শাবান ১৪৩১হিঃ (১৭)

কুরআন ও হাদিস

কুরআনের আলো

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

বিসমিল্লাহির-রাহমানির রাহীম

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, আর তোমার প্রতিপালক বিধান দিয়াছেন যে, তোমরা শুধু তাঁহার ইবাদত করিবে, আর পিতা-মাতার সহিত সদাচার করিবে। যদি তোমার নিকট তাহাদের একজন বা উভয়ে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তুমি তাহাদের উদ্দেশ্যে ‘উফ’ বলিও না এবং তাহাদিগকে তিরস্কার করিও না, বরং তাহাদের উদ্দেশ্যে কোমল কথা বল, আর সদয় হইয়া তাহাদের জন্য বিনয়ের ডানা বিস-ার কর, আর বল, হে প্রতিপালক, দয়া করুন তাহাদের প্রতি, যেমন তাহারা প্রতিপালন করিয়াছেন আমাকে ছোটকালে।

(বনী ইসরাঈল)

ফায়দা- আয়াতের মূল উদ্দেশ্য হইল সন-ানকে পিতা-মাতার প্রতি সদাচারে উদ্বুদ্ধ করা। দেখুন, আয়াতের শুরুতে সংক্ষেপে আল্লাহর ইবাদতের আদেশ করা হইয়াছে, অতঃপর বিশদভাবে পিতা-মাতার প্রতি সাদা- চারের কথা বলা হইয়াছে। আল্লাহর ইবাদত ও পিতা-মাতার প্রতি সদাচারের আদেশ, উভয়টি একসঙ্গে উল্লেখ করিয়া সম্ভবত পিতা-মাতার বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব প্রকাশ করা উদ্দেশ্য। কোরআনের অন্যান্য স'ানেও পিতা-মাতার প্রতি সদাচারের কথা আছে সেখানেও বক্তব্যের শুরুতে রহিয়াছে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত ও শোকরের আদেশ এবং শিরক-এর নিষেধ, অথবা রহিয়াছে ‘অছিয়ত’ শব্দটি, যা আদেশের সর্বোচ্চ শব্দ। এসবেরই উদ্দেশ্য হইল পিতা-মাতার প্রতি সদাচারের গুরুত্ব প্রকাশ করা। সন-ানের জীবনে পিতা-মাতার চেয়ে উত্তম উপকারী ও দয়ালু আর কে হইতে পারে? সুতরাং সন-ানের কর্তব্য হইল একমাত্র শিরক ছাড়া এবং শরীয়তের বিরুদ্ধাচরণ হয়, এমন বিষয় ছাড়া আর সকল বিষয়ে পিতা-মাতার আদেশ মান্য করা এবং কৃতার্থতার সঙ্গে তাহাদের খিদমত করিয়া যাওয়া। সন-ান পিতা-মাতার বেশী মুখাপেক্ষী থাকে শৈশবে, আর পিতা-মাতা সন-ানের মুখাপেক্ষী হন বার্ধক্যে। তাই শৈশবে পিতা-মাতার যে অবদান, সন-ানকে তাহা স্মরণ করাইয়া তাহাদের বার্ধক্যের প্রতি সদাচারের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হইয়াছে। বার্ধক্যে পিতা-মাতার আচরণ অনেক সময় যুক্তি অনুসরণ করে না, যেমন শৈশবে সন-ানের বহু আচরণ যুক্তিসঙ্গত হয় না, তবু পিতা-মাতা কত সদয় থাকেন! সুতরাং সন-ানও যেন বার্ধক্যে তাহাদের প্রতি সদয় থাকে, তাহাদের সামনে বিরক্তির সামান্য ‘উফ’ শব্দটিও যেন উচ্চারণ না করে। বস'ত আলোচ্য আয়াতে যে ভাষা ও বাকশৈলীতে পিতা-মাতার প্রতি সদাচারের আদেশ করা হইয়াছে তাহার পর কোন নেক সন-ান কখনো পিতা-মাতার অবাধ্য হইতে পারে না। তুমি যদি নেক সন-ান হও তবে পিতা-মাতার সন'ষ্টি অর্জন করো এবং তাহাদের জন্য এই আয়াতে বর্ণিত দু‘আটি সর্বদা করিতে থাকো, বিশেষত তাহাদের মৃত্যুর পর।

কোরআন সম্পর্কে

বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবী ও রাসূলের উপর আসমানি কিতাব নাযিল হয়েছে, তবে বর্তমানে কোরআনই হচ্ছে একমাত্র আসমানি কিতাব, যা মানবসমাজে প্রচলিত সর্বপ্রকার প্রমাণ ও মানদণ্ডে উত্তীর্ণ সর্বাধিক বিশুদ্ধ, কোন গ্রনে'র বিশুদ্ধতা ও প্রামাণ্যতার এর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন উপায় নেই। পৃথিবীতে গ্রন'সংরক্ষণের একটি পদ্ধতিই শুধু অনুসৃত হয়, লিখনপদ্ধতি। কোরআনই একমাত্র গ্রন' যা শুধু লিখিত আকারেই নয়, বরং যুগে যুগে লক্ষ লক্ষ হৃদয়েও তা সংরক্ষিত হয়ে এসেছে।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা