শাবান ১৪৩১হিঃ (১৭)

কুরআন ও হাদিস

হাদীসের আলো

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট
হযরত আবু হোরায়রা (রা) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কে আমার উত্তম সাহচর্যের অধিক হকদার? তিনি বলিলেন, তোমার আম্মা। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, অতঃপর কে? তিনি বলিলেন, তোমার আম্মা। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, অতঃপর কে? তিনি বলিলেন, তোমার আম্মা। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, অতঃপর কে, তিনি বলিলেন, অতঃপর তোমার আব্বা। অন্য বর্ণনায় আছে, তোমার আম্মার সহিত সদাচার কর, অতঃপর তোমার আম্মার সহিত, অতঃপর তোমার আম্মার সহিত, অতঃপর তোমার আব্বার সহিত, অতঃপর পর্যায়ক্রমে তোমার নিকটতমের সহিত।

(বুখারী ও মুসলিম)

ফায়দা- ইহা খুবই প্রসিদ্ধ হাদীছ। মাতৃজাতি দুর্বল বলিয়া তাহাদের প্রতি সাধারণত যুলুম হইতে থাকে, এমনকি সন-ানের পক্ষ হইতেও মায়ের প্রতি খুব যুলুম হয়। বাবাকে কিছুটা ভয়ে, কিছুটা প্রাপ্তির আশায় সন-ান গুরুত্ব দেয়, কিন' মা যেন ঘরের দাসী! এ জন্যই কিয়ামতের আলামত -প্রসঙ্গে আসিয়াছে যে, তখন মায়ের সহিত দাসীর মত আচরণ করা হইবে। ইহা ঠিক যে, বিভিন্ন যুক্তিসঙ্গত কারণে সন-ানের উপর আইনগত অধিকার হইল বাবার এবং খেদমতের ক্ষেত্রেও উভয়ের অধিকার সমান। তবে মুহব্বত ও সদাচারের ক্ষেত্রে আলোচ্য হাদীছ দ্বারা পরিষ্কার বোঝা যায়, মায়ের হক অনেক বেশী। কারণ সন-ানের দুনিয়াতে আসা এবং বড় হওয়া পর্যন- মা যে ত্যাগ ও কোরবানি হাসি মুখে বরণ করেন, তাহার কোন তুলনা নাই। কোরআন শরীফে আল্লাহ তা‘আলা মা-বাবার প্রতি সদাচারের আদেশ করিয়াছেন। অতঃপর উল্লেখ করিয়াছেন যে, তাহার মা তাহার জন্য এই এই করিয়াছে। পিতার কথা সেখানে কিছুই বলা হয় নাই। অর্থাৎ মায়ের ত্যাগ ও কোরবানির কোন তুলনা নাই। তবে ইহার অর্থ বাবার প্রতি অসদাচার নহে, বরং তিনিও সন-ানের সদাচারের হকদার, কথা শুধু এই, বাবার তুলনায় মায়ের হক অনেক বেশী। সন-ান মা-বাবার হক কখন আদায় করিবে? মা-বাবা যদি সন-ানের দ্বীনী তা‘লীম ও তারবিয়াতের প্রতি যত্নবান হন, তাহাকে কোরআন-হাদীছের শিক্ষা দান করেন তবেই সে মা-বাবার হক বুঝিবে এবং তাহা আদায় করিবে। সুতরাং মা-বাবারও যথেষ্ট দায়িত্ব রহিয়াছে সন-ানের তারবিয়াতের বিষয়ে। আমরা সন-ানের জাগতিক সুখ-সুবিধার জন্য বহু কষ্ট স্বীকার করি, কিন' তাহাদের দ্বীনী তারবিয়াতের প্রতি গুরুত্বই দেই না। এ কারণে সন-ান মা-বাবার অনুগত হয় না, বরং অবাধ্য ও নাফরমান হয়। সুতরাং মা-বাবাকেও সন-ানের তারবিয়াতের বিষয়ে সচেতন হইতে হইবে।

বিশ্বনবী সম্পর্কে

জনৈক অমুসলিম পণ্ডিত বলেন, ইসলামের নবী নারীকে যে মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছেন, তা পৃথিবীতে আর কোন মহামানব দিতে পারেননি এবং তা সম্ভবও নয়। স্ত্রী, কন্যা ও মা কোন পরিচয়েই নারীর সম্মান ছিলো না, তিনি সকল পরিচয়ে নারীর যোগ্য মর্যাদা নিশ্চিত করেছেন। নারী ছিলো অপবিত্র সত্তা, তিনি তাকে পবিত্রতা দান করেছেন। তিনি বলেছেন, পুণ্যবতী নারী হলো সর্বোত্তম সম্পদ। তাঁর পূর্বে নারীকে ভোগের উপকরণ মনে করা হতো, তিনিই শুধু নারীকে ‘সম্পদ’ বলেছেন।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা