সফর ১৪৩১ হি:(১৫)

কুরআন ও হাদিস

হাদিসের আলো

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

হযরত আনাস (রা) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করেন, আর তিনি আপন প্রতিপালক (আল্লাহ রাববুল আলামীন)  হইতে বর্ণনা করেন। আল্লাহ বলেন, আমি আমার প্রতি আমার বান্দার ধারণার অনুরূপ আচরণ করি। আর যখন সে আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তাহার সঙ্গে থাকি। সুতরাং সে যদি মনে মনে আমাকে স্মরণ করে, আমিও তাহাকে মনে মনে স্মরণ করি। আর যদি সে আমাকে কোন মজলিসে স্মরণ করে, আমি তাহাকে উহার চেয়ে উত্তম মজলিসে স্মরণ করি। আর বান্দা যখন আমার দিকে একবিঘত অগ্রসর হয়, আমি তাহার দিকে একহাত অগ্রসর হই। আর যখন সে আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয়, আমি তাহার দিকে দুইহাত অগ্রসর হই। আর যখন সে আমার দিকে হাঁটিয়া আসে, আমি তাহার দিকে দৌড়াইয়া আসি। (বুখারী) 

ফায়দা- আলোচ্য হাদীছে কুদসী দ্বারা বোঝা যায়, আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে কত ভালোবাসেন। ইহা কত বড় সুসংবাদ যে, বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরণ করে, মুখের যিকির, বা কলবের ফিকির দ্বারা আল্লাহও বান্দাকে স্মরণ করেন! বান্দা তো আল্লাহকে স্মরণ করিবে মানুষের সভায়, কিন্তু আল্লাহ তাহাকে স্মরণ করিবেন ফিরেশতাদের মজলিসে। দুনিয়ায় কোন প্রতাপশালী লোকের সঙ্গ লাভে সক্ষম হইলে মানুষ ভাবে, তাহার কোন ভয় নাই। অথচ সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলিতেছেন, বান্দা যখন আমাকে স্মরণ করে, আমি তখন তাহার সঙ্গে থাকি। তো যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গ লাভ করিবে এবং আল্লাহ যাহার সঙ্গে থাকিবেন, দুনিয়া-আখেরাতে তাহার ভয় কিসের! সুতরাং আমরা বেশী বেশী আল্লাহর যিকির করিব, যেন আল্লাহর সঙ্গ ও নৈকট্য অর্জনের মাধ্যমে চিরসৌভাগ্যের অধিকারী হইতে পারি।

বান্দার আরও কর্তব্য হইল বেশী বেশী নেক আমল করা এবং গোনাহ হইতে বাঁচিয়া থাকা। তবে দুর্বল বান্দার পক্ষে আমলে ত্রুটি করা এবং গোনাহে লিপ্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তখন যেন সে ইসতিগফার করে এবং এই সুধারণা পোষণ করে যে, অবশ্যই আল্লাহ আমার গোনাহ মাফ করিয়া দিবেন। মনে রাখিবে, মাগফিরাতের উপর ভরসা করিয়া গোনাহ করা যেমন উচিত নহে, তেমনি গোনাহের কারণে মাগফিরাত হইতে নিরাশ হওয়া উচিত নহে।

ইহা সুপরীক্ষিত যে, বান্দাহ আল্লাহ সম্পর্কে যেরূপ ধারণা করে আল্লাহ বান্দার প্রতি সেরূপ আচরণই করেন। সুতরাং যখন দু‘আ ও প্রার্থনা করিবে তখন অন্তরে এই বিশ্বাস অবশ্যই রাখিবে যে, আল্লাহ আমার দু‘আ ও প্রার্থনা কবুল করিবেন।

বান্দা যেন সহজে বুঝিতে পারে, এই জন্য আল্লাহ তা‘আলা একটি স্থুল উদাহরণ দিয়া বুঝাইয়াছেন যে, বান্দাকে আল্লাহ তা‘আলা তাহার আমলের চেয়ে অনেক বেশী আজর দান করেন। (আল্লাহ আমাদিগকে তাঁহার প্রতি সুধারণা পোষণ করিবার তাওফীক দান করুন।) হাদীছ শরীফে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পাঠের অনেক ফযীলত এসেছে। মুমিন বান্দা যখন একবার নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পড়ে তখন আল্লা তাআলা তার উপর দশবার দুরূদ পড়েন, অর্থাৎ তাকে দশগুণ নেকি দান করেন। দুরূদ শরীফের একটি বরকত এই যে, যে বেশী বেশী দুরূদ পড়বে, আল্লাহ তাআলা স্বপ্নযোগে তাকে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীদার ও যিয়ারাত-সৌভাগ্য দান করবেন।   

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা