ সম্মেলন থেকে!

সউদী আরব এমন বে-নেকাব হয়ে সামনে আসবে কল্পনায়ও ছিলো না। এমন একটি সম্মেলনে বাদশাহ বা তার পুত্র যোগ দিচ্ছেন না, এমনকি তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও না! তাহলে মুসলিম উম্মাহর অভিভাবকত্ব করার কী অধিকার থাকলো সউদী আরবের?! খাদেমুল হারামাইনের?! সউদী আরব এখন ব্যস্ত কাতারের মুসলিম জনগণকে শায়েস্তা করার চিন্তায়! সারা বিশ্বে এমন কোন মুসলিম জনপদ নেই যেখানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়নি। বাদ শুধু  সউদী আরব! এটা তাহলে কিসের আলামত?!

 

জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী?

আমাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, তোমার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী? খুব অসহায় বোধ করি। কী বলবো বুঝতে পারি না। নির্জনে এসে নিজেকেই তখন প্রশ্ন করি, আসলেই তো, আমার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী?! ....

সম্পাদক ঃ আশ্চর্য! অসহায় বোধ করবে কেন? তোমার এবং প্রতিটি মানুষের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তো স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা বলে দিয়েছেন। আমাদের সবার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করা। সব তো পরিষ্কার।

হাঁ, প্রশ্ন হতে পারে ভবিষ্যত জীবনে আমার কর্ম ও কমপন্থা কী হবে? এটা তো নির্ধারণ করা কঠিন কিছু নয়? প্রথমে তুমি দেখবে তোমার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা কী যোগ্যতা রেখেছেন। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই রয়েছে কোন না কোন কাজের যোগ্যতা।

তুমি চিন্তা করে দেখবে তোমার মধ্যে কী যোগ্যতা আল্লাহ তা‘আলা রেখেছেন। সে অনুযায়ী তুমি একটা কর্মক্ষেত্র নির্বাচন করবে এবং সেই কর্মক্ষেত্রের উপযোগীরূপে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করবে।

আমার এক তালিবে ইলমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রবন্ধু জিজ্ঞাসা করেছিলো, তোমার জীবনের ‘ভিশন’ কী? সে একটুও না ভড়কে পাল্টা জিজ্ঞাসা করলো, তার আগে তুমি বলো, ভিশন মানে কী

ভিশন মানে বুঝো না! মানে টার্গেট, মানে লক্ষ্য।

তা এমন শব্দ বলো কেন যা শ্রোতা বোঝে না? আমি যদি আরবী শব্দ বলি, তোমার তো একই রকম অসুবিধা হবে। এটা কথা বলার আদবের খেলাফ।

যাই হোক, শোনো আমার জীবনের লক্ষ্য হলো হালাল রুজি অর্জন করা এবং হারাম রোজি থেকে বেঁচে থাকা। এ জন্য আমি চিন্তা করেছি, প্রথাগত ছাত্রত্ব যখন সমাপ্ত হবে, দেশে চলে আসবো। কিছু জমী ভাড়া নেবো। একটা বাগান করবো...। এজন্য এখন থেকে আমি বাগান তৈরী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করছি। তা তুমি আমাকে নিয়ে এত ভাবছো কেন? তোমার নিজের সম্পর্কে ভাবনা কি শেষ হয়ে গেছে?!

 

২৬-৩-৩৯ হি.

জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভ যেন শেষ হবে না কখনো অধিকৃত ফিলিস্তীন ভূমিতে! গতকালও প্রচ- বিক্ষোভ হয়েছে খোদ জেরুসালেমে। ইসরাইলী সেনারা নৃশংসতার চূড়ান্ত করেও বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থ হচ্ছে। গতকাল যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে নয়া দিগন্তে তাতে দেখা যায় বিক্ষোভ -কারী এক ফিলিস্তীনীকে লাথী মেরে মাটিতে ফেলে দিয়েছে ইহুদিসেনা। কিন্তু ইহুদির লাথি খেয়েও দমে যায়নি বিক্ষোভকারী। মাটিতে পড়েও সে তার প্রতিবাদী মূর্তি বজায় রেখেছে।

তাকে ঘিরে ধরা সেনারা অবাক হয়ে শুধু দেখছে। হয়ত ভাবছে, এত সাহস আসে কোত্থেকে এই গরীব ভুখা ফিলিস্তীনীগুলোর মধ্যে?! মৃতুর ভয়-ডর কি নেই এদের মধ্যে!!

আসলে ঘরের মালিক দরিদ্র বলে হামলাকারী ডাকাতকে ভয় পাবে কেন? ভয় থাকে ডাকাতের মনে, হাতে অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও।

আজ সারাটা দিন মনটা আমার বড় বিষণœ। কয়েকজন ছাত্র মিলে আজ পড়া হলো ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। অবাক হয়ে ভাবছি, এই যদি হন বঙ্গবন্ধু তাহলে বর্তমান আওয়ামি লীগ যা করছে, যা বলছে তা কী?! আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের প্রত্যেক কর্মীকে বসিয়ে বসিয়ে বইটি পড়ানো দরকার। তারপর তাদের বলা দরকার, হয় এগুলো তোমরা গ্রহণ করো, আর না হয় এই মৃত মানুষটির নাম ব্যবহার করা ছেড়ে দাও।

আশ্চর্য, মানুষ কি বিবেকের কাছে কোন দায় বোধই করে না!!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা