মুহররম ১৪৩২ হি: (১৮)

কুরআন ও হাদিস

কুরআনের আলো

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

বিসমিল্লাহির-রাহমানির রাহীম 

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, না, আপনার প্রতিপালকের শপথ! তাহারা মুমিন হইবে না যতক্ষণ না তাহারা আপনাকে নিজেদের বিবাদের বিষয়ে মীমাংসাকারীরূপে মানিয়া লয়। অতঃপর আপনার ফায়সালা সম্পর্কে নিজেদের অন্তরে কোন বিরূপতা বোধ না করে, বরং আন্তরিকভাবে মানিয়া লয়  

ফায়দা-

মুসলিম উম্মাহর শান্তিপূর্ণ সামাজিক জীবনের জন্য আলোচ্য আয়াতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে বসবাস করিতে গেলে জীবনের বিভিন্ন চাহিদা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করিয়া মতবিরোধ, মনোমালিন্য, এমনকি ঝগড়া-বিবাদ হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এই জন্য সমাজে আদালত ও বিচার-ব্যবস্থা রহিয়াছে। তবে আদালতের বিচারে বিবাদের মীমাংসা হয় বটে, কিন্তু মনোমালিন্য দূর হয় না, বরং পরস্পরে স্থায়ী দূরত্ব সৃষ্টি হইয়া যায়। গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার যে, ইহার কারণ কী? কারণ এই যে, আধুনিক বিচারব্যবস্থার ভিত্তি ঈমান ও আখেরাত নহে এবং আল্লাহ ও রাসূলের প্রবর্তিত শরীয়ত নহে, বরং দুনিয়ার জীবন এবং মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত আইন হইল ভিত্তি। আর দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন যাহার উদ্দেশ্য, সে অনুকূল ফায়ছালা ছাড়া কীভাবে সন্তুষ্ট হইতে পারে? তদ্রূপ মানুষের বিধান ও বিচার একজন মানুষ কীভাবে খুশিমনে মানিয়া লইতে পারে? পক্ষান্তরে বিচারের ভিত্তি যদি হয় আখেরাত এবং বিচার যদি হয় ঐ মহান সত্তার নাযিলকৃত শরীয়তের ভিত্তিতে তখন ফায়ছালা বিপক্ষে গেলেও সান্ত্বনা থাকে যে, ইহা আমার খালিকের বিচার, আর চূড়ান্ত বিচার তো হইবে আখেরাতে। এ সান্ত্বনা ছাড়া কোন বিচার, উহা যতই ইনছাফপূর্ণ মনে হউক উভয় পক্ষকে সন্তুষ্ট করিতে পারে না এবং বিচারে আপাত মীমাংসা হইলেও সমাজে সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি হইতে পারে না। আমাদের জীবনে ইহা এমনই এক চাক্ষুষ সত্য যাহা কোন প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। 

আলোচ্য আয়াতের মতে মুমিন হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হইল নিজেদের বিরোধের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিচার গ্রহণ করা। দ্বিতীয় শর্ত হইল ফায়ছালা পক্ষে হউক বা বিপক্ষে, সন্তুষ্ট চিত্তে উহা মানিয়া লওয়া। 

আধুনিক বিচারব্যবস্থায়ও যেহেতু আদালতের বাহিরে মীমাংসার সুযোগ রহিয়াছে সেহেতু প্রকৃত মুমিনের অবশ্য কর্তব্য হইল কখনই অনৈসলামী বিচারব্যবস্থার দ্বারস্থ না হওয়া, বরং নবীর স্থলবর্তীরূপে কোন বিজ্ঞ মুফতিকে বিচারকরূপে গ্রহণ করা এবং উভয়পক্ষ সন্তুষ্ট চিত্তে তাহার বিচার মানিয়া লওয়া এবং ইহা বিশ্বাস করা যে, এই সন্তুষ্টচিত্ততার বিরাট আজর আল্লাহর নিকট রহিয়াছে। যাহারা শরীয়তী বিচারের পরিবর্তে অনৈসলামী বিচারব্যবস্থার দ্বারস্থ হয় তাহারা ভাবিয়া দেখুক যে, এই আয়াত অনুযায়ী তাহদের ঈমানের অবস্থা কী? শরীয়তী বিচারের উপর অনৈসলামী বিচারকে প্রাধান্য দেওয়ার কী জওয়াব তাহারা কেয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট দিবে?

কুরআন সম্পর্কে

জনৈক নওমুসলিম বলেন, কোরআনে সুমুদ্রের বিবরণ দেখে আমার ধারণা হলো যে, সামুদ্রিক জীবন সম্পর্কে নিশ্চয় মুহম্মদ-এর বিরাট অভিজ্ঞতা ছিলো। কারণ এছাড়া এরূপ বিবরণ দেয়া কিছুতেই সম্ভব নয়, বরং বাস্তব অভিজ্ঞতার পরো সবার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু যখন আমাকে বলা হলো যে, তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিরক্ষর এবং জীবনে কখনো তিনি সমুদ্রভ্রমণ করেননি তখন আমার বিশ্বাস হলো যে, অবশ্যই এটা ঐ সত্তার কালাম যিনি সমুদ্র সৃষ্টি করেছেন।  


 


শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা