সফর ১৪৩১ হি:(১৫)

রসের কলমদানি

বুবুজানের বুযুর্গি ও ফযিলত!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 পেয়ারে বেরাদারান, তোমাদের প্রতি আমার দিল বহুত নারায! যদি বল, নারায হইল কেন? আমি বলিব, নালায়েকগণ,আগে বল নারায হইবে না কেন! তোমরা তো জান, বুবুজানকে আমি কত ভক্তি-মুহববত করি, আর বুবুজানও আমার প্রতি কত মেহেরবান! এই যে এখনো বাঁচিয়া বর্তিয়া আছি এবং দিবিব ‘চলত-ফিরত’ করিতেছি, ইহা তো স্রেফ বুবুজানের মেহেরবানি এবং তাহার নেক নযর!

অথচ তোমরা হরহামেশা আমার বুবুজানের নিন্দা-শেকায়েত করিয়া বেড়াও! জান না, মুহববতের মানুষকে কেউ যদি মন্দ বলে, প্রাণে বড় বাজে, দিলে বড় চোট লাগে!

তাছাড়া একটুখানি চক্ষু মেলিয়া, কর্ণ পাতিয়া অবলোকন কর এবং শ্রবণ কর; চতুর্দিকে তো বটেই, চতুর্দিকের পরেও যত দিক আছে সর্বদিকে এখন বুবুজানের জয়জয়কার! দেশ এখন বলিতে গেলে বুবুজানের বন্দনায় ভাসিতেছে এবং ডুবিতেছে! এমন সময় তোমরা মিয়াঁরা বুবুজানের নিন্দা করিয়া নিজেরাও মরিতে চাও, আমাকেও মারিতে চাও! আস্তাগফিরুল্লাহ!

তওবা কর মিয়াঁরা, তওবা কর। আইস, আমার হাতে হাত রাখিয়া কাঁদিয়া কাঁদিয়া...

কী বলিতেছ? চোখে পানি আসিতেছে না? চিন্তা করিও না। ডিজিটাল যুগে চিন্তার কোন কারণ নাই। প্রাচীন কালের ধ্যান-ধারণা বর্জন কর এবং আধুনিক হইতে চেষ্টা কর, ডিজিটাল বনিবার কোশেশ কর। চোখে পানি আসিতেছে না, তো গ্লিসারিন ব্যবহার কর, আপসে আপ চোখে পানি আসিবে। গ্লিসারিনেও কাজ হইতেছে না! আসলে জাল-এবং ভেজাল এখন সবকিছুতে! সুতরাং গ্লিসারিন আর বাদ যাইবে কেন? তবে নিরাশ হইও না, যত মুশকিল তত আসান। বুবুজানকে আমি ‘ফোন দিতেছি’; এখনই তিনি কাঁদানে গ্যাসের ব্যবস্থা করিবেন। পুলিশের অতি বড় শত্রুও স্বীকার করিবে যে, এই একটি জিনিস বাংলাদেশে এখনো একশত ভাগ নির্ভেজাল। সুতরাং তুমি যত বড় পাষাণদিল হও না কেন, কাঁদানে গ্যাসে অবশ্যই তোমার চোখে পনি আসিবে এবং তুমি আরাম সে কাঁদিতে পারিবে!

তো আইস, আমার হাতে হাত রাখিয়া কাঁদিয়া কাঁদিয়া বল, আমরা খাছ দিলে তওবা করিতেছি, যত দিন বাঁচিয়া থাকিব বুবুজানের ফরমাবরদারি করিয়া চলিব, ভুলেও তাহার নিন্দা-শেকায়েত করিব না।

দেখিও, সাবধান! এই তওবা কস্মিনকালেও ভঙ্গ করিও না। আল্লাহর দরবারে যত বার তওবা ভঙ্গ হয় তত বার উহা কবুল হয়। কিন্তু ইহা তো মানুষের দরবার, তাও আবার মেয়েমানুষের দরবার! এই দরবারে একবার তওবা ভঙ্গ হইলে আর জোড়া লাগে না, আর কবুল হয় না। সুতরাং সাবধান!

***

আগে আলেম-মাওলানারা বুবুজানের বুযুর্গি-ফযিলত তেমন বুঝিত না। বুবুজানের শানে তাহরা বড় বেশী গোমরাহিতে লিপ্ত ছিল। এমনকি বুবুজানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াই পর্যন্ত করিয়াছে! কী মহাবেয়াদবি! কী মহাগোস্তাখি! এখন মাশাআল্লাহ, তাহারও হিদায়াত লাভ করিতেছে এবং আগিলা-পিছিলা সমস্ত বেয়াদবির জন্য খাছদিলে তওবা করিতেছে। বুবুজানও নরমদিলে তাহাদের তওবা কবুল করিতেছেন এবং পুরস্কারের আশ্বাস দিতেছেন। অবশ্য আশ্বাস ছাড়া বুবুজান আর কিই বা দিবেন! দাদাদের দেশ হইতে ঝুড়িভর্তি আশ্বাস ছাড়া অন্যকিছু তো আনিতে পারেন নাই!

যাহাই হউক, দেখিয়া শুনিয়া আমার দিলখান বড়ই খোশ হইতেছে যে, আমার বুবুজানের সামান্য এককাতরা মুহববত লাভের আশায় আলেম মাওলানার এখন তাহার শানে কত বড় বড় কাসীদা বয়ান করিতেছেন! মিম্বরে বসিয়া সুর করিয়া কত সুন্দর ওয়ায ফরমাইতেছেন! একজন জবরদস্ত মাওলানা সেদিন বলিয়াছেন, ‘আমাদের বুবুজান এই যামানার রাবেয়া বছরী, সুবহানাল্লাহ! তাহার জায়নামায কত খোশবুদার! তাহার তছবির দানাগুলি কত নূরদার! সুবহানাল্লাহ!’

আরেক মাওলানা বলিয়াছেন, ‘বুবুজান যখন ইনতিকাল ফরমাইবেন, তখন তাহার নামের সঙ্গে আমি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলিব।’

কিন্তু আমার প্রশ্ন হইল, মিয়াঁ ভাই, ইহা কোন কিসিমের মুহববত! বুবুজান মুরদা ফরমাইবেন, আর তুমি যিন্দা ফরমাইবা! না মিয়াঁ ভাই, জীবনে-মরণে যদি বুবুজানের সঙ্গী না হও তবে কিন্তু ইহা আছলী মুহববত নহে! কী বলিতেছ? তুমি না থাকিলে বুবুজানের নামের সঙ্গে রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে বলিবে? তো ইহার জন্য আমরা ছোটখাটো মুহিববীন কাফি! তুমি মিয়াঁ ভাই বুবুজানের সঙ্গেই ইনতিকাল ফরমাইও।

সকলকে টেক্কা দিয়াছেন স্বঘোষিত এক আল্লামা। সত্যি তাহার এলেমদারির তুলনা নাই! আমি ‘পরের কানে’ শুনিয়াছি, তিনি মিম্বরে বসিয়া হাদীছ-কোরানের দলিল দিয়া ফতোয়া জারি করিয়াছেন, যাহারা বুবুজানের শোকর করিবে না তাহাদের ঈমান থাকিবে না! কারণ যাহারা মানুষের শোকর করে না তাহারা আল্লাহরও শোকর করে না, আর যাহারা আল্লাহর শোকর করে না, তাহাদের ঈমান থাকে কীভাবে! তাই তো! সুবহানাল্লাহ! এই প্রকার ‘গাহরা’ ইলম এত দিন কোথায় লুকাইয়া ছিল!

***

তো বড়িয়া বড়িয়া মাওলানাদের বয়ান-ফতোয়া শুনিয়া আমারও দিলে শাওক পয়দা হইতেছে বুবুজানের শানে কিছু কাসীদা বয়ান করি। তো বুবুজানের প্রথম ফযিলত হইল, তিনি লাশ বহুত পছন্দ করেন। তিনি তাহার মুরিদানকে সর্বদা তালকিন করিয়া থাকেন, যত পার লাশ ফেলিতে থাক। উহারা একটা লাশ ফেলিলে তোমরা দশটা লাশ ফেলিয়া দাও।

লাশ বুবুজানের কত পছন্দ তাহা আমরা না বুঝিলেও দাদারা বিলক্ষণ বোঝেন। তাই তিনি বেড়াইতে গেলে তখনও দাদারা তাহাকে ‘সীমান্ত-লাশ’ উপহার দিয়া থাকেন, আর তিনি তাহাতে নাখোশ প্রকাশ করেন না।

তোমরা অবশ্য বলিতে পার, লাশ পছন্দ করিবার মধে বুযুর্গির কী হইল? হইল, কারণ লাশ দুনিয়ার জিনিস নহে, লাশ হইল একশত ভাগ আখেরাতের জিনিস। তো আখেরাতের জিনিস পসন্দ করা আলবৎ বড়িয়া কিসিমের বুযুর্গি। তাছাড়া কেহ যদি গায়বি এলেমের সাহায্যে বলিয়া দিতে পারে যে, কোন কবরে কাহার লাশ আছে, কিংবা নাই, ইহা কি মস্ত বড় বুযুর্গি নহে!

ঠিক আছে এই প্রসঙ্গ রাখ। আমি এখন বুবুজানের এমন একটি বুযুর্গি বয়ান করিব যাহা অস্বীকার করিবার সাধ্য তোমার নাই, এমনি তোমার ...। আচ্ছা থাক, শোনো! ভুলিয়া যাওয়া বঙ্গসন্তানের বিরাট গুণ আমি জানি, কিন্তু তুমি যত বড় বঙ্গসন্তানই হও আশা করি এখনো তুমি ভুলিতে পার নাই যে, আমাদের বুবুজান কিছু দিন পূর্বে হাতের এক ইশারায় যামানার গতি পরিবর্তন করিয়াছিলেন। বুবুজানের হুকুমে সময় এক ঘণ্টা আগাইয়া আসিয়াছিল। মানুষ তখন একঘণ্টা আগে ঘুমাইত এবং একঘণ্টা আগে ঘুম হইতে জাগিত! চিন্তা করিয়া দেখ, ইহা কত বড় বুযুর্গি। পরে যখন বুবুজানের দয়া হইল তখন তিনি আবার সময় পিছাইয়া দিলেন। অর্থাৎ যখন রাত বারটা বাজিল, তখন তিনি এগারটা বাজাইলেন। এক ঘণ্টা পরে আবার বারটা বাজিল। তো চিন্তা করিয়া দেখ, এই গরীব দেশে যিনি একরাত্রে দুইবার দেশের বারটা বাজাইতে পারেন তাহার বুযুর্গির কি কোন কূলকিনারা আছে! এবং এই দেশের কুরসির জন্য আর কেহ কি তাহার চেয়ে উপযুক্ত হইতে পারে!

বুবুর্যি তাহার আরো আছে। এই পর্যন্ত এই অভাগা দেশে কত মানুষই তো মরিল! ‘শিকদার’, চৌকিদার, ‘চৌধুরী’, তরফদার, আরো কত কি! কিন্তু বিচার হইল না। অথচ আমাদের বুবুজান! মেয়েমানুষ হইয়াও পিতৃহত্যার বিচার করিয়াই ছাড়িলেন! আমি মনে করি, ইহা অনেক বড় বুযুর্গি! আরো বড় বুযুর্গি এই যে, পিতৃহত্যাকারীদের ফাঁসির খবর শুনিয়া বুবুজান দুই রাকাত শোকরানাও আদায় করিয়াছেন। অবশ্য দুষ্ট লোকেরা এই প্রসঙ্গে দুইটি প্রশ্ন করে। প্রথম প্রশ্ন হইল, আসল খুনী কে? বন্দুক, না বন্দুকধারী, না যাহারা পর্দার আড়ালে বাসকারী! তো এই খুনের কলকাঠি কাহারা কোথা হইতে নাড়িয়াছিল, আপনার বুবুজান কি তাহা জানিত আছেন?

এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য আমার জানা নাই, বুবুজানই ভাল বলিতে পারিবেন।

দ্বিতীয় প্রশ্ন, হত্য করা হইল মাকে, বাবাকে এবং দুই ভাইকে। অথচ বিচার হইল শুধু পিতৃহত্যার! ইহা কেমন বুযুর্গি।

এই প্রশ্নটি অবশ্য সঙ্গত নহে। কারণ চারের ভিতরে এক হয় না, কিন্তু একের ভিতরে চার হয়, অর্থাৎ ফোর ইন ওয়ান।

তো আমি না-খান্দা যদ্দুর পারিলাম আমার বুবুজানের বুযুর্গি ফযিলত বয়ান করিলাম। যাহারা আরো বড় এলেমদার তাহারা আরো বেশি বুযুর্গি আরো সুন্দর করিয়া বয়ান করিতে পারিবেন। তবে যাহারা 

খাছ দিলে বুবুজানকে মুহববত করিতে চায় তাহাদের জন্য এই পরিমান বয়ান আশা করি যথেষ্ট হইবে।

এই বার তো বুবুজান একঘণ্টায় দুই বার দেশের বারটা বাজাইয়াছেন; আমার বুবুজান যেন আরো বুযুর্গি হাছিল করিয়া অন্তত তিনবার দেশের বারটা বাজাইতে পারেন। এই গরীব দেশের যত বেশী বারটা বাজিবে ততই মঙ্গল!এবার আস দেশের ভিতরে। আগেই বলেছি, বুজান ও বাজানকে আমি এতনা ভক্তি পেয়ার করি যে, ওনাদের শানে টিকটিকির আন্ডা পরিমাণ বেয়াদবি-গোস্তাখিও আমি গোলাম হোসেন বরদাশত করতে পারি না। তো খুলেই বলি, বুবুজান গেলেন হিন্দুস্তান। সবাই জানে, হিন্দুস্তান অত্র এলাকার মুরুবিব, তার উপর সম্পর্কে আমাদের দাদা! অবশ্য এটা আমার জানা ছিলো না, মইন ইউ আহমেদ উর্দিপরা হালতে কেতাব লিখে আমাদের জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত মনে পড়ছে, দাদাদের কাছ থেকে মইন সাহেব ছয়টি তাজা-তাগড়া ঘোড়া উপহার পেয়েছিলেন। জানতে বড় ইচ্ছা করে, ঘোড়াগুলো এখন কী খায়? ঘাস খায়, না ‘মানচিত্র খায়’?!

তো, হিন্দুস্তান একে তো এলাকার মুরুবিব, তার উপর দাদা হিসাবে আমাদের আত্মীয় মুরুবিব, তার ইয়া বড়া শরীরটার আয়তন কত লাখ যেন বর্গমাইল! এমন মুরুবিবর সঙ্গে তুমিই বলো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের পুচকে বাংলাদেশের কি উচিত বেয়াদবি-গোস্তাখি করা! কিছুতেই না! বুবুজান বুদ্ধিমতী, তিনি জানেন, মুরুবিবর কথা মান্য করাই হলো জানে মালে নিরাপদ থাকার গ্যারান্টি, না সেনাবাহিনী, না অন্যকিছু। বুবুজান আগবাড়িয়ে গেলেন কেন, দাদাদের ডাকলেই তো পারতেন। শোনো গোস্তাখির কথা! মুরুবিবরা আসেন, না মুরুবিবদের কাছে যেতে হয়?!

দুষ্ট লোকেরা বলে, বুবুজান দেশ বিকিয়ে দিয়ে এসেছেন। শোনো মূর্খ লোকের কথা! বুবুজান অবশ্য বড়িয়া জবাব দিয়েছেন, ‘এখন আমরা ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে বসে থাকতে পারি না।’ অতি সত্য কথা! মশা-মাছি, চোর-ডাকাতের ভয়ে দরজা-জানালা বন্ধ রাখবো কেন, ঘরে আলো-বতাস আসতে হবে না! দুষ্ট লোকেরা তারপরো বলে, তাই বলে একেবারে বেডরুমের দরজা-জানালা!

বুবুজান! মূর্খলোকে না বুঝুক, আমি বুঝি, মুরুবিবর খায়েশ রক্ষা করাই সুবোধ বালক-বালিকার কর্তব্য। তাছাড়া দাদারা বেশী কিছু তো চাননি, চেয়েছেন শুধু আপনার বুকের উপর দিয়ে একটু আসা যাওয়া করতে। তখন আপনি যদি তিস্তার কথা বলতেন, টিপাইমুখের কথা তুলতেন, কত বড় গোস্তাখি হতো! আর গোস্তাখির নতিজা কী তা বোঝার জন্য তো খুব বেশী দূরে যেতে হয় না, নেপাল-ভুটানই কাফি; সিকিমের কথা না হয় বাদ।

বুবুজানের আববাজানও বুদ্ধিমান ছিলেন। ‘চাহিবামাত্র’ বেরুবাড়ি দান করেছেন এবং তিনবিঘার ‘আশ্বাস’ লাভ করেই পুলকিত হয়েছেন। বুবুজানও বহু ‘আশ্বাস’ প্রাপ্ত হয়েছেন। বুবুজান ঠিকই বলেছেন, ‘তারা আশ্বাস দান করেছেন, আমাদের তো বিশ্বাস করতেই হবে’। আলবৎ, মুরুবিবর আশ্বাসে বিশ্বাস না করলে তো নাভিশ্বাস উঠতে পারে! আববাজানের বুদ্ধিমত্তায় বেরুবাড়ি দান করে তিনবিঘার আশ্বাস লাভ করেছি, সেই আশ্বাস বাস্তবায়নের প্রতীক্ষায় ত্রিশবছর ধরে দীর্ঘশ্বাস ফেলছি, কিন্তু বিশ্বাস হারাইনি। এবার বুবুজানের বিচক্ষণতায় আশ্বাস লাভ করেছি, প্রয়োজনে পঞ্চাশ বছর দীর্ঘশ্বাস ফেলবো, তবু বিশ্বাস হারাবো না।

তাছাড়া দাদাদের বদান্যতা এবং বুবুজানের বিচক্ষণতার একটা জ্যান্ত নমুনা দেখুন! দেশের একইঞ্চি ভূমিও বিক্রি না করে বুবুজান একশ কোটি ডলার আদায় করেছেন, দাদারাও খোশদিলে দান করেছেন, হোক না সুদ! ডলার তো ডলারই! দাদারা বলতে পারতেন, তোমার দেশের রাস্তাঘাট তুমি ঠিক করবে, আমি টাকা দেবো কেন? কিন্তু না, ইনসাফ বলে কথা! এমন দাদার যারা নিন্দা করে আসলেই তারা ... কী বলবো, শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না!

আহা, কত ভালো দাদা আমাদের! সামান্য একটু ট্রান্জিট নিয়েছেন, বিনিময়ে আশ্বাস দিয়েছেন, ডলার দিয়েছেন, তারপর পুরস্কার দিয়েছেন, ইন্দিরাগান্ধী পুরুস্কার! তারপরো যদি কারো মন না গলে তো বয়েই গেলো! বুবুজান আপনি এগিয়ে যান, আমরা আছি আপনার আগে-পিছে, ডানে-বাঁয়ে সবখানে। আর এটা যে বাত কি বা নয় তা তো বুঝতেই পেরেছেন সম্বর্ধনার বহর দেখে! আমি অবশ্য স্বশরীরে হাজির হতে পারিনি। সর্দি ছিলো তো! তবে বিশ্বাস করেন বুবুজান, আমার রুহুখান অবশ্যই হাযির ছিলো! ‘মেয়েছেলেরা’ আন্দোলন করবে! ছুঁ! আপনার লগি-বেঠা আছে না! দাদাদের আশির্বাদ আছে না!

তবে বুবুজান পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম, ইন্দিরাগান্ধী পুরস্কার পেয়ে আপনি যার পর নাই অভিভূত হয়েছেন। আমার কিন্তু তাতে মন ভরেনি, যদি আপনার কপালে তিলক পরিয়ে দিতো তাহলেই না পুরস্কারটা ষোলকলায় পূর্ণ হতো! কেন মনে নেই, আগেরবার ‘জ্যোতিকাকা’ তিলক পরিয়েছিলেন!

অবশ্য জ্যেতিকাকা ছিলেন একশ ভাগ খাঁটি বাঙ্গালী, আর বাঙ্গালী ছাড়া বঙ্গললনার কদর তেমন করে কে বোঝবে! আফসোস! জ্যোতিকাকা তখন ছিলেন অসুস্থ, আর এখন তো তিনি  ‘ছাইভষ্ম’!

 

আমার প্রিয় পাঠকান ও পাঠিকান, (মাপ করবেন, মুরিদ থেকে বহুবচন মুরিদান হতে পারলে পাঠক থেকে পাঠকান এবং পাঠিকা থেকে পাঠিকান কেন হতে পারবে না। অবশ্য এটা আমার নিজস্ব ব্রান্ডের বহুবচন; আপনার পছন্দ না হলে বাদ দিন।)

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা