রবিউল আউয়াল ১৪৪০হিঃ (৩/৭)

রসের কলমদানি

আমার বেকারজীবন ও বেগুনভাজা!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

ইহা রসে টইটুম্বুর একটি লেখা। প্রিয় পাঠক, ইহাকে বেশী কাত করিয়া পড়িও না; তাহাতে রসটুকু পড়িয়া যাইতে পারে!

যিনি ‘বেকারি’ পরিচালনা করেন, যাহার দোকানে রুটির জন্য সকাল-বিকাল শহরের লোকেরা লাইন ধরে তাহাকে ‘বেকার’ বলিলে কেহ আপত্তি করে না। এমনকি ‘মিঃ বেকার’ বলিতেও কাহারো আপত্তি হইবে না। ইহা আসলে আর কিছু নহে, যবানে ইংলিশের কারিশমা! তোমাকে বেকার বলিলে, কখনো চটিয়া ওঠ, কখনো উঠিয়া চট; কেন? কারণ আর কিছু নহে, বাংলা যবানের খাছলত!

তো আমার বন্ধুটি ছিলেন ইংলিশ যবানের ‘বেকার’; পক্ষান্তরে আমি ছিলাম বাংলা যবানের বেকার! ফলে তাহাকে বেকার বলিলে প্রীত হন, আমাকে বেকার বলিলে চটিত হই।

তো আমার ‘বেকার’ বন্ধু একদিন দূর হইতে আমাকে দেখিয়া বলিয়া উঠিলেন; রুটির পয়সা তো অনেক জমিল! কাজকর্ম কিছু কর, না এখনো বেকার বসিয়া আছ? আগামি সকালে রুটি চাহিলে আমি কিন্তু এই ফলকটি তোমার মুখম-লের সম্মুখে তুলিয়া ধরিব। উহাতে লেখা ছিল, বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না।

অন্য সময় আলবত চটিয়া উঠিতাম, কিন্তু এখন রুটির সওয়াল। তাই বিগলিত ভাব ধারণ করিয়া একগাল হাসিয়া কহিলাম, সমস্যা কী! আমি বাকি চাহিয়া লজ্জা দিব না, বরং লজ্জা দিয়া বাকি চাহিব।

বন্ধুটি লা-জবাব হইয়া গোড়ায় চলিয়া গেল। কহিল, বল তো তুমি কোন্ কিসিমের বেকার? পাড়ায় মহল্লায় বেকার মানুষও তো কিছু একটা করে! এমনকি চায়ের দোকানে বসিয়া যাহারা চা বিস্কুট খায় না, শুধু রাজা-উজির মারে। মহল্লার বেকার বলিয়া চায়ের দোকানদার কিছু বলে না, নীরবে হযম করে। কারণ তবু ভালো, বাকি তো চা চাহে না!

আমি নিজেও বুঝি না, বেকারেরকোন্ কেটাগরিতে আমি ‘পতিত’ হই! শ্রেণীবিন্যাসে আমার কিসিম যাহাই হোক, দিনকাল আমার কাটিতেছিলো সুখে। কারণ আমার ওয়াইফ, মানে বিবি, মানে স্ত্রী মহল্লার মহিলাদের কাপড় ইস্ত্রি করিয়া যাহা কিছু আয় করিতেন এবং করিতেন না, তাহাতে আমার দিব্বি চলিয়া যাইত! রীতিমত মহা -সুখ! কিন্তু আমার সুখ গিন্নীর সহিবে কেন! তহার নাকি রীতিমত পিত্তি জ্বলিত। পিত্তি কীভাবে জ্বলে এবং উহা কত প্রকার ও কী কী? আমার জানা নাই। ভয়ে ভয়ে গিন্নীকে জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি মুখ ভার করিয়া বলিলেন, সর, আমার পিত্তি জ্বলিতেছে। স্বামী বেকার বলিয়া কাহাকেও মুখ দেখাইতে পারি না।

অবাক হইয়া বলিলাম, আমি ছাড়া অন্য কাহাকেও মুখ দেখাইবার কী আবশ্যক! তিনি ধমক দিয়া বলিলেন, ফের পিত্তিজ্বলা কথা!

দুুপুরে ভয়ে ভয়ে ভাতের কথা বলিবামাত্র গন্নী যে মূর্তি ধারণ করিলেন তাহাকে সাহিত্যের লোকেরা বলে ‘তেলে বেগুনে জ্বলিয়া ওঠা’।

তেলে বেগুনে জ্বলা কাহাকে বলে যদি বুঝিতে না পার তবে এক কাজ কর। হাতে কলমে বুঝিয়া লও। বাজারে সবকিছুতে এখন অবশ্য আগুন, তবে রমযানের আগ পর্যন্ত বেগুন মোটামুটি আগুনমুক্ত। সুতরাং নিশ্চিন্ত মনে এককেজি বেগুন খরিদ করিয়া আন। তেলের বাজারে অবশ্য আগুন। তবে চিন্তা নাই। ইহাতে তোমার বরং সুবিধা, অল্প পরিমাণেই কাজ হইবে। এই বার শুরু কর হাতে কলমে ‘এক্সপেরিমেন্ট’। তবে দিনের বেলা নহে, মধ্যরাত্রির কিছু পরে! কী ঝামেলা রে বাবা! আবার কারণ জানিতে চাহ! জান না বুঝি, দিনের বেলা চুলায় গ্যাস থাকে না!

তো কী বলিতেছিলাম! হাঁ, বেগুনগুলি ফালি ফালি করিয়া কাট। গোল গোল করিয়া কাটিলেও চলিবে। ফলাফল অভিন্ন। তবে কি না ফালি ফালি চেহারাটা বেগুনির উপযুক্ত; মনে আছে তো, ইফতারীর বেগুনি! আর গোল গোল টুকরা হইল, ভাতের সঙ্গে যে বেগুনভাজা উহার উপযুক্ত।

খায়র, এই বার গ্যাসের চুলা জ্বালাইয়া কড়াই বসাও এবং তাহাতে তেল ঢাল। সাবধান, অল্প পরিমাণে ঢালিও। তেলের গায়ে আগেই আগুন লাগিয়া আছে তো!

তেল গরম হইয়াছে? এইবার বেগুনের টুকরাগুলা কড়াইয়ে ছাড়িয়া দাও। ছ্যাত করিয়া উঠিল না! মানুষ যখন এই রূপ ছ্যাত করিয়া ওঠে তখন উহাকেই বলে তেলে বেগুনে জ্বলিয়া ওঠা।

যদিও যথেষ্ট সময় খরচ হইল এবং দুর্মূল্যের বাজারে কিছুটা পয়সাও খসিয়া গেল, তবু তো হাতে কলমে শিক্ষা লাভ হইল। সুতরাং সামান্য ক্ষতির জন্য আফসোস করিও না; আর সম্মানি বাবদে বেগুনভাজাটা আমার জন্য রাখিয়া যাও।

তো কী যেন বলিতেছিলাম! হাঁ, যেই না ভাতের কথা বলিলাম অমনি গিন্নী তেলে বেগুনে জ্বলিয়া উঠিলেন এবং এমন কিছু শব্দ প্রয়োগ করিলেন যাহা আমার পক্ষে উচ্চারণযোগ্য হইলেও তোমাদের পক্ষে শ্রবণযোগ্য নহে। শুধু জানিয়া রাখ, গিন্নী বলিলেন, ‘বসিয়া বসিয়া আর অন্ন ধ্বংস করা চলিবে না। কোন না, কোন কাজ তোমাকে করিতেই হইবে; এমনকি  অকাজেও আপত্তি নাই, যদি তাহাতে সংসারে দুইটি পয়সা আগমন করে। তোমার দ্বারা তো সংসারের পয়সা শুধু নির্গমনই করিতেছে!’

সুতরাং আহার বল, বা অন্ন ধ্বংস, ভাগ্যে তাহা আর জুটিল না।

তোমাদের কাহারো পেটের ভিতরে কি ইঁদুর আছে? নাই! তবে তোমরা বুঝিবে না। ভীষণ ক্ষুধার সময় পেটের ভিতরে ইঁদুরেরা দৌড়াদৌড়ি করে। অবশ্য আগে হইতে ইঁদুর থাকিতে হয়। আমার পেটের ভিতরে তখন ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করিতেছিল! ইহাতে প্রথমে কাতুকুতু বোধ হয়, কিন্তু পরে আরো বেশী করিয়া ক্ষুধা বোধ হয়।

কিন্তু উপায় কি গোলাম হোসেন! আগে কোন না কোন কাজ বা অকাজ একটা কিছু জুটাইতে হইবে যাহাতে গিন্নী দুইটা পয়সার মুখ দেখিতে পান। কিন্তু আমার মত বেকার কী কাজ করিতে পারে! হায়, কিছুকাল আগে আমি একজন লেখক ছিলাম। লোকে লেখক বলিত না, বলিত লিখিয়ে! দুইটি শব্দের পার্থক্যটা তেমন ধরিতে পারিতাম না, তবে দ্বিতীয়টির সঙ্গে নাসিকা-কুঞ্চন পরিষ্কার বুঝিতে পারিতাম। তো লোকে যাহাই বলিত, আমি তাহাতে গা করিতাম না, শুধু লিখিয়া যাইতাম। কখনো সত্য, কখনো মিথ্যা। প্রথমটায় পয়সা আসিত অল্প, দ্বিতীয়টায় বিস্তর। আর সত্যমিথ্যার মিক্সার তৈরী করিতে পারিলে নামিত পয়সার ঢল! তৃতীয়টি অবশ্য আমার দ্বারা তেমন রপ্ত হয় নাই।

খায়র, মোটামুটি চলিতেছিল। অন্তত গিন্নীর টেম্পারেচার স্বাভাবিকের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু হঠাৎ কিসে কী হইল! আমার বাজার একেবারে পড়িয়া গেল, কিংবা বলিতে পার বসিয়া গেল। পড়িয়া যাওয়া এবং বসিয়া যাওয়া, উভয়ের মতলব হইল, লোকে তোমার লেখা পড়ে না, এমনকি উহা দ্বারা চায়ের জলও গরম করে না।

তো হঠাৎ করিয়া আমার বাজার পড়িয়া বা বসিয়া যাওয়ার কী কারণ?  খোঁজ করিয়া জানা গেলো, লেখার ময়দানে নাকি নতুন খেলা জমিয়াছে এবং পাকা খেলোয়াড়ের আগমন ঘটিয়াছে, যাহারা কখনো সত্যের সঙ্গে মিথ্যার, কখনো মিথ্যার সহিত সত্যের মিক্সার করিতে অতিশয় পারঙ্গম।

তো কী যেন বলিতেছিলাম! হাঁ, আকাশ-পাতাল ভাবিতেছি কী করা যায়! কী করা করা যায়! এমন সময় সাক্ষাৎ ফিরেশতা সাজিয়া অধমের দুয়ারে এক ভদ্র মহাশয়ের আগমন! নাম শুনিয়া হাসিতে পার, তবে চেহারা-ছুরত দেখিলে অবশ্যই বলিতে, একশত ভাগ খাঁটি নাম, ‘সাইজুদ্দীন’! যিনি সময়ের প্রয়োজনে বহু কিছু সাইজ করেন। এমনকি ক্ষমতার পালাবদলের সময় নিজেকেও সাইজ করিতে পারঙ্গম। তবে তাহার নামের সার্থকতা পূর্ণ বোধগম্য হইয়াছে সম্প্রতি, যখন তিনি নিরপেক্ষতা ও বাঙ্গালী সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মকে সাইজ করিবার চেষ্টায় নামিয়াছেন।

সাইড বিজনেস বলিয়া একটা কথা আছে। তো সেই অর্থে তিনি এখন নতুন প্রকাশক। তবে শুরুতেই তিনি এমন একটা আচমকা আইটেম প্রকাশ করিতে চাহেন যাহাতে প্রথম বারেই কেল্লা ফতে! মহাশয়ের মতে আমার মত বেকার লেখক এই কাজের জন্য আদর্শ ব্যক্তি!

আমি বিস্মিত হইলাম, পুলকিত হইলাম, কিন্তু আহ্লাদ প্রকাশ করিলাম না। জানিতে চাহিলাম কাজটা কী? তিনি রহস্যময় হাসি হাসিয়া বলিলেন, বিজনেস সিক্রেট! অন্য কোন প্রকাশকের কানে যেন বাতাস না লাগে! একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী অভিধান প্রকল্প, যাহাতে প্রতিটি শব্দের পুরানা অর্থ বাতিল করিয়া আধুনিক যুগের উপযোগী নতুন অর্থ লিখিতে হইবে! অভিধান ব্যবসা এখন খুবই মন্দা। পুরানা অভিধান কেহই ধরিতে চাহে না। কারণ শব্দের সঙ্গে অর্থের মিল খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। আমি সেই রকম একটি অভিধান প্রস্তুত করিয়া বাজার মাত করিতে চাহি।

‘কিছুটা বুঝিলাম, কিছুটা বুঝিলাম না’, চেহারার ‘জিওগ্রাফি’টা এরূপ করিয়া তাহার মুখপানে চাহিয়া থাকিলাম। তিনি বড়ই সেয়ানা ব্যক্তি। আকার-ইঙ্গিতেই বুঝিয়া লইলেন, একটা উদাহরণ দরকার। তিনি মৃদু হাস্য করিয়া বলিলেন, ধরুন, মানবাধিকার, ইহার পুরানা অর্থ হইল মানুষের অধিকার, আধুনিক অর্থ হইল, শ্বেতচর্মযুক্ত প্রাণীর অধিকার! ইনেকশনের আধুনিক অর্থ সিলেকশন! নির্বাচনের লেটেস্ট থিম, ভোট আছে, তবে ভোটার না থাকিলে সমস্যা নাই!

প্রীতি ও সন্তোষ প্রকাশ করিয়া বলিলাম, ব্যস! ব্যস!!

তিনি মৃদু হাস্য করিয়া বলিলেন, আপনার মজুরি শব্দ প্রতি পঞ্চাশ পয়সা।

লোকটার কা-জ্ঞান দেখ! সোজা মজুর, আর মজুরিতে নামিয়া গেল! সম্মানী বলিলে কী ক্ষতি ছিল? অন্তত পারিশ্রমিক!! আপত্তি শুনিয়া তিনি তাহার অল্প পরিসরের হাসিটিকে আকর্ণ বিস্তৃত করিয়া কহিলেন, শব্দপ্রতি চল্লিশ পয়সা হইলে সম্মানি বলিতে আমার আপত্তি নাই।

মনে মনে কহিলাম, তুমি পারিবে বটে! মুখে কহিলাম, থাক, আপনি বন্ধুজন, মজুরিতে সম্মানিতে পার্থক্য কী! তবে কি না ঘাম শুকাইবার আগে ...!

ইতিমধ্যে তিনি তাহার মুখের হাসিটি সাইজ করিয়া আনিয়াছেন, কহিলেন; এখন অবশ্য শীতকাল, তেমন ঘাম হয় না!

মোটকথা বেকার-জীবনের হাতে যেন আকাশের চাঁদ আসিল। গিন্নী দরজার আড়ালে দাঁড়াইয়া সবই শুনিলেন। বহির্দ্বারে প্রকাশক মহাশয় অস্ত গেলেন, আর অন্তর্দ্বার হইতে স্ত্রী হাসিমুখে উদিত হইলেন এবং বড়ই সোহাগের সহিত বলিলেন, আস তোমার জন্য আজ বড় যত্ন করিয়া বেগুনভাজা করিয়াছি!

 

নাছীরুদ্দীন হোজ্জা, সম্ভবত বাংলাদেশ এবং উহার রাজধানী তাহার বড়ই পছন্দ হইয়াছে। গবেষণা করিয়া যতদূর বুঝিলাম, ইহার কারণ তিনটি।

প্রথম কারণ-অতীতে তিনি হুক্কা পান করিতেন। তখন হাতে ছিল দেদার দিরহাম। এ যুগে আসিয়া বড়ই বিপদের পড়িয়াছেন, বিড়ি-চুরুট তাহার পছন্দ নহে, তাছাড়া পয়সারও আকাল! যানজটের ঢাকা শহরে তাহার বড়ই আরাম হইয়াছে; গাড়ীগুলা মুখের উপর দিব্বি কালো ধোঁয়া ছাড়ে! মুখ হা করিয়া রাখিলেই হয়, ধোঁয়া উদ্গীরণ হইতে থাকে, মুফতের হুক্কার স্বাদ...!

দ্বিতীয় কারণ যদি কখনো অতীতের যুগে ফিরিয়া যাইতে মন কাঁদিয়া ওঠে তখন মরিবার জন্য বিশেষ কোন আয়োজনের প্রয়োজন নাই। এমনকি খরচপাতিও নাই। শুধু রাস্তায় নাম এবং বাসের অপেক্ষায় দাঁড়াইয়া থাকো। হঠাৎ নিজেকে তুমি আবিষ্কার করিবে দূর অতীতের সেই কবরস্তানে। কবরের বাসিন্দারা তোমার চারিপাশে জড় হইয়া প্রশ্ন করিবে। কোথায় চলিয়া গিয়াছিলে হোজ্জা! ফিরিয়াই বা আসিলে কীভাবে?! হোজ্জা তখন আয়েশ করিয়া বলিবে, বাংলাদেশে বাঙ্গালীদের দেখিবার সাধ জাগিয়াছিল কিনাা! ফিরেশতাকে অনুরোধ করিলাম, আর তিনি ...! কিন্তু দু’দিনেই হাঁপাইয়া উঠিলাম, আর ফিরিয়া আসিবার জন্য দিলটা আনচান করিতে লাগিল। তখন মাথায় বুদ্ধিটা আসিল, একটামাত্র ‘বাসদুর্ঘটনা’; অমনি চলিয়া আসিলাম তোমাদের কাছে।

তৃতীয় কারণ, ফরমালিনযুক্ত খাবার। তিনি তো অতীতের মুরদা লাশ এবং বর্তমানের যিন্দা লাশ! আর সবাই জানে, লাশের সঙ্গে ফরমালিনের বড়ই পেয়ারের সম্পর্ক!

প্রশ্ন হইল, বাঙ্গালীর কেন ফরমালিন এত পছন্দ, কারণ ইহারা ভবিষ্যতের যিন্দা ও মুরদা লাশের যৌগিক রূপ!!

 

 

তিনি নাসীরুদ্দীন হোজা! গভীর রাতে রাজধানী ঢাকার সুনসান সড়কে মনের সুখে নিশ্চিন্তে যাহা করিতেছিলেন উহাকে সাধারণ দৃষ্টিতে বলিতে পার হণ্টন, আর গবেষকের দৃষ্টিতে বলিতে পারো পায়চারি! তবে অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে তোমাকে বলিতে হইবে, নৈশভ্রমণ! আপাতত ‘দৃষ্টিতত্ত্ব’ থাক; উদ্দেশ্যতত্ত্বই আলোচিত হউক। তো কী উদ্দেশ্যে তাহার হণ্টন, পায়চারি ও নৈশভ্রমণ!

জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি কিছু কহিলেন না, নাকের চশমাটা কিঞ্চিৎ নামাইয়া উপরের দিক দিয়া আমাকে শুধু অবলোকন করিলেন। আমি বিনীত কণ্ঠে পুনঃজিজ্ঞাসা করিলাম, তখন তিনি কহিলেন, আমি দেয়ালের লিখন পঠনের মনস্থ করিয়াছি। কী কারণ? কারণ, বঙ্গচরিত্র সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা