জুমাদাল উলা ১৪৩২ হিঃ (২০)

কুরআন ও হাদিস

কোরআনের আলো

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

বিসমিল্লাহির-রাহমানির রাহীম

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, বনী ইসরাঈলের যাহারা কুফুরি করিয়াছে তাহাদিগকে দাউদ ও ঈসা ইবনে মারয়ামের যবানিতে অভিসম্পাত করা হইয়াছে। উহা এই জন্য যে, তাহারা নাফরমানি করিত এবং সীমালঙ্ঘন করিত। তাহারা যে অন্যায় কাজ করিত তাহা হইতে একে অপরকে নিষেধ করিত না। অতি নিকৃষ্ট কাজই তাহারা করিত। তাহাদের অনেককেই তুমি দেখিতে পাইতেছ যে, তাহারা কাফিরদের পৃষ্ঠপোষকতা করিতেছে। খুবই মন্দ জিনিস তাহারা নিজেদের জন্য অগ্রবর্তী করিয়াছে, অর্থাৎ তাহাদের প্রতি আল্লাহর অসন্তুষ্টি, আর চিরকাল তাহারা আযাবে থাকিবে।  

ফায়দা-

কোরআন শরীফে বিভিন্ন উপলক্ষে বনী ইসরাঈলের প্রসঙ্গ উলেস্নখ করিয়া এই উম্মতকে সতর্ক করা হইয়াছে যে, তাহাদের অবস্থা যেন বনী ইসরাঈলের মত না হয়। বনী ইসরাঈল ছিল নবীর বংশধর, কিন্তু তাহারা শেষ পর্যন্ত নিজেদের নবীর অভিশাপ লাভ করিয়াছে। কারণ তাহারা আল্লাহর নাফরমানি ও সীমালঙ্ঘনে লিপ্ত হইয়াছিল; তদুপরি তাহারা অন্যায় কর্ম হইতে নিষেধ করিত না।

এই আয়াত হইতে বোঝা যায় যে, নাফরমানি ও সীমালঙ্ঘন করা যেমন নবীর অভিশাপ লাভের কারণ তেমনি অন্যায় কর্মে নিষেধ না করাও অভিশাপ লাভের কারণ। আর যদি অন্যায় কর্মকারিদের সহিত মিলমিশ ও সম্পর্ক রাখা হয় তবে আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও চিরস্থায়ী আযাব নামিয়া আসে।

আমাদের চিন্তার একটি বড় বক্রতা এই যে, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ’ বলার সঙ্গে সঙ্গে চিন্তায় আসিয়া পড়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্র, নিজের ব্যক্তি ও পরিবারের কথা আমাদের চিন্তায় আসিতেই চায় না। অথচ অন্যায়কে নিষেধ করিবার সবচেয়ে উপযুক্ত ক্ষেত্র হইল পরিবার, যাহা ব্যক্তির সর্বময় কর্তৃত্বের অধীন। সুতরাং মানুষের সর্বপ্রথম কর্তব্য হইল নিজের পরিবারের লোকদিগকে অন্যায় কর্ম হইতে নিষেধ করা। প্রতিটি পরিবারে যদি অন্যায়ের নিষেধ চলিতে থাকে, সমাজের সিংহভাগ অন্যায় সহজেই দূর হইয়া যায়।

আরেকটি বড় ভুল হইল প্রথমেই শক্তি প্রয়োগের চিন্তা করা। যাহাকে নিষেধ করিব তাহার ধারণক্ষমতার দিকেও লক্ষ রাখিতে হইবে, আর সম্পর্কের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অন্যায়ের নিষেধ যে শোনে না, তাহার বিপদাপদে অবশ্যই সাহায্য করিতে যাইব, কিন্তু যে সকল আচরণে তাহার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ পায় তাহা হইতে বিরত থাকা অবশ্যকর্তব্য, কিন্তু এই কাজটি কি আমরা করি? সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে প্রশ্ন করি, যে ব্যক্তি কোরআনের মীরাছী বিধান লঙ্ঘন করিতেছে, আমরা যে তাহার প্রতি সন্তুষ্ট নহি তাহা কি আমাদের আচরণে প্রকাশ পায়?

আলকোরআন সম্পর্কে

কোন মানুষের নয়, কোরআন হলো আল্লাহর কালাম। জীবনের জন্য অপরিবর্তনীয় বিধান, যিন্দেগির ‘আবাদি’ হিদায়াত। আল্লাহর কালামে এবং শরীয়তের বিধানে যে কেউ হস্তক্ষেপ করার দুঃসাহস দেখাবে, যে নামে ও যে শিরোনামেই হোক, যে কারণে ও যে উদ্দেশ্যেই হোক, তার ধ্বংস অনিবার্য; শুধু আখেরাতেই নয়, দুনিয়ার জীবনেও। যুগে যুগে বহু দাম্ভিক ও প্রতাপশালী কোরআনের প্রতি এমন ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে, আর তাদের পরিণতিও আমাদের সামনে আছে। সুতরাং হে অবিশ্বাসী, হে দাম্ভিক, সাবধান!

 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা